সৌম্য যেন বড্ড দুর্ভাগা!

মুস্তাফিজুর রহমানের অফ কাটার। তাও আবার ইয়র্কার লেন্থে। সৌম্য সরকারের কাছে ছিল না সেই বলের কোন জবাব। বোল্ড আউট! তাতেই সমাপ্তি ঘটে সৌম্যর দারুণ এক ইনিংসের। একটি দূর্দান্ত বলে, থমকে যায় সৌম্যর বড় রানের স্বপ্ন।

আগের দিন যেখানে শেষ করেছিলেন সৌম্য, এদিনের শুরুটাও সেখান থেকেই করতে চাইলেন যেন। তবে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের বিপক্ষে একটু সতর্কতার সাথে খেলার চেষ্টা তার। ফরচুন বরিশালের ব্যাটিং ইনিংসের চতুর্থ ওভারেই ঘটে দ্বিতীয় উইকেটের পতন। একটু ধীর লয়ে শুরু করা ছিল সময়ের দাবি। সৌম্য তাই করেছেন।

উইকেটে থিতু হওয়ার পর খোলস ছেড়ে বেড়িয়ে আসতে চাইলেন। বেছে নেন আলিস আল ইসলামকে। তার বলে রিভার্স সুইপে থার্ড ম্যান অঞ্চল দিয়ে ছক্কা হাঁকিয়ে আগ্রাসনের ইঙ্গিতই দেন বা-হাতি এই ব্যাটার। সেই ওভারের শেষ বলটায় আরও একটি বাউন্ডারি হাঁকিয়ে ৯ বলে ১৫ রানে পৌঁছান সৌম্য।

এদিন তার উপর বাড়তি দায়িত্ব ছিল নিশ্চিতরুপেই। গত দিন টুর্নামেন্টের এখন অবধি সর্বোচ্চ রান করেও হারতে হয়েছিল দলকে। সেখানটায় সৌম্যের অবশ্য ছিল না দোষ। তবে খুলনা টাইগার্সের বিপক্ষে যেন বিধ্বংসী সৌম্যেরই ঝলক দেখা গিয়েছিল। তামিম ইকবালের সাথে ভুল বোঝাবুঝি বলি হয়ে রানআউট হতে হয় সৌম্যকে।

কুমিল্লার সাথে তেমন কোন পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে দেননি সৌম্য। দলের প্রয়োজন মেনে ব্যাট চালিয়েছেন। রান তুলেছেন ১৩৫.৪৮ স্ট্রাইকরেটে। মুস্তাফিজের বলে বোল্ড হওয়ার আগে তার নামের পাশে জমা হয় ৪২ রান। অর্ধশতকের পথেই ছিলেন। চার বাউন্ডারি আর দুই ছক্কা হাঁকিয়ে।

তাছাড়া দলকে আরও একটি বড় সংগ্রহের ভীত গড়ে দিচ্ছিলেন সৌম্য। সঙ্গী হিসেবে পাশে পেয়েছিলেন মুশফিকুর রহিমকে। তার সাথে গড়েন ৬৬ রানের জুটি। সেটাই বড় রানের স্বপ্ন দেখাচ্ছিল বরিশালকে। তাছাড়া দ্রুত রান সংগ্রহ করে পরবর্তী ব্যাটারদের হাতখুলে ব্যাট চালানোর সুযোগ করে দিতে চাইছিলেন তারা দুইজনেই।

শেষ অবধি অবশ্য কাজের কাজটি করা হয়ে ওঠেনি সৌম্যের। তবে সুযোগ এখানেই শেষ হয়ে যাচ্ছে না সৌম্য সরকারের। ম্যাচ যে রয়েছে আরও বেশ কয়েকটি বাকি। সেসব ম্যাচে সৌম্যের কাছ থেকে বিধ্বংসী সব ইনিংসের প্রত্যাশাই করতে চাইবে ফরচুন বরিশাল।

তাছাড়া সৌম্যর নিজের জন্যেও এবারের বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) বেশ গুরুত্বপূর্ণ। সামনেই যে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। বাংলাদেশ জাতীয় দলে জায়গা করে নিতে, দশম বিপিএল নিশ্চিতরুপেই সরব ভূমিকা রাখবে। সেটা বেশ ভাল করেই জানা সৌম্যের। তাইতো রানের ক্ষুধা বেড়েছে তার বহুগুণে।

যদিও স্রেফ পরিসংখ্যান বাড়িয়ে নেওয়ার কাজ করছেন না সৌম্য। বিপিএলে নিজ দলের প্রয়োজন মেটানোর কাজটাই করে যাচ্ছেন তিনি নিয়ম করে। দলের জয়ে অবদান রাখার চেষ্টায় কমতি নেই তার। তবে দিনশেষে দলগত ব্যর্থতায় সৌম্য়ের পারফরমেন্স থেকে যাচ্ছে আড়ালে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link