দামামা বেজেছে, দুয়ারে বিশ্বকাপ। দলগুলোর প্রস্তুতি শেষ ভাগে। হিমালয় কন্যা নেপালও জেগে উঠেছে। টি-টোয়েন্টি তাঁদের পছন্দের ফরম্যাট। সেই ফরম্যাটেই ক্যারিবিয়ানদের বুকে আগুন ধরিয়ে তবেই প্রস্তুতি সারল তাঁরা। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ‘এ’ দলের বিপক্ষে সিরিজটা আশার পালে যেমন হাওয়া যোগাচ্ছে নেপালের, তেমনি ভয় বাড়াচ্ছে বাংলাদেশের।
সম্প্রতি ওয়েস্ট ইন্ডিজ ‘এ’ দলের পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলে নেপাল। সেই সিরিজ অবশ্য ৩-২ এ জিতে যায় ক্যারিবিয়রা। তবে সেই ‘এ’ দলটাকে খাটো করার কোনো সুযোগ নেই। কারণ, ১৫ সদস্যের যে দল নিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ গিয়েছিল নেপালে, সেখানে জাতীয় দলের অভিজ্ঞতা একদমই নেই এমন ক্রিকেটার ছিলেন মোটে তিনজন।
রোস্টন চেজ, ফ্যাবিয়ান অ্যালেন, আন্দ্রে ফ্লেচার, ম্যাথু ফোর্ড, ওবেদ ম্যাককয়, কিমো পাওয়েল, ওশানে থমাস কিংবা হেইডেন ওয়ালশ – সবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রায় প্রতিষ্ঠিত। কম-বেশি সবারই ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট খেলার বেশ ভাল অভিজ্ঞতা আছে। এই দলটা আক্ষরিক অর্থেই বেশ চ্যালেঞ্জিং প্রতিপক্ষ।
নেপাল সেই অভিজ্ঞ দলের বিপক্ষে বুক চিতিয়ে লড়ে গেছে। দাপট দেখিয়ে দুইটি ম্যাচে জয় পেয়েছে। ওয়েস্ট ইন্ডিয়ানদের ছাপিয়ে সিরিজের সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার ওঠে নেপালের রোহিত কুমার পাউডেলের হাতে। তিনি মোট ২৬৫ রান করেন এই সিরিজে। আর সাথে নেন একটি উইকেট।
ক্যারিবিয়ান ‘এ’ দলের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচটা ছিল গুরুত্ববহ। কীর্তিপুরে নেপাল ক্যারিবিয়ানদের দেওয়া ২০৪ রান তাড়া করে জিতে দুই বল বাকি থাকতে। অধিনায়ক রোহিত পাউডেল সেঞ্চুরি করেন। ম্যাথু ফোর্ড কিংবা ওবেদ ম্যাককয়দের সামলাতে তাঁর তেমনটা বেগ পেতে হয়নি।
পরের তিনটা ম্যাচেই হারে নেপাল। যদিও, এর কোনোটাই অসহায় আত্মসমর্পণ নয়। চতুর্থ ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ২০৯ রানের জবাবে নেপাল করে ১৮১ রান। বাকি দু’টি ম্যাচে ১৫১ ও ১৫০ করে রান সংগ্রহ করে।
আর পঞ্চম ম্যাচে আবার জয়। এবার ক্যারিবিয়ানদের ১৭২ রানের জবাবে সাত বল বাকি থাকতে ছয় উইকেটের জয় পায় স্বাগতিকরা। সাগর ধাকাল, কুশাল মাল্লা, সোমপাল ক্যামি ও অনিল শাহদের দাপটে জয় এসেছে সহজেই।
বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বে বাংলাদেশের শেষ প্রতিপক্ষ এই নেপাল। ফলে, নেপালের বিপক্ষে এই জয়টাকে অবধারিত মেনে মাঠে নামলে বিপদ হতে পারে নাজমুল হোসেন শান্তর দলের। চাইলে চোখ রাঙিয়ে দিতে পারে নেপাল।
বিশ্বকাপের মঞ্চে এর আগে একবারই নেপালের বিপক্ষে খেলেছে বাংলাদেশ। ২০১৪ সালের সেই ম্যাচে বাংলাদেশ জিতেছিল আট উইকেটের বড় ব্যবধানে। সেটাই দু’দলের মধ্যকার একমাত্র আন্তর্জাতিক ম্যাচ।
তবে, সেটা ছিল বাংলাদেশের পরিচিত আঙিনা। এবারের প্রেক্ষাপট ভিন্ন। খেলতে হবে ক্যারিবিয়ান সাগরের পাড়ে। অপরিচিত কন্ডিশন, অপরিচিত প্রতিপক্ষ – যাদের দুর্বল ভাবার সুযোগ নেই। এমন প্রতিপক্ষের বিপক্ষে ভেঙে পড়বে না তো বাংলাদেশ? বাংলাদেশের এই ভীতির সুযোগটা রোহিত-অনিল কিংবা সাগররা নিয়ে দেখতে পারেন। আপাতত ডেডলাইন ১৭ জুন!