‘তোরা সব জয়ধ্বনি কর!’ হামেস রদ্রিগেজ নিরবে সম্ভবত সে কথাই বললেন। তার স্বপক্ষে চিৎকার করে কথা বলছে তার পারফরমেন্স। হারিয়ে যাওয়ার নক্ষত্র যে আবারও করছে জ্বলজ্বল। দেখাচ্ছে পথ, জাগাচ্ছে আশার আলো। তরুণ হামেসের বয়স বেড়েছে, সাথে পারফরমেন্সের ধারও।
২০২৪ কোপা আমেরিকার অন্যতম সেরা খেলোয়াড় এখন এই হামেস রদ্রিগেজ। কিন্তু এই কোপা আমেরিকা শুরু হওয়ার আগে কেউ কি খোঁজ করেছিল তার। ক্যারিয়ার উর্ধ্বমুখি হতে গিয়ে সপাটে নিচে পড়েছিল। ইউরোপ ছেড়ে, মধ্যপ্রাচ্য। এরপর সেই ঘরের কাছে গিয়ে থিতু হলেন।
মনের ভেতর ছিল তার চরম জেদ। এতটাও তো তিনি ফেললা নন। যে সম্ভাবনার প্রদীপ তিনি জ্বেলেছিলেন ২০১৪ বিশ্বকাপে, সে প্রদীপের আলো তো মিছে নয়। সেই হামেস আর এই হামেসের মাঝে ফারাকটা দশ বছরের। সেবার তিনি গোল্ডেন বুট জিতেছিলেন। হয়েছিলেন সর্বোচ্চ গোলদাতা। এবার হয়ত কোপা আমেরিকার টুর্নামেন্ট সেরার পুরষ্কারটা বাগিয়ে নেবেন। বয়সটা এখন তার ৩২।
এই বয়সে প্রায় একক প্রচেষ্টায় দলকে তুলেছেন কোপা আমেরিকার ফাইনালে। প্রায় ২৩ বছর পর আবারও শিরোপা জয়ে দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছে রদ্রিগেজের দল। শেষবার যখন ফাইনালে উঠেছিল, সেবার তারা চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। এবারও হয়ত সেদিকেই থাকবে হামেসের নজর। তিনিই যে একমাত্র আস্থাভাজন।
এখন পর্যন্ত কোপা আমেরিকায় দূর্দান্ত হামেস। দলের হয়ে সাত গোলে রেখেছেন অবদান। নিজে করেছেন একটি গোল। সতীর্থদের দিয়ে করিয়েছেন আরও ৬টি। যোগ্য নেতা হিসেবে দলকে দিয়ে যাচ্ছেন নেতৃত্ব। নামের ভার কমেছে তার উপর থেকে। সেটাই বরং তাকে খানিকটা স্বস্তি দিয়েছে। তাইতো আসমানে পাখা মেলে উড়ে চলেছেন হামেস রদ্রিগেজ।
সেমিফাইনালে প্রতিপক্ষ হিসেবে পড়েছিল শক্তিশালী উরুগুয়ে। দশ জনের দল নিয়েও ১-০ গোলে জিতেছিল কলম্বিয়া। জয়সূচক একটিমাত্র গোলের কারিগরও তিনি। তার বাড়িয়ে দেওয়া ক্রস থেকেই বল জালে জড়িয়েছেলন জেফারসন লেরমা। এমন প্রতি মুহূর্তে দলের জন্যে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিচ্ছেন হামেস রদ্রিগেজ। শুনিয়ে যাচ্ছেন বেঁচে থাকার গান।
তাকে কেন্দ্র করেই নতুন স্বপ্ন বুনছে কলম্বিয়া। ঠিক যেমনটা ঘটেছিল ২০২১ পরবর্তী আর্জেন্টিনার সাথে। একজোট হয়ে লিওনেল মেসির জন্যে শিরোপা জিততে চেয়েছিল গোটা আর্জেন্টিনা। এরপর সম্ভাব্য সবকিছুই জিতেছে আলবিসেলেস্তারা। এবার পালা হামেস রদ্রিগেজের। কলম্বিয়া কি করবে তাকে সহয়তা?