কেপ টাউনে হচ্ছেটা কি! এক দিনে ২৩ উইকেট!

কেপ টাউনে ভীতিকর একটা দিনই গেলো – স্রেফ তাণ্ডব চালিয়েছেন পেসাররা, ব্যাটারদের জন্য বিভীষিকা হয়ে উঠেছিল বাইশগজ। তিন সেশনেই ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকা দ্বিতীয় টেস্টের অর্ধেকের বেশি শেষ হয়ে গিয়েছে, কেননা সব মিলিয়ে ২৩টি উইকেট পড়েছে পুরো দিনে; পঞ্চাশও উদযাপন করতে পারেননি কেউ।

তবে পেস আধিপত্যের এদিন ভারতের ব্যাটিং ধ্বস আলাদাভাবে চোখে পড়েছে। স্বাগতিকদের ৫৫ রানে গুটিয়ে দিয়ে পাহাড়সম লিডের স্বপ্ন বুনেছিল দলটি, শুরুতে যশস্বী জসওয়ালকে হারালেও সেই স্বপ্ন ডানা মেলেছিল রোহিত শর্মার আগ্রাসনে। শুভমান গিলের সঙ্গে তাঁর ৭০ রানের জুটি বড় সংগ্রহের দিকেই এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলো তাঁদের।

৩৬ রান করে রোহিত ফিরলেও বিরাট কোহলি হাল ধরেন দলের। মাঝে গিল, আইয়াররা আউট হলেও তাই স্বস্তিতে ছিল টিম ইন্ডিয়া। কিন্তু দলীয় ১৫৩ রানে লোকেশ রাহুল প্যাভিলিয়নে ফিরলে এলোমেলো হয়ে যায় সবকিছু, স্কোরবোর্ডে আর কোন রান যোগ না করেই একই পথ ধরেন রবীন্দ্র জাদেজা, বুমরাহ, কোহলি।

এখানেই থামেনি আসা যাওয়ার মিছিল, রান আউটে কাটা পড়েন মোহাম্মদ সিরাজ আর স্লিপে বন্দী হন প্রসিদ্ধ কৃষ্ণা – এই দুজনও পারেননি কোন স্কোরবোর্ডে পরিবর্তন আনতে। ফলে ১৫৩/৪ থেকে মুহূর্তের মাঝে ১৫৩/১০ হয় যায় ভারতের ইনিংস।

৩৪তম ওভারে লুঙ্গি এনগিদি একাই শিকার করেছিলেন চার উইকেট, এরপর রাবাদা আরো দুই উইকেট তোলার পাশাপাশি সিরাজ রান আউট হওয়ায় স্রেফ এগারো বলের ব্যবধানে শেষ ছয় উইকেট হারায় তাঁরা। সাত জন ব্যাটারই এদিন ড্রেসিংরুমে ফিরেছেন কোন রান না করে।

এর আগে কখনোই এমন দৃশ্য দেখেনি ক্রিকেট বিশ্ব, ১৯৯০ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে তিন রান তুলতেই শেষ ছয় উইকেট হারিয়েছিল ইংল্যান্ড। দ্বিতীয় ইনিংসে ১৪৭ রানে চার উইকেট থেকে ১৫০ রানে অল-আউট হয়ে গিয়েছিল তাঁরা। ২৪ বছর আগের এই লজ্জার রেকর্ড ভেঙে দিল ভারত। আর সেজন্যই বিশাল লিডের সম্ভাবনা থাকলেও কেবল ৯৮ রানে এগিয়ে থেকেই সন্তুষ্ট হতে হয় তাঁদের।

সত্যি বলতে কেপ টাউন রীতিমতো পেস স্বর্গ হয়ে উঠেছিল। দুই দলের পেসাররাই ত্রাস ছড়িয়েছেন কিন্তু ভারতের এই বিপর্যয় মানতে পারছেন না কেউই, বিশেষ করে টপ অর্ডারের এমন দুর্দান্ত সূচনার পরেও মিডল আর লোয়ার মিডল অর্ডারের অসহায় আত্মসমর্পণ এশিয়ার প্রতিনিধিদের পিছিয়ে দিয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link