নিজের ক্যারিয়ারে এর আগে পড়ে এতটা দু:সময় কাটাননি লিটন দাস। সেই দু:সময়ে দাঁড়িয়ে সেই লিটন একাই চেষ্টা করলেন। সেটাও আবার এক ভাবে নয় – দু’ভাবে। প্রথমে, তিনি একাই চেষ্টা করলেন রান রেটের সাথে পাল্লা দিয়ে বাংলাদেশকে সেমিফাইনালে তোলার।
সেটা হল না, এরপর তিনি বাকিটা সময় লড়ে গেলেন বাংলাদেশের মান বাঁচাতে। বাংলাদেশকে সুপার এইটের একমাত্র জয় এনে দিতে তিনি চেষ্টার কমতি রাখেননি। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ইতিহাসের মাত্র দ্বিতীয় ওপেনার হিসেবে ‘ক্যারি দ্য ব্যাট’-এর কীর্তি গড়লেন বটে, তাতে শেষ রক্ষা হয়নি। বাংলাদেশে হেরে গিয়ে আফগানদের ভাসিয়েছে সেমিফাইনালে ওঠার আনন্দে।
১১৫ রানের জবাবে বাংলাদেশ করেছে ১০৫ রান। এর মধ্যে ৫৪ রানই লিটনের। মানে মোট রানের ৫০ ভাগের বেশি রান লিটন একাই করেছেন। ৪৯ বলে পাঁচটি চার ও একটি ছক্কায় তিনি অপরাজিত ছিলেন ইনিংসের শেষ অবধি। নন স্ট্রাইকিং এন্ডে থেকে দেখেন সতীর্থদের অসহায় আত্মসমর্পন আর মানহীন-দীনহীন ক্রিকেটের ছড়াছড়ি! ১৭ ইনিংসের মধ্যে নিজের প্রথম টি-টোয়েন্টি হাফ সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছেন। এই ইনিংসের পূর্ণতা আসতে পারত একটা জয় দিয়ে। কিন্তু, সব লড়াইয়ের শেষেই যে জয় লেখা থাকবে – সেই দিব্যি কে দিয়েছে!
লিটন জানতেন, এই ম্যাচে ব্যর্থ হলেই হয়তো তিনি দীর্ঘমেয়াদে বাদ পড়বেন জাতীয় দল থেকে। এমনও হতে পারত যে, এই ম্যাচে ব্যর্থ হলে আর কখনওই সাদা বলে ক্রিকেটে লিটনকে দলে নেবে না বাংলাদেশ। এই বাস্তবতা জেনেও তিনি ব্যাট চালিয়েছেন। একমাত্র তিনিই ম্যাচের একদম প্রথম থেকে শেষ অবধি খেলেছেন, নিখাঁদ জয়ের লক্ষ্য নিয়ে।
দলে লিটনের জায়গাটাই সবচেয়ে দুর্বল। তিনি যেকোনো সময় বাদ পড়দেত পারেন। উইকেটরক্ষকের দায়িত্বটা অন্য যোগ্য কাউকে দেওয়া গেলে, এই বিশ্বকাপেও তাঁর সবগুলো ম্যাচ খেলা হয় না। এমন অবস্থায় থেকেও যদি লিটন এমন ইনটেন্ট দেখাতে পারেন, তাহলে বাকিরা কেন পারবেন না?
বাকিরা বলতে, সাকিব আল হাসান, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ কিংবা নাজমুল হোসেন শান্তরা কেন পারবেন না? তাহলে ১৫-২০ বছরের এই অভিজ্ঞতার দাম কি! অফ ফর্মে থাকার পরও যে অধিনায়ক শান্তর ওপর অগাঁধ আস্থা বিসিবির, সেই শান্তও কেন পারবেন না? আরও অনেক অজানা অধ্যায়ের মত এই প্রশ্নের জবাবটাও অজানাই থাকবে বাংলাদেশ ক্রিকেটে!