বাজে সূচনার বিশ্ব একাদশ

অনেকেই আবার প্রথম আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলতে এসেই জয় করে ফেলেন। তবে সবার গল্পটা এমন হয় না। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের শুরুটা অনেকেই রূপকথার গল্পের মত করতে পারেন না। অনেক ক্রিকেটারই নিজেদের টেস্ট অভিষেকে এসে হোঁচট খেয়েছেন। কেউ কেউ কালক্রমে ক্রিকেটের ইতিহাসে বড় তারকা বনেছেন। তাঁদের নিয়েই নির্মিত হয়েছে একাদশ।

ঘরোয়া ক্রিকেট আর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের মধ্যে বেশ বড় কিছু পার্থক্য থাকে। ফলে ঘরোয়া ক্রিকেটের অনেক নিয়মিত পারফর্মারও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এসে গুলিয়ে ফেলেন। এত মানুষের চাপ নিতে পারেন না অনেকেই।

অনেকেই আবার প্রথম আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলতে এসেই জয় করে ফেলেন। তবে সবার গল্পটা এমন হয় না। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের শুরুটা অনেকেই রূপকথার গল্পের মত করতে পারেন না। অনেক ক্রিকেটারই নিজেদের টেস্ট অভিষেকে এসে হোঁচট খেয়েছেন। কেউ কেউ কালক্রমে ক্রিকেটের ইতিহাসে বড় তারকা বনেছেন। তাঁদের নিয়েই নির্মিত হয়েছে একাদশ।

  • গ্রাহাম গুচ (ইংল্যান্ড)

১৯৭৫ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষিক্ত হন ইংল্যান্ডের এই কিংবদন্তি। তবে তাঁর অভিষেকটা মোটেই রঙিন ছিল না। ওই টেস্টে সবমিলিয়ে মাত্র ১০ টি বল খেলতে পেরেছিলেন তিনি। ব্যাট করেছেন মোট ৮ মিনিট। এরপর ইংল্যান্ড দল থেকে বাদও পড়েছিলেন। পরে ফিরে এসে ইংল্যান্ডের অন্যতম সেরা টেস্ট ব্যাটসম্যানদের একজন হয়েছেন গ্রাহাম গুচ।

  • অ্যান্ডি লয়েড (ইংল্যান্ড)

অ্যান্ডি লয়েড টেস্ট ক্রিকেটে অভিষিক্ত হয়েছিলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে। ১৯৮৪ সালে ২৭ বছর বয়সে প্রথম টেস্ট খেলতে নামেন তিনি। প্রথম ইনিংসে তখন ৩০ মিনিট ব্যাট করে ফেলেছেন তিনি। ব্যাট হাতে করেছেন ১০ রান।

তবে এরপরই ম্যালকম মার্শালের একটি বল তাঁর মাথায় আঘাত করে। ১০ রানের অপরাজিত ইনিংস নিয়েই ভর্তি হতে হয় হাসপাতালে। এরপর আর কখনো টেস্ট ক্রিকেট খেলা হয়নি তাঁর। তিনিই একমাত্র ব্যাটসম্যান যিনি টেস্টে ব্যাট করতে নেমেছেন কিন্তু কখনো আউট হননি।

  • লেন হটন (ইংল্যান্ড)

লর্ডসে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষিক্ত হন লেন হটন। ইংল্যান্ডের অন্যতম সেরা এই টেস্ট ব্যাটসম্যান ১৯৩৭ সালে নিজের প্রথম টেস্টে একেবারের হতাশ করেছিলেন। ওপেন করতে নেমে দুই ইনিংসে যথাক্রমে করেন শূন্য ও এক রান। তিনিই পরবর্তীতে ইংল্যান্ডের হয়ে আরো ৭৮ টি টেস্ট খেলেন। ৭৯ টেস্টে ৫৬.৬৭ গড়ে করেছিলেন ৬৯৭১ রান।

  • ডন ব্র্যাডম্যান (অস্ট্রেলিয়া)

জ্বি, নামটা ভুল পড়েননি। ১৯২৮ সালে এক অ্যাশেজ সিরিজে টেস্ট অভিষিক্ত হন স্যার ডন ব্র্যাডম্যান। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ব্যাট করতে নেমে নিজের সামর্থ্যের পরিচিয় দিতে পারেননি এই কিংবদন্তি। দুই ইনিংসে যথাক্রমে করেন ১৮ ও ১ রান। দ্বিতীয় টেস্টেই দ্বাদশ ব্যক্তি হিসেবে ছিলেন তিনি। ক্যারিয়ারের ওই একবারই দল থেকে বাদ পড়েছিলেন তিনি।

  • জিমি কুক (দক্ষিণ আফ্রিকা)

১৯৯২ সালে ভারতের বিপক্ষে টেস্ট অভিষেক হয় দক্ষিণ আফ্রিকার এই ক্রিকেটারের। দক্ষিণ আফ্রিকার ঘরোয়া ক্রিকেটে এক বিরাট নাম ছিলেন তিনি। তবে সেই সময় দক্ষিণ আফ্রিকা নিষিদ্ধ থাকায় আর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলতে পারেননি তিনি। যখন সুযোগ হলে তখন প্রথম ইনিংসের প্রথম বলেই আউট হয়ে যান এই ব্যাটসম্যান। দ্বিতীয় ইনিংসে অবশ্য ৪৩ রান করেছিলেন। তবে এরপর আর মাত্র ২ টি টেস্ট খেলেন তিনি।

  • জ্যাক ম্যাকব্রায়ান (ইংল্যান্ড)

১৯২৪ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে অভিষিক্ত হন জ্যাক ম্যাকব্রায়ান। বৃষ্টি ভেজা সেই টেস্ট ম্যাচে কিছুই করেননি তিনি। ওই ম্যাচে একবারো বল হাতে নেননি তিনি। কিংবা কোন ক্যাচও ধরেননি। তবে এরপর আর ইংল্যান্ড কখনো কিছু করারও সুযোগ দেয়নি ম্যাকব্রায়ানকে।

  • গেভিন হ্যামিলটন (ইংল্যান্ড-স্কটল্যান্ড)

১৯৯৯ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে নিজের প্রথম টেস্ট ম্যাচ খেলতে নামেন হ্যামিলটন। জোহানেসবার্গের সবুজ পিচে দুই ইনিংসেই শূন্য রানে ফিরেন তিনি। এছাড়া বল হাতেও কোন উইকেট নিতে পারেননি তিনি। ৩৮ টি ওয়ানডে ম্যাচ খেললেও ওই এক টেস্টেই থেমে যায় তাঁর আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার। মজার ব্যাপার হল ৩৮ টি ওয়ানডের সবগুলোই তিনি খেলেছেন মাতৃভূমি স্কটল্যান্ডের হয়ে। ছিলেন বিশ্বকাপেও।

  • ম্যালকম মার্শাল (ওয়েস্ট ইন্ডিজ)

১৯৭৯ সালে মাত্র ২০ বছর বয়সে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষিক্ত হন ম্যালকম মার্শাল। নিজের প্রথম টেস্ট খেলেন বেঙ্গালুরুতে ভারতের বিপক্ষে। উপমহাদেশের স্পিন একেবারেই ধরতে পারছিলেন না এই তরুণ। স্পিন বল মারতে গিয়ে ক্যাচ আউট হয়ে কাদতে কাদতে প্যাভিলিয়নের দিকে ফিরেছিলেন। বল হাতেও কোন উইকেট পাননি সেই ম্যাচে। পরে এই ম্যালকম মার্শালই অনেক ব্যাটসম্যানের চোখের পানি ঝড়িয়েছেন।

  • জেফ থমসন (অস্ট্রেলিয়া)

মেলবোর্নে ১৯৭২ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট অভিষেক হয় থমসনের। মাত্র ২২ বছর বয়সী এই পেসার নিজের অভিষেক ম্যাচে টেস্ট ক্রিকেটের সুরটা খুঁজে পাননি। ওই ম্যাচে ১৭ ওভার বল করে ১০০ রান দিয়ে কোন উইকেট পাননি তিনি। ওই ম্যাচের পরই বাদ দিয়ে দেয়া হয় তাঁকে। আবার বছর দুয়েক পর এক অ্যাশেজ সিরিজে ফিরে এসেছিলেন তিনি।

  • শেন ওয়ার্ন (অস্ট্রেলিয়া)

ভারতের বিপক্ষে ১৯৯১ সালে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষিক্ত হন শেন ওয়ার্ণ। ওই ম্যাচের দুই ইনিংসে হতাশ করেছিলেন তিনি। নিয়েছিলেন মাত্র ১ টি উইকেট। অথচ তিনিই পরবর্তীতে নিজেকে টেস্ট ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম সফল বোলারে পরিণত হয়েছেন। অজি এই কিংবদন্তি তাঁর টেস্ট ক্যারিয়ার শেষ করেছেন ৭০৮ উইকেট নিয়ে।

  • নিলেশ কুলকার্নি (ভারত)

১৯৯৭ সালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সাদা পোশাকের ক্রিকেটে অভিষিক্ত হন ভারতের এই ক্রিকেটার। কলম্বোতে নিজের অভিষেক টেস্টে দারুণ ব্যাটিং করেছিল ভারত। ৮ উইকেট হারিয়ে ৫৩৭ করে ইনিংস ঘোষণা করেছিল ভারত। সেই ইনিংসে আর ব্যাট করতে হয়নি কুলকার্নিকে। পরে বল করতে নেমে নিজের প্রথম বলেই উইকেট নিয়ে নেন তিনি। তবে ওই ইনিংস শেষে ৭০ ওভার বল করেও মাত্র ওই একটি উইকেটই ছিল তাঁর ঝুলিতে। শ্রীলঙ্কা ৬ উইকেট হারিয়ে গড়েছিল ৯৫২ রানের বিশাল পাহাড়।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...