বিশ্বকাপের দরজায় কড়া নাড়ছেন আমির

তাইতো আসন্ন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দলে জায়গা পাওয়ার ক্ষেত্রে যোগ্য দাবিদার তিনি। 

মোহাম্মদ আমির অফ স্ট্যাম্পের বেশ বাইরের দিকে ছুড়লেন বল। চোখ বন্ধ করে চালানো ছাড়া ইশ সোধির কাছে ছিল না আর কোন উপায়। তাতে করে ইনিংসের একেবারের শেষ বলে গিয়ে আমির পেলেন উইকেটের দেখা। আপাতদৃষ্টিতে নিতান্তই এক সাধারণ বোলিং স্পেল মনে হতে পারে দিনশেষে আমিরের বোলিং ফিগার দেখে।

তবে ৪ ওভারে ৩২ রান খরচা করা আমিরের এই বোলিং পারফরমেন্সকে মোটেও খাটো করে দেখবার উপায় নেই। কেননা ইনিংসের শুরু কিংবা শেষ, দুই সময়েই দারুণ বোলিং করে গেছেন তিনি। উইকেট প্রাপ্তিতে হয়ত খানিকটা অসন্তুষ্টি থেকেই যাবে। কিন্তু পুরো বোলিং স্পেল জুড়েই তার পরিকল্পনা ছিল স্পষ্ট। আক্রমণ নয়, তার দায়িত্ব ছিল রক্ষণাত্মক বোলিং করা।

নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে চতুর্থ টি-টোয়েন্টি ম্যাচ গড়িয়েছে লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে। ম্যাচের শুরু থেকেই নিউজিল্যান্ডের ব্যাটাররা আক্রমণাত্মক ভঙ্গিমায় খেলতে থাকেন। পাওয়ার প্লে-এর ছয় ওভারে বাকি বোলারদেরকে একেবারে নাস্তানাবুদ করেছেন ব্ল্যাকক্যাপস দুই ওপেনার, টিম রবিনসন ও টম ব্ল্যান্ডেল। ওভার প্রতি ১২ রান করে আদায় করেছেন পাকিস্তানি বোলারদের বিপক্ষে।

তবে মোহাম্মদ আমিরের ক্ষেত্রে ছিল ভিন্নতা। আমির পাওয়ার প্লে-তে দুই ওভার বল করেন। সেই দুই ওভারে সাত ইকোনমি রেটে রান দিয়েছেন তিনি। ব্যাটারদের নিজেদের হাতখুলে খেলার খুব বেশি সুযোগ দেননি আমির। একইরকম কাজ তিনি করে গেছেন ইনিংসের শেষের দিকেও। ১৬ থেকে ২০ ওভারের মধ্যে দুই ওভার বোলিং করেছেন।

এই দুই ওভারে মাত্র একটি বাউন্ডারি হজম করতে হয়েছে তাকে। এমনকি পুরো স্পেলে দুইটি বাউন্ডারিই আদায়  করতে পেরেছেন ব্যাটাররা আমিরের বিপক্ষে। তাছাড়া ডেথ ওভারে অফ স্ট্যাম্পের বাইরে ওয়াইডের লাইন ধরে বল করে গেছেন তিনি। যাতে করে চাইলেই বড় শট খেলতে না পারে নিউজিল্যান্ডের ব্যাটাররা। সেটাও তার উপর অর্পিত দায়িত্বের প্রতিচ্ছিবি।

সুতরাং এই বয়সেও তিনি দলের চাহিদা মেটানোর সক্ষমতা রাখেন। তিনি জানেন পরিস্থিতির চাহিদা ঠিক কি, সে অনুযায়ী নিজের বোলিংয়ে বৈচিত্র্য আনতে পারেন। ব্যাটারদের ধোকায় রেখে নিজের কার্য হাসিল করতে এখনও ভোলেননি বা-হাতি এই পেসার। তাইতো আসন্ন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দলে জায়গা পাওয়ার ক্ষেত্রে যোগ্য দাবিদার তিনি।

মোহাম্মদ আমির একজন চ্যাম্পিয়ন বোলার। বয়সের কোটা যখন ১৮ ছুঁয়ে দেখেনি তখন তিনি পেয়েছিলেন বিশ্বকাপ জয়ের স্বাদ। ২০০৯ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের চ্যাম্পিয়ন দলে ছিলেন তিনি। এরপর দীর্ঘ এক নির্বাসন কাটিয়ে আবারও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরার সাহস দেখিয়েছেন।

শুধু তাই নয়, তিনি পাকিস্তানকে ২০১৭ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জিততেও সহয়তা করেছেন। ফাইনালে চিরপ্রতিদ্বন্দী ভারতের ব্যাটারদের লাগাম টেনে রাখতে সক্ষম হয়েছিলেন আমির। তার মানে তিনি জানেন ঠিক কিভাবে জিততে হয় শিরোপা। শিরোপা জয়ের রাস্তাটা আমিরের জানা। তাইতো বিশ্বকাপের দলে তাকে না রাখাটা হবে ঘোরতর অন্যায়।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...