বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন নতুন মন্ত্রিসভায় যুব ও ক্রীড়ামন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন। এ খবর এখন পুরনোই বটে। তবে তাঁর মন্ত্রী হওয়ার খবর প্রকাশের পর এরই মধ্যে ক্রিকেটপাড়া ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তোলপাড় শুরু হয়েছে। বেশ কয়েকটি প্রশ্ন এখন ঘুরে ফিরে আসছে।
প্রথমত, ক্রীড়ামন্ত্রী হওয়ার পরও কি নাজমুল হাসান পাপন বিসিবির দায়িত্বে বহাল থাকতে পারবেন? দ্বিতীয়ত, পাপন দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি নিলে তাঁর স্থলে মাশরাফির নাম যে আলোচনায় তা কতটুকু যৌক্তিক? বিসিবি সভাপতি হওয়ার ক্ষেত্রে মাশরাফির রোডম্যাপ কী হতে পারে?
একই সঙ্গে মন্ত্রীত্ব ও বিসিবির দায়িত্বে থাকাতে আইনত কোনো বাঁধা নেই। এর আগে সাবেক তিন সভাপতি মন্ত্রীত্ব এবং বোর্ড একসঙ্গে চালিয়ে গেছেন। বিসিবি ও রাষ্ট্রীয় কোনো আইনেও এতে বাঁধা নেই।
তবে বর্তমান প্রেক্ষাপটে মাশরাফির জন্য বোর্ড সভাপতি হওয়াটা এক প্রকার অসম্ভবের নামান্তর। বিসিবির সংবিধান ও গঠনতন্ত্র সেটিই বলছে। কারণ গঠনতন্ত্র অনুযায়ী এ মুহূর্তে নাজমুল হাসান পাপন যদি বিসিবি প্রধানের পদ ছেড়েও দেন, তাহলে সবার আগে বাকি পরিচালকদের মধ্য থেকে কেউ একজন হবেন বোর্ড প্রেসিডেন্ট।
আরেকটি বিষয় হলো, মাশরাফি এখন পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে ক্রিকেটকে বিদায় বলেননি। বিসিবির সভাপতি হওয়ার দৌড়ে বর্তমান ক্রিকেটারদের কোনো সুযোগ নেই। তাছাড়া মাশরাৈও ক্রিকেট বোর্ডের কাউন্সিলর নন। বর্তমান বোর্ড পরিচালনা পর্ষদের সদস্যও নন তিনি
বিসিবির সর্বোচ্চ পদে আসীত হতে হলে সর্বপ্রথম কাউন্সিলর হতে হবে। এরপর নির্বাচন করে জিতে পরিচালক নির্বাচিত হতে হবে। এরপর বোর্ড সভাপতি হতে গেলে পরিচালকদের ভোটে নির্বাচিত হতে হবে। অর্থাৎ বিসিবি সভাপতি হতে হলে প্রথমে বিসিবির কাউন্সিলর, এরপর নির্বাচন করে পরিচালক নির্বাচিত হওয়া হলো দ্বিতীয় ধাপ। বোর্ড প্রধানের পদ পেতে শেষ ধাপ হলো পরিচালকদের ভোটাভুটিতে নির্বাচিত হওয়া।
কারণ বোর্ড সভাপতি ঠিক হয় সংখ্যাগরিষ্ঠ পরিচালনা পর্ষদের মতামতের ভিত্তিতে। কাজেই সেই জায়গায় পাপন বিসিবি প্রধানের পদ থেকে সরে দাঁড়ালে আপাতত বিসিবির গঠনতন্ত্র ও সংবিধানে পরিচালনা পর্ষদের বাইরে থেকে আরও কারও বোর্ড সভাপতি হওয়ার কোনো বিধান নেই। সে হিসেবে নিকট ভবিষ্যতে মাশরাফির বিসিবির সভাপতি হওয়ার সম্ভাবনা নেই।
তবে সবকটি ধাপ অতিক্রম করে মাশরাফি একটা সময়ে সভাপতি হওয়ার যৌক্তিক আলোচনায় থাকতে পারেন। তবে সেই ইচ্ছাটা আদৌ তাঁর আছে কিনা, সেটি নিয়েও প্রশ্ন আছে। বিসিবির যেকোনো দায়িত্বের প্রস্তাবে বরাবরই অনাগ্রহ জানিয়েছেন এ ক্রিকেটার।