ডিগ্রি ইন পিপল

ইংল্যান্ডের সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ অধিনায়ক মাইক ব্রিয়ারলির। মনুষ্যচরিত্রের উপর ডিগ্রিধারী একজন মানুষ - এভাবেই অস্ট্রেলিয়ান ফাস্ট বোলার রডনি হগ মাইক ব্রিয়ারলিকে বর্ণনা করেছেন। তার সবচেয়ে বিখ্যাত সিরিজ জয় ছিল ১৯৮১ সালে, যখন তাঁকে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে সিরিজে ০-১ পিছিয়ে থাকা এবং বিপর্যস্ত অবস্থায় ফিরিয়ে আনা হয় ইয়ান বোথাম হেডিংলিতে তৃতীয় টেস্টের আগে ক্যাপ্টেন্সি থেকে সরে দাঁড়ানোয়।

ইংল্যান্ডের সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ অধিনায়ক মাইক ব্রিয়ারলির। মনুষ্যচরিত্রের উপর ডিগ্রিধারী একজন মানুষ – এভাবেই অস্ট্রেলিয়ান ফাস্ট বোলার রডনি হগ মাইক ব্রিয়ারলিকে বর্ণনা করেছেন। তার সবচেয়ে বিখ্যাত সিরিজ জয় ছিল ১৯৮১ সালে, যখন তাঁকে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে সিরিজে ০-১ পিছিয়ে থাকা এবং বিপর্যস্ত অবস্থায় ফিরিয়ে আনা হয় ইয়ান বোথাম হেডিংলিতে তৃতীয় টেস্টের আগে ক্যাপ্টেন্সি থেকে সরে দাঁড়ানোয়।

মাইক ব্রিয়ারলি ইয়ান বোথামকে বাকি সিরিজে একটি অতিমানবীয় পারফরম্যান্সের জন্য অনুপ্রাণিত করেন এবং সেই টেস্টটি জিতে ও বাকি তিন টেস্টের মধ্যে দুটি জিতে ০-১ পিছিয়ে থাকা অবস্থা থেকে ৩-১ ফলে ৬ ম্যাচের সিরিজ জিতে নেন।

সব মিলিয়ে, তাঁর অধিনায়কত্বে ইংল্যান্ড ১৮টি টেস্ট জিতেছে এবং অধিনায়ক হিসাবে ব্রেয়ারলির ৩১ টি টেস্ট ম্যাচের মধ্যে মাত্র চারটিতে হেরেছে, যদিও তিনি ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে কখনোই অধিনায়কত্ব করেননি – এবং ১৯৭৯-৮০ সালে ইংল্যান্ড যখন পূর্ণ শক্তির অস্ট্রেলিয়ান দলের কাছে ০-৩ তে পরাজিত হয়েছিল তখন তিনি নেতৃত্বে ছিলেন। ব্রিয়ারলির ইংল্যান্ড তার এক বছর আগে অস্ট্রেলিয়ার দ্বিতীয় সারির টিমকে ৫-১ ফলে উড়িয়ে দিয়েছিল।

মাইক ব্রিয়ারলির ব্যাটিং ক্ষমতা সীমিত ছিল: তার টেস্ট গড় ছিল ২২ এবং কখনো তিনি টেস্ট সেঞ্চুরি করতে পারেননি, কিন্তু এ থেকেই বোঝা যায় যে তার অধিনায়কত্ব কতটা অমূল্য ছিল। তাঁর অধিনায়কত্বে খেলা ৩১ টি টেস্টে ইয়ান বোথাম ও বব উইলিস মিলে ২৬২ টি উইকেট নিয়েছিলেন যা ব্রিয়ারলির দুর্দান্ত রেকর্ডের একটি বড় কারণ।

ব্রিয়ারলি ১৯৭৯ বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডকে ফাইনালে তুলেছিলেন অধিনায়ক হিসেবে। তিনি সেমিফাইনালে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে ৫৩ ও ফাইনালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে দলগত সর্বোচ্চ ৬৪ রান করেন। যদিও ফাইনালে জিওফ বয়কট এর সঙ্গে তাঁর ৩৮ ওভারে ১২৯ রানের ওপেনিং পার্টনারশিপ খুবই শ্লথগতির ছিল, যা রিচার্ডসের দুর্দান্ত সেঞ্চুরিতে ভর করে ওয়েস্ট ইন্ডিজের তৎকালীন পাহাড়সম ২৮৭ রানের লক্ষমাত্রা তাড়া করার জন্যে যথেষ্ট ছিলো না; ইংল্যান্ড ৯২ রানে ফাইনালটি হারে। (এই ফাইনাল ছিল ৬০ ওভারের)। তবে মনে রাখতে হবে তাঁকে ওয়েস্ট ইন্ডিজের চার ফাস্ট বোলার রবার্টস, হোল্ডিং, ক্রফ্ট আর গার্নারের মোকাবিলা করতে হয়েছিল।

এতদসত্ত্বেও কিছু বিতর্ক ব্রিয়ারলির পিছু ছাড়েনি। ৭৮ সালে পাকিস্তানের ইংল্যান্ড সফরের সময় তিনি বব উইলিসকে দিয়ে পাকিস্তানের টেল এন্ডার ব্যাটসম্যানদের উপর বাউন্সার বৃষ্টি করেন যা নিন্দিত হয়েছিল। ৭৯ সালের অস্ট্রেলিয়া সিরিজে তিনি ডেনিস লিলির বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন যে তিনি উইলোর বদলে এলুমিনিয়ামের ব্যাট নিয়ে খেলছেন যা বিতর্কের জন্ম দেয়।

ওই একই ট্যুরে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সঙ্গে সিডনিতে একটি ওয়ানডে ম্যাচে শেষ বলে তিন রান বাকি থাকা অবস্থায় তিনি উইকেটকিপার সহ সব ফিল্ডারকে বাউন্ডারি লাইনে পাঠিয়ে দেন ( যা তৎকালীন নিয়ম অনুযায়ী বৈধ ছিল)। এই ঘটনাও বিতর্ক উস্কে তোলে।

মাইক ব্রিয়ারলি বর্তমানে একজন মনোবিজ্ঞানী (রডনি হগের মন্তব্য সত্যি করেই), অবসর সময়ে সাংবাদিকতা করেন, এবং এখনও তিনি বর্তমান প্রজন্মের ক্রিকেটারদের কাছে এক বিস্ময় ও অনুপ্রেরণা!

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...