একটি দুর্ঘটনা, সারা জীবনের কান্না

ক্রিকেট ইতিহাসের অনেক বিখ্যাত খেলোয়াড়ই মুখোমুখি হয়েছিলেন গুরুতর দুর্ঘটনায়। কেউ আহত হয়েছেন, কেউবা হারিয়েছেন বন্ধুকে। এমন কয়েকটি ঘটনার দিকে আলোকপাত করা যেতে পারে।

ঋষাভ পান্তের গাড়ি দুর্ঘটনার স্মৃতি এখনও হারিয়ে যায়নি। তবে, ক্রিকেটারদের সাথে সড়ক দুর্ঘটনার ঘটনা এবারই প্রথম ঘটেনি। ক্রিকেট ইতিহাসের অনেক বিখ্যাত খেলোয়াড়ই মুখোমুখি হয়েছিলেন গুরুতর দুর্ঘটনায়। কেউ আহত হয়েছেন, কেউবা হারিয়েছেন বন্ধুকে। এমন কয়েকটি ঘটনার দিকে আলোকপাত করা যেতে পারে।

  • অ্যান্ড্রু সাইমন্ডস (অস্ট্রেলিয়া)

অস্ট্রেলিয়ার কিংবদন্তি অলরাউন্ডার অ্যান্ড্রু সাইমন্ডস ২০২২ সালের মে মাসে মর্মান্তিক এক সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হন। দুর্ঘটনাস্থলে তাঁকে বাঁচানোর চেষ্টা করা হলেও সবাইকে দুঃখী করে অজানা গন্তব্যে পাড়ি জমান তিনি।

সাইমন্ডসের চার চাকার গাড়িটি সেদিন রাস্তা থেকে পড়ে গিয়েছিল যদিও এর পিছনের কারণ জানা যায়নি। তড়িতগতির ফিল্ডিং, প্রয়োজনীয় সময়ে উইকেট এনে দেয়া আর ব্যাট হাতে পাওয়ার হিটিংয়ে পারদর্শী সাইমন্ডস নিজের সময়ে অজি দলের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য ছিলেন।

  • গ্যারি সোবার্স (ওয়েস্ট ইন্ডিজ)

পাকিস্তানের বিপক্ষে টেস্টে ৩৬৫ রানের অপরাজিত একটি ইনিংস খেলে আলোড়ন সৃষ্টি করার এক বছর পরেই গ্যারি সোবার্স গাড়ি দুর্ঘটনায় পতিত হয়েছিলেন। ১৯৫৯ সালের সেপ্টেম্বরে দশ টনের একটি ওয়্যাগানের সাথে সংঘর্ষ হয় সোবার্সের গাড়ির।

সেদিন চালকের আসনে থাকা গ্যারি সোবার্স বেঁচে গেলেও তাঁর বন্ধু কলি স্মিথ মারা গিয়েছিলেন। এই শোকেই মাদকাসক্ত হয়ে পড়েন এই কিংবদন্তি ব্যাটার যা তাঁর ক্যারিয়ারেও বিরূপ প্রভাব রেখেছিল।

  • মানজারুল ইসলাম রানা (বাংলাদেশ)

বাংলাদেশ ক্রিকেট প্রথম পুরোদস্তুর অলরাউন্ডার হিসেবে পেয়েছিল মানজারুল ইসলাম রানাকে। কিন্তু ক্ষণজন্মা এই ক্রিকেটারের সেবা বেশিদিন পায়নি টিম টাইগার্স। ২০০৭ সালের ১৬ই জুন অনুশীলন শেষে বাইকে করে আরেক ক্রিকেটার সাজ্জাদুল সেতুকে নিয়ে ফেরার সময় বিপরীত দিক থেকে আসা অ্যাম্বুলেন্সের সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়।

ঘটনাস্থলেই মারা যান রানা। আর গুরুতর আহত সেতুও কিছুসময় পর শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করেন। ক্রিকেট ইতিহাসেরই সর্বকনিষ্ঠ প্রয়াত টেস্ট ক্রিকেটারের অনাকাঙ্ক্ষিত এক রেকর্ড জুড়ে যায় মানজারুল ইসলাম রানার নামের পাশে। রানার মৃত্যুশোককে শক্তিতে রূপান্তর করেই পরদিন ১৭ জুন বাংলাদেশ হারিয়েছিল ভারতকে।

  • কলিন মিলবার্ন (ইংল্য্যান্ড)

স্বাস্থ্যবান আর বলকে বেধড়ক পেটানোর সামর্থ্য – ইংল্যান্ডের বাজবল স্কোয়াডের জন্য দারুণ অস্ত্র হতে পারতেন কলিন মিলবার্ন। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে দারুণ খেলতে থাকা মিলবার্ন ১৯৬৯ সালে গুরুতর সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হন। একটি লরির সাথে সংঘর্ষ হওয়ার করে নিজের চোঝ হারান সাবেক ইংলিশ ব্যাটার। ২৭ বছর বয়সেই বাধ্য হয়ে তাঁকে ক্রিকেট ক্যারিয়ারকে বিদায় বলতে হয় তখন।

  • মনসুর আলী খান পতৌদি (ভারত)

বাবা ইফতিখার আলী খান পতৌদির মতই ক্রিকেটীয় সম্ভাবনা নিয়ে বেড়ে উঠেছিলেন ম্যাক পৌতোদি। ১৯৬১ সালের জুলাইয়ে লাঞ্চ শেষ করে ফেরার সময় অন্য একটি গাড়ির সাথে ধাক্কা খায় পৌতোদির গাড়ি। পৌতোদির বাম চোখে সেসময় কাঁচ ঢুকে যায় যা তাঁর দৃষ্টিশক্তির স্থায়ী ক্ষতি করেছিল। অবশ্য এক বছরের মধ্যে ফিরে এসেছিলেন তিনি, পরে ভারতের অধিনায়কও হয়েছিলেন।

  • অ্যান্ড্রু ফ্লিনটফ (ইংল্যান্ড)

নিজের সময়ে ইংল্যান্ড দলের কার্যকরি একজন অলরাউন্ডার ছিলেন অ্যান্ড্রু ফ্লিনটফ। সম্প্রতি বিবিসির টপ গিয়ার শো উপস্থাপন করার সময় গুরুতরভাবে আহত হন তিনি। এর আগেও আরো দুইটি দুর্ঘটনার সাথে জড়িত ছিলেন এই পেসার।

  • বেন হোলিওক (ইংল্যান্ড)

প্রজন্মের অন্যতম প্রতিভাধর অলরাউন্ডার ছিলেন বেন হোলিওক। ইংল্যান্ডের হয়ে দুইটি টেস্ট খেলা এই অলরাউন্ডার গাড়ি চালানোর সময় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি ইটের দেয়ালে আঘাত করেছিলেন। এই দুর্ঘটনাটি হ্যালিওয়কের জন্য মারাত্মক প্রমাণিত হয়েছিল। প্রাণ হারান তিনি।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...