গড় ৫৪! যেকোন ব্যাটারের জন্য সেটা নি:সন্দেহে বেশ প্রসংশনীয়। তবে বোলারদের ক্ষেত্রে এই সংখ্যাটা বড্ড বেশি নেতিবাচক। সেই নেতিবাচক দৃষ্টান্তের জন্ম দিয়েছেন রংপুর রাইডার্সের পেসার হাসান মাহমুদ। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের শেষ চার ম্যাচে এই গড়টাই হয়েছে হাসানের সঙ্গী।
হাসান মাহমুদ, বর্তমান সময়ে বাংলাদেশী পেসারদের মধ্যে অন্যতম সেরা বোলার তিনি। সন্দেহাতীতভাবে সাদা বলের ক্রিকেটে হাসান মাহমুদ বেশ গুরুত্বপূর্ণ একজন। বিষয়টা রংপুর রাইডার্সের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। দেশীয় পেসারদের মধ্যে একমাত্র হাসানই সবক’টি ম্যাচ খেলেছেন রংপুরের হয়ে। দলটির হয়ে তৃতীয় সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি বোলারও তিনি।
টুর্নামেন্টের শুরুর দিকে দারুণ বোলিং করে রংপুরের আস্থার প্রতিদান অবশ্য দিয়েছিলেন তিনি। তবে সময় যত গড়িয়েছে ততই মলিন হতে শুরু করেছেন তিনি। দলের পরাজয়ের কারণে পরিণত হয়েছেন হাসান- তেমনটি বললেও খুব একটা ভুল বলা হয় না।
কেননা শেষ চার ম্যাচে মোট ১৬২ রান খরচ করেছেন হাসান। উইকেট শিকার করতে পেরেছেন স্রেফ তিনটি। এমনকি নিজের কোটার ওভারগুলো শেষ করতে পারেননি। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে বাংলাদেশ জাতীয় দলের ডেথ ওভারের আস্থার জায়গায় বিচরণ হাসানের। তবে সে জায়গায় যেন দারুণভাবে ব্যর্থ হচ্ছেন হাসান।
কুমিল্লার বিপক্ষে শেষ দুই ম্যাচের একটিতেও ডেথ ওভারে বোলিং করবার সুযোগ মেলেনি তার। কেননা এর আগেই অধিনায়কের ভরসা চূর্ণ করেছেন তিনি। প্রথম পর্বের শেষ ম্যাচে কুমিল্লার বিপক্ষে ৩ ওভারে খরচ করেন ৫১ রান। প্লে অফ পর্বের প্রথম ম্যাচে আবার ২ ওভারে ৩২ রান হজম করতে হয়েছে হাসানকে। স্বাভাবিকভাবেই অধিনায়ক আর আস্থা রাখতে পারেননি তার উপর।
সে বিষয়টি নিশ্চিত ভাবিয়েছে হাসান মাহমুদকে। তাইতো রংপুর রাইডার্সের ঐচ্ছিক অনুশীলনের দিনে মাঠে হাজির হয়েছেন হাসান মাহমুদ। একাডেমি মাঠের সেন্টার উইকেটে বোলিং করেছেন তিনি। মূলত নিজের লাইন আর লেন্থ ঠিক করার অনুশীলনই করে গেছেন তিনি। সেই সাথে ইয়র্কার লেন্থে বল করবার শৈলীতে দিয়েছেন ধার।
ব্যাটারের পায়ের গোড়ায় ছোড়া সঠিক ইয়র্কার যেকোন মুহূর্তে বদলে দিতে পারে ম্যাচের পরিস্থিতি। সেটা নিশ্চয়ই অজানা নয় হাসানের। তাইতো সবাই যখন অন্য উপায়ে গেল ম্যাচের ক্লান্তি কাটিয়ে উঠতে ব্যস্ত, তখন তিনি নিজের স্কিল ট্রেনিংয়ে দিয়েছেন মনোযোগ।
অবশ্য সার্বিক পরিস্থিতিই তাকে বাধ্য করেছে। দলের অন্যতম সেরা বোলার হয়েও দলের পরাজয় ঠেকাতে ব্যর্থ ক’জনই বা হতে চান! দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে হাসানের তাই জ্বলে ওঠা প্রয়োজন। কেননা হারলেই যে বিদায় নিতে হবে টুর্নামেন্ট থেকে। ধারাবাহিকভাবে দাপট দেখানো রংপুর রাইডার্স দল তেমনটি হোক নিশ্চয়ই প্রত্যাশা করে না।