আবারও ২০০ রানের দিকেই ছুটছিল শ্রীলঙ্কা। তবে তাদের সেই স্বপ্নের মাঝে যে বাঁধা হয়েছিলেন শরিফুল ইসলাম। খালি চোখে স্রেফ স্কোরকার্ড দেখে অন্তত আন্দাজ করা যাবে ঠিক কতটুকু চাপে তিনি রেখেছিলেন। তবে লংকানদের ব্যাটের লাগাম এদিন তিনিই টেনে ধরেছিলেন।
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি বোলার শরিফুল। সেই ধারা নিশ্চয়ই হারিয়ে যাওয়ার নয়। যদিও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচে তিনি খানিকটা ছিলেন নিষ্প্রভ। একটি উইকেট তিনি বাগিয়েছিলেন। তবে রান খরচায় বাকিদের মতই উদরতা দেখিয়েছিলেন বা-হাতি এই পেসার।
কিন্তু দিন বদলে দ্বিতীয় ম্যাচেই ভিন্ন রুপে হাজির হলেন শরিফুল ইসলাম। প্রথম ওভারেই তো ভরকে দিয়েছিলেন শ্রীলঙ্কান ওপেনার আভিষ্কা ফার্নান্দোকে। নিজের চিরায়ত ভঙ্গিমায় বোলিং করে গেছেন। সেই দূর্ধর্ষ ইনসুইং বলগুলো নাভিশ্বাস তুলেছিল। অস্বস্তির চূড়ান্ত পর্যায়ে গিয়ে কোন প্রকার রানই আদায় করতে পারেননি আভিষ্কা।
প্রথম ওভারেই মেইডেন তুলে নেন শরিফুল। তাতে করে চাপ বাড়ে লংকানদের উপর। সেটাকে কাজে লাগিয়েছেন তাসকিন আহমেদ। পরের ওভারে আভিষ্কাকে তুলে নেন তাসকিন। এভাবেই শরিফুল একটা প্রান্ত থেকে চাপকে ঘনিভূত করেছেন। লংকানদের স্বস্তির নিঃশ্বাসে বাঁধার সৃষ্টি করেছেন।
এরপরের ওভারেও একেবারে মিতব্যয়ী শরিফুল। খরচ তার মোটে ৩ রান। সেই ওভারের শুরুর তিন বলে তো ইনফর্ম কুশল মেন্ডিসকেও কোন প্রকার রান নিতে দেননি শরিফুল। সেই চাপকে অবশ্য এরপরে আর কাজে লাগাতে পারেননি বাকি বোলাররা। শরিফুলের প্রথম স্পেল শেষ হওয়া মাত্রই যেন রান উৎসবে নামে লংকান ব্যাটাররা।
তৃতীয় ওভার পরবর্তী সময় থেকে ৭৩ রান যুক্ত হয়েছে শ্রীলঙ্কার স্কোরবোর্ডে। এরপর এসে সেই ধারায় শরিফুলকে আক্রমণ করেছেন শ্রীলঙ্কার ব্যাটাররা। তাতে করে নিজের ব্যক্তিগত তৃতীয় ওভারে ১১ রান খসে শরিফুলের হাত থেকে। সে সময়টায় আক্রমণ ছাড়া দ্বিতীয় কোন উপায় ছিল না সফরকারীদের সামনে।
স্লগ ওভারের শুরুর দিকেও একই ধাঁচে ব্যাট চালাতে হতো শ্রীলঙ্কাকে। কিন্তু তখন আবার নিজের সক্ষমতার আর বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দিয়েছেন শরিফুল। নিজের ব্যক্তিগত চতুর্থ ওভারে এবার শরিফুল মাত্র ছয় রান দেন। ব্যাটারদের হাতখুলে খেলার সময়টায় একেবারেই তা করতে দেননি শরিফুল।
তখন শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ ১৬ ওভার শেষে ১৩১ রান। গতদিনের প্রেক্ষাপট অনুযায়ী সংগ্রহ পৌঁছে যাওয়ার কথা অন্তত ১৮০ কিংবা ১৯০ রান অবধি, এমনকি ২০০ হওয়াই ছিলনা কোন অবাস্তব অর্জন। কিন্তু শরিফুলের সেই একওভারই যেন অনেকটাই পিছিয়ে যায় শ্রীলঙ্কার পরিকল্পনা।
ঠিক সেকারণেই শরিফুল খানিকটা হলেও কৃতীত্ব পাওয়ার দাবিদার। তাছাড়া শেষের দিকে বাংলাদেশের বাকি বোলাররাও বেশ সংযত লাইন-লেন্থেই বোলিং করেছেন। যার কারণে শেষের চার ওভারে মোটে ৩৪ রান নিতে সক্ষম হয় লংকানরা।
আগের ম্যাচেই যেখানে ১৬-২০ ওভারের মধ্যে লংকান ব্যাটাররা ৬৫ রান নিয়েছিলেন। তাতে করেই ২০০ পেরিয়েছিল তাদের সংগ্রহ। সে পরিস্থিতি থেকে অন্তত উতরে যেতে পেরেছেন বাংলাদেশের বোলাররা। চার ওভারে ২০ রান দেওয়া শরিফুল যার নেতৃত্ব দিয়েছেন।