সাত ম্যাচ, ছয় ইনিংস, ১৯ রান – আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে এমন পরিসংখ্যান দেখলে আপনি হয়তো ভাববেন কোন বোলারের ব্যাটিং পারফরম্যান্স বুঝি। কিন্তু না, এমন হতশ্রী সংখ্যা তত্ত্ব যার নামের পাশে জ্বলজ্বল করছে তিনি পুরোদস্তুর ব্যাটার; আর এই ব্যাটারের নাম আজম খান।
তাঁর ক্যারিয়ার আরেকটু বিস্তারিত দেখা যাক – সর্বোচ্চ ১০, স্ট্রাইক রেট ৭৫ আর ব্যাটিং গড় ৩.৮! সবমিলিয়ে ২৫ বল মোকাবিলা বাউন্ডারি মেরেছেন মোটে দুইটি। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের ইতিহাসে এমন বাজে সূচনা আর কোন ক্রিকেটার পেয়েছিলেন কি না সেটা জানতে ইতিহাসের পাতায় আঁতিপাঁতি করে খুঁজতে হবে।
অথচ ঘরোয়া ক্রিকেটে কি দুর্দান্ত আধিপত্য এই তরুণের; দেশের কিংবা বিদেশের ফ্রাঞ্চাইজি লিগগুলোতে যেভাবে ব্যাট করেন তিনি তাতে মনে হয় বিশ ওভারের ফরম্যাটে বিশ্বসেরা ব্যাটারদের একজন। কিন্তু পাকিস্তানের জার্সিতে অবিশ্বাস্যভাবে ব্যর্থ তিনি।
২০২১ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে অভিষেক হয়েছিল এই উইকেটকিপারের; প্রথম ম্যাচে পাঁচ রান করে অপরাজিত ছিলেন তিনি। পরের ইনিংসে তাঁর ব্যাট থেকে আসে মাত্র এক রান; স্বাভাবিকভাবেই দল থেকে বাদ পড়েছিলেন। প্রায় দুই বছর পর দলে ফেরেন আফগানিস্তান সিরিজ দিয়ে, দুই ম্যাচ সুযোগ পেয়ে যথাক্রমে ০ ও ১ রান করেন এই ডানহাতি।
পুনরায় জাতীয় দলে জায়গা পান এবারের নিউজিল্যান্ড সফরের দলে; প্রথম ম্যাচে ক্যারিয়ারের প্রথমবারের মত দুই অঙ্কের ঘরে প্রবেশ করেন তিনি, করেন দশ রান। পরের ম্যাচে গুরুত্বপূর্ণ সময়ে দুই রান করেই সাজঘরে ফেরেন।
উল্টো চিত্র দেখা যাবে সব ধরনের টি-টোয়েন্টি বিবেচনা করা হলে; সেখানে ১৪০ ম্যাচ খেলেছেন আজম খান। সবমিলিয়ে করেছেন ২৭৮৮ রান, ব্যাটিং গড় প্রায় ২৫ আর স্ট্রাইক রেট ১৪৪.৬০। একটি শতকের পাশাপাশি ১৪টি অর্ধ-শতক রয়েছে তাঁর ঝুলিতে।
সম্ভাবনার বিচারে যার হওয়ার কথা ছিল পাকিস্তান টি-টোয়েন্টি দলের অন্যতম ভরসা, সেই ব্যাটার এখন রান করতেই ভুলে গিয়েছেন। চলতি নিউজিল্যান্ড সিরিজ সম্ভবত এই তরুণের জন্য শেষ সুযোগ। এই সুযোগ কাজে লাগাতে না পারলে লম্বা একটা সময়ের জন্য বাদ পড়বেন তিনি, এমনটা ধারণা করাই যায়।