২০১৯ সালের বিশ্বকাপে সাকিব আল হাসানের অতিমানবীয় পারফরম্যান্স শুধু বাংলাদেশ নয়, নাড়িয়ে দিয়েছিল পুরো ক্রিকেট বিশ্বকেই। কিন্তু বিশ্বকাপের পর থেকে কি যেন হয়ে গেলো, বৈশ্বিক টুর্নামেন্টে পর পর দুই ম্যাচে দুইটি সেঞ্চুরি করা মানুষটা সেঞ্চুরি করা বেমালুম ভুলে গেলেন। ওয়ানডে, টেস্ট কিংবা ঘরোয়া ক্রিকেট কোথাও তিন অঙ্কের ইনিংস খেলার স্বাদ নিতে পারেননি তিনি।
তবে অপেক্ষার অবসান ঘটেছে এবার, চার বছর দশ মাস ষোল দিন পর তাঁর ব্যাটে শতকের দেখা মিলেছে। ইনিংসের হিসেবে ১৯৯ ইনিংস অপেক্ষা করতে হয়েছে তাঁকে। সময়ের হিসেবে সেটা ৫৮ মাস কিংবা ১৭৮২ দিন।
শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবের হয়ে ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগে বহুল আরাধ্য সেঞ্চুরি পেয়েছেন এই অলরাউন্ডার, গাজী গ্রুপ অব ক্রিকেটার্সের বিপক্ষে ৭৯ বলে ১০৭ রানের ঝকঝকে এক ইনিংস খেলেছেন তিনি।
২০১৯ বিশ্বকাপের কিছুদিন পরেই নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়েছিলেন এই বাঁ-হাতি। নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে মাঠে ফেরার পর অবশ্য দ্রুতই ছন্দ ফিরে পেয়েছিলেন তিনি। শতক হাঁকাতে না পারলেও রান পেয়েছেন ঠিকই, অনেকবারই আশি রানের গন্ডি পেরিয়েছিলেন। যদিও শেষপর্যন্ত কাঙ্খিত মাইলফলক স্পর্শ করতে পারেননি এতদিন।
তবে গাজী গ্রুপ অব ক্রিকেটার্সের বিপক্ষে সাকিব ছিলেন পুরোপুরি অন্যরকম। শুরু থেকেই আত্মবিশ্বাসী ছিলেন তিনি। হাফসেঞ্চুরি করতে অবশ্য ৪৩ বল লেগেছিল তাঁর, কিন্তু এরপর যেভাবে টি-টোয়েন্টি মেজাজে ব্যাট করেছিলেন, মনে হচ্ছিলো আসন্ন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
ফিফটি থেকে হান্ড্রেড – মাঝের পথটুকু পেরুতে স্রেফ ৩০ বল খেলেছিলেন এই তারকা। অর্থাৎ ৭৩ বলেই লিস্ট এ ক্যারিয়ারের দশম সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছিলেন তিনি। যদিও বিস্ময়ের ব্যাপার, একপ্রান্তে তিনি ঝড় তুললেও বাকি ব্যাটাররা কেবল তাকিয়ে ছিলেন। তাই তো একজন ব্যাটার ৭৩ বলে ১০০ করলেও দলীয় রান দুইশের ঘরে প্রবেশ করতে ৪০ ওভার প্রয়োজন হয়েছিল।
যাহোক, বিশ্বকাপের আগে পোস্টার বয়ের এমন পারফরম্যান্স নি:সন্দেহে বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য আশীর্বাদ। বিশ্বকাপেও তাঁকে ঘিরে বড় স্বপ্ন দেখছে সবাই, তিনি সেই স্বপ্ন পূরণ করবেন নিশ্চয়ই!