২০১২ সাল থেকে সময়টা গড়িয়েছে ১১ বছরে পেরিয়ে প্রায় এক যুগে। মিরপুরে সেবার দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে ইতিহাস গড়েছিল বাংলাদেশের মেয়েরা। এরপর থেকে শুধু হতাশাই হয়েছে সঙ্গী। ১০ ম্যাচের একটিতেও প্রোটিয়াদের হারাতে পারেনি বাংলাদেশ।
অবশেষে সেই অপেক্ষার অবসান ঘটলো। মিরপুর থেকে বেনোনির উইলোমোর পার্ক স্টেডিয়াম—প্রোটিয়া বধের ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি ঘটলো এগারো বছরের বেশি সময় বাদে। ঘরের মাঠে স্বাগতিকদের ১৩ রানে হারিয়েছে জ্যোতি-মুর্শিদরা।
কাজটা অবশ্য এ দিন প্রথমেই করে রেখেছিলেন ব্যাটাররা। ১৪৯ রানের বড় সংগ্রহের সামনে ১৩৬ রানেই থেমে যায় দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংস।এ দিন টস জিতে বাংলাদেশ অধিনায়ক আগে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন। তার সেই সিদ্ধান্তেরই প্রতিদান দেন ওপেনাররা। শেষ পর্যন্ত মুর্শিদা খাতুনের অপরাজিত ৬২ এবং অধিনায়ক জ্যোতির ঝোড়ো ৩৪ রানে ভর করে বাংলাদেশ প্রোটিয়াদের ১৫০ রানের লক্ষ্য ছুঁড়ে দেয়।
জবাবে ব্যাট করতে নেমে স্বাগতিকরাও উড়ন্ত সূচনা পায় দুই ওপেনারের ব্যাটে। ওপেনিং জুটিতে প্রোটিয়া অধিনায়ক তাজমিন ব্রিটস ও অ্যানিকে বখ পাওয়ার প্লের ৬ ওভারে উইকেটশূন্য ৫০ রান তোলেন। তবে এরপরের পুরো গল্পটাঔ নিজের করে নেন স্পিনার স্বর্ণা আক্তার। টাইগ্রেস এ লেগি একাই তুলে নেন ৫ উইকেট।
যদিও টাইগ্রেসদের প্রথম ব্রেকথ্রু এনে দেন রাবেয়া খান। দক্ষিণ আফ্রিকার অপ্রতিরোধ্য হয়ে ওঠা ৬৯ রানের ওপেনিং জুটির সমাপ্তি ঘটান তিনিই। এরপরেই ম্যাচের মোমেন্টাম নিজেদের দিকে নিয়ে আসে বাংলাদেশ। পরের ওভারে আনেরি ডের্কসেনকে বোল্ড করে দেন ফাহিমা খাতুন। জোড়া ধাক্কার পর বোশ ও সিউন লুস মিলে গড়েন প্রতিরোধ। ১০০ পেরিয়ে যায় স্বাগতিকদের সংগ্রহ।
এরপরই শুরু হয় স্বর্ণার লেগ স্পিন ভেলকি। লুসকে আউট করে বাংলাদেশকে দেন গুরুত্বপূর্ণ ব্রেক থ্রু। শেষ ৩ ওভারে ২৮ রান দরকার পড়ে দক্ষিণ আফ্রিকার। ম্যাচ তখন টান টান উত্তেজনায়। তবে স্বর্ণার দিনে সোনালি জয়টা তিনি এনে দেন বাংলাদেশকেই। নিজের তৃতীয় ওভার করতে বল হাতে নেওয়া স্বর্ণা মাত্র ২ রান দিয়ে ২ উইকেট তুলে নিয়ে চাপে ফেলেন প্রোটিয়া।
বাংলাদেশ তখন চালকের আসনে। বিপজ্জনক বোশকে ক্যাচ বানানোর পর ননডুমিসো শাঙ্গাসেকে রানের খাতাই খুলতে দেননি স্বর্ণা। ৪১ বলে হাফসেঞ্চুরি পাওয়া বোশ থামেন ৬৭ রানে। ৪৯ বলের ইনিংসে তিনি মারেন ৯ চার ও ১ ছক্কা। ১৯তম ওভারে নাহিদা আক্তারও কেবল ২ রান দিয়ে আউট করেন এলিজ-মারি মার্ক্সকে।
শেষ দিকে রান রেটের চাপে আর লক্ষ ছুঁতে পারেনি প্রোটিয়ারা। ফলত, ১৩ রানের জয় পায় বাংলাদেশ। প্রোটিয়াদের পেছনে ফেলে ৩ ম্যাচের সিরিজে তাই এগিয়ে গেল টাইগ্রেসরা।