তৃতীয় ওয়ানডেতে দুর্ধর্ষ বোলিংয়ের প্রদর্শনী করেছিলেন শরিফুল ইসলাম; মাত্র ২২ রানের বিনিময়ে তিন উইকেট নিয়ে ইতিহাস গড়ার পেছনে রেখেছিলেন গুরুত্বপূর্ণ অবদান। সেদিন যেখানে থেমেছিলেন, প্রথম টি-টোয়েন্টিতে সেখান থেকেই শুরু করলেন তিনি – কিউইদের গুঁড়িয়ে দেয়ার কাজটা করলেন।
চার ওভার হাত ঘুরিয়ে দিয়েছেন মাত্র ২৬ রান, এর বিনিময়ে তুলে নিয়েছেন গুরুত্বপূর্ণ তিনটি উইকেট। পুরো ইনিংস জুড়েই সুইং আর বাউন্সের জাদু দেখিয়েছেন তিনি; বলা যায় ব্ল্যাকক্যাপস ব্যাটিং লাইন আপের মেরুদণ্ড ভেঙ্গে দিয়েছেন এই তরুণ।
খেলাটা নেপিয়ারে, আগের ম্যাচে এই পিচেই তো ঝড় তুলেছিলেন শরিফুল। সেই স্মৃতি সঙ্গী করে বোলিং প্রান্তে আসতেই বিধ্বংসী মূর্তি ধারণ করেন তিনি। একের পর এক আগুনের গোলা বেরিয়ে আসে তাঁর হাত থেকে। ফিন অ্যালেনকে প্রথম বলটা দিয়েছিলেন ইনসুইং, পরের বলে আউট সুইংয়ে বোকা বানিয়েছেন তাঁকে। যা হওয়ার তাই হয়েছে, স্লিপে ক্যাচ দিয়ে আউট হয়েছেন অ্যালেন।
পরের বলে আবার ইনসুইং, এবার কিছু বুঝে ওঠার আগেই এলবিডব্লুর ফাঁদে আটকা পড়েন গ্লেন ফিলিপ্স। ভিতরে ঢোকা ডেলিভারি অনুমান করতে না পেরে ছেড়ে দেন এই কিউই তারকা, আর সেটাই কাল হয়ে দাঁড়ায়।
মিচেল স্যান্টনার ও জেমস নিশামের পার্টনারশিপে যখন ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন দেখেছিল স্বাগতিকরা। তখন পুনরায় দৃশ্যপটে হাজির হন এই বাঁ-হাতি পেসার। স্যান্টনারের উইকেট তুলে নিয়ে ব্রেক থ্রু দেন দলকে; যদিও আক্ষেপ থাকবে কিছুটা, শেষ ওভারে ফিল্ডারদের ভুলে দুই দুইবার উইকেটবঞ্চিত হয়েছেন তিনি।
টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে এক ইনিংসে পাঁচ উইকেট কখনো পাননি এই পেসার, চার উইকেটও নয়। এদিন তাই বেস্ট বোলিং ফিগারের সুযোগ হাতছাড়া হলো সতীর্থদের জন্য। একই কারণে শেষ ওভারে বাড়তি রানও হজম করতে হয়েছে তাঁকে।
তবু দিন শেষে তিনিই খুলে দিলেন আরেকটা ইতিহাস গড়ার দরজা। নিউজিল্যান্ডের মাটিতে কখনো ওয়ানডে না জেতা টাইগাররা তাঁর পারফরম্যান্সের কল্যাণেই প্রথম জয় পেয়েছিল দিন কয়েক আগে, এবার টি-টোয়েন্টিতেও জয়ের পথ চিনিয়ে দিলেন। তবে কি সর্বশেষ ওয়ানডের পুনরাবৃত্তি ঘটতে যাচ্ছে – উত্তরটা শীঘ্রই পাওয়া যাবে।
অবশ্য ফলাফল ছাপিয়ে আলোচনার বিষয় এখন শরিফুলের উন্নতি। নিজের বোলিং নিয়ে কাজ করেছেন, ভ্যারিয়েশন যোগ করেছেন। এসবের বদৌলতেই চলতি বছর অবিশ্বাস্য ধারাবাহিকতা দেখাতে পারছেন তিনি, এবার সেটা ধরে রাখার পালা।