স্কিড ডেলিভারিতে বিশ্বকাপের দুয়ারে বিষ্ণয়

পঞ্চম টি-টোয়েন্টির কথা, রবি বিষ্ণয়ের করা ঘণ্টায় ৯৮.৮ কিলোমিটার গতির বলটা সোজা বাউন্ডারির বাইরে মারেন ট্রাভিস হেড। কিন্তু ভয় পেয়ে চুপসে যাননি তিনি, পরের বলটার গতি একশ কিমির মাইলফলক পেরিয়ে যায়। এরপর স্রেফ মিলি সেকেন্ডের মাঝে ব্যাট আর প্যাডের ফাঁক গলে স্ট্যাম্পে আছড়ে পড়ে সেই ডেলিভারি।

এমন মোহনীয় বোলিং বিষ্ণয়ের জন্য মোটেই নতুন কিছু নয়, সংক্ষিপ্ত ক্যারিয়ারে বারবার এই কাজে ব্যাটারদের বোকা বানিয়েছেন তিনি। এটাকে তাঁর ট্রেডমার্ক ডেলিভারিও বলা যায় – স্কিড করে ডান-হাতিদের ভেতরের দিকে ঢুকে পড়ে। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে সীমিত ওভারের এই সিরিজে গুগলি আর রং-আন এর মিশেল তাঁকে সাফল্য এনে দিয়েছে অনেকবার।

তবে এসব ক্ষেত্রে মোটেই টার্নের ওপর নির্ভর করেন না তিনি। ব্যাটারদের দিকে এঙ্গেল তৈরি করে স্লাইড ডেলিভারি করতে পারাটা তাঁর সবচেয়ে বড় সক্ষমতা। বল পিচ করার পরে স্কিড করে ঢুকে যায়, ফলে ব্যাটাররা খেলার জন্য খুব কম সময় পায়।

রবীন্দ্র জাদেজা, অক্ষর প্যাটেল, কুলদীপ যাদব, যুজবেন্দ্র চাহালদের পাশাপাশি রবি বিষ্ণয় এখন ভারতীয় স্পিন আক্রমণভাগের নতুন অস্ত্র। তবে বাকিদের চেয়ে আলাদা ভাবেই গড়ে উঠেছেন তিনি, আর সেটা চোখ এড়ায়নি স্পিন কিংবদন্তি মুত্তিয়া মুরালিধরনের।

তিনি বলেন, ‘সব প্রজন্মেই ভারতের ভালো স্পিনার ছিল। আপনি দেখুন অনিল (কুম্বলে) থেকে শুরু করে (রবিচন্দ্রন) অশ্বিন; এরপর এখনকার তরুণরা যারা এসেছে। তবে অন্য লেগ স্পিনার থেকে বিষ্ণয় আলাদা। সে জোরের ওপর বল করে এবং সে অনেক বেশি স্লাইড করতে পারে।’

এখন পর্যন্ত টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটটাই খেলছেন এই তরুণ। আর এই ফরম্যাটের যেকোনো পর্যায়ে বোলিং করতে সক্ষম এমন গুটিকয়েক স্পিনারদের মাঝে তিনি অন্যতম। সেরা স্পিনারদের মধ্যে রশিদ খান ছাড়া তেমন কেউই ডেথ ওভারে বল করেন না। যদিও গত আইপিএল, লক্ষ্ণৌ অধিনায়ক লোকেশ রাহুল তাকে শেষ ওভারে ব্যবহার করেছিলেন। এবং রাহুলের পরিকল্পনা সফলও হয়েছিল।

আর মাস ছয়েক পরেই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ, ইতোমধ্যে সেই লক্ষ্যে দল গুছাতে শুরু করেছে ভারত। তাঁদের ভাবনায় যুজবেন্দ্র চাহালের চেয়ে রবি বিষ্ণয় যে বেশি এগিয়ে আছেন সেটা প্রায় নিশ্চিত। তুলনামূলক অনভিজ্ঞ এই বোলার তাঁর সামর্থ্যের বিচারে পিছনে ফেলেছেন চাহালকে।

যদিও দুজনের দ্বন্দের শেষটা হবে আইপিএল দিয়েই, এই টুর্নামেন্টের পারফরম্যান্সের উপর নির্ভর করছে বিশ্বকাপে খেলা। তবে বিশ্বকাপ দলে না থাকলেও বিষ্ণয়ের এমন উত্থান অস্বীকার করার কোন উপায় নেই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link