অর্থই নাকি সকল সুখের মূল, অবশ্য কাড়ি কাড়ি অর্থ দিয়েও মিলবে না ওয়েস্ট ইন্ডিজের টেস্ট ক্রিকেটের সাম্প্রতিক সমস্যাগুলোর সমাধান; এমনটাই মনে করেন ক্যারিবিয়ান জীবন্ত কিংবদন্তী ব্রায়ান লারা।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ বর্তমানে ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিলের টেস্ট র্যাঙ্কিংয়ে আট নাম্বার স্থানে রয়েছে। ১৯৮০ সালের দিকে তাঁরা টেস্ট ক্রিকেটে আধিপত্য বিস্তার করেছিল। সেই সময় পর পর ১১ টি টেস্ট জয়ের স্বাদ পায়। ঠিক বিপরীত চিত্র ঘটেছে ২০২৩ সালে। সেবছর ক্যারিবিয়ানরা তাঁদের তিন টেস্টে পরাজয়ের স্বাদ পায়। তবে এবছরের শুরুর দিকে ১৯৯৭ সালের পর এই প্রথম তাঁরা অস্ট্রেলিয়াতে লাল বলের ক্রিকেটে জয় পায়।
সম্প্রতি এক পডকাস্টে ক্যারিবিয়ান টেস্ট ক্রিকেটের ভবিষ্যত নিয়ে লারা বলেন, ‘আপনি যদি ১০০ মিলিয়ন ডলার কিংবা ২০০ মিলিয়ন ডলার ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে রাখেন, তবে কি আমাদের খেলায় কি কোনো পরিবর্তন আসবে? আমি নিশ্চিত নই এব্যাপারে। আমরা আমাদের প্রতিভা কাজে লাগাচ্ছি না।’
নিকোলাস পুরান কিংবা শাই হোপের মত ক্রিকেটাররা সীমিত ওভারের খেলার দিকে ঝুকে পড়ছে বেশি। যার ফলে বিশ্বের ফ্রাঞ্চাইজি লীগগুলো চষে বেড়াচ্ছেন তাঁরা। অন্য খেলায়, যেমন অ্যাথলেটিকসেও প্রতিভা রয়েছে। যারা বিশ্বে ক্যারিবিয়ানদের প্রতিনিধিত্ব করছে।
এই বাঁহাতি কিংবদন্তী আরো বলেন, ‘নিশ্চিতভাবে, খেলাধূলার সংখ্যা কমানো এবং বিভিন্ন সুবিধাসমূহ হ্রাস করায় শিশুরা ক্রিকেট থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। আমি এখনও বিশ্বাস করি করপোরেট ওয়েস্ট ইন্ডিজকে আরো সক্রিয় হয়ে উঠতে হবে।’
স্পন্সর প্রসঙ্গে তিনি আরো বলেন, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান ক্রিকেট বোর্ড স্পন্সরদের আকর্ষণ করার মতো এখনো কিছুই করেনি। বিশেষ করে তৃণমূলে; কিন্তু একাডেমীগুলোতে সব ধরণের সুযোগ সুবিধা বিদ্যমান। আমি মনে করি এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।’
সদ্য সমাপ্ত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের অন্যতম আয়োজক ছিল ক্যারিবিয়ানরা। তবে দর্শকদের আকৃষ্ট করতে তাঁরা ব্যর্থ হয়েছে। এই বিষয়ে ব্রায়ান লারা বলেন, ‘আমি যখন লর্ডস স্টেডিয়ামে সকাল ৭ টা ৩০ মিনিটে প্রবেশ করতে যাই; সেখানে তখনও দর্শকরা অপেক্ষায় ছিল। আর আমি এতেই অভ্যস্ত ছিলাম। শৈশবে কুইন্স পার্কে ভোর ৫ টা ৩০ মিনিটে স্টেডিয়ামের গেইট খোলার জন্য অপেক্ষা করতাম।’
হতাশার সুরে তিনি বলেন, ‘এখন আর তেমনটা হয় না। আপনি ১১টায় ক্যারিবিয়ান স্টেডিয়ামগুলোতে প্রবেশ করলেও সিট ফাঁকা পাবেন। তবে আমরা দর্শক ফেরাতে চেষ্টা করেছি; যা ক্যারিবিয়ান ক্রিকেটে প্রাণ দিবে, যা বোঝাবে টেস্ট ক্রিকেট কি। সেখানে সত্যিকারের দর্শকের উপস্থিতি প্রয়োজন, যা আমরা অর্জন করতে ব্যর্থ হয়েছি।’