বাংলাদেশ ক্রিকেটে বড় কোন অর্জন নেই, বলার মত কোন শিরোপা নেই। তাই ক্রিকেটীয় আলোচনায় গর্ব করার জন্য পঞ্চপাণ্ডব নামক পৌরাণিক এক ব্যাপার তৈরি করেছে সমর্থকেরা। সেই থেকে মাশরাফি মর্তুজা, সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম, তামিম ইকবাল আর মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে বলা হয় দেশের ক্রিকেটের পান্ডব।
যদিও এই পান্ডবদের নিয়ে প্রচলিত ধারণা গুলোর অধিকাংশই স্রেফ মিথ আর ছেলেমানুষী। যেমন, অনেকেই পঞ্চপান্ডবকে ট্রফির সাথে তুলনা করেন; অথচ এটা শুধু হাস্যকর নয় বরং লজ্জারও। গোল্ডেন জেনারেশন প্রায় সব দলেরই কখনো না কখনো ছিল বা আছে – কিন্তু গোল্ডেন জেনারেশনকে কেউই অর্জন ভাবেনি।
আবার পঞ্চপান্ডবের বিকল্প নেই, তাঁদের ছাড়া বাংলাদেশ কেনিয়া হয়ে যাবে এমন সব মন্তব্যের কমতি নেই ক্রিকেটাঙ্গনে। অথচ বৈশ্বিক পর্যায়ে সাকিব ছাড়া বাকি চারজনের কেউই আহামরি তারকা নন। তাই তাঁদের বিকল্প খোঁজা অর্থহীন বটে। সত্যি বলতে, মেজর শিরোপা জিততে আরো ভাল ক্রিকেটারের প্রয়োজন।
ক্যারিয়ারের শুরুর দিনগুলো হিসেব করলেও পঞ্চপান্ডবের মাহাত্ম্য হ্রাস পাবে। সাকিব ছাড়া কেবল মাশরাফি অভিষেকের পর থেকে পারফরম করেছেন। বাকিরা প্রায় সবাই একটা পর্যায় পর্যন্ত শোচনীয় সময় কাটিয়েছেন।
সেই তুলনায় হালের তাওহীদ হৃদয়, নাজমুল শান্তর পরিসংখ্যান অনেক ভাল; উন্নতির গ্রাফ ধরে রাখতে পারলে অনায়াসে পান্ডবদের ছাড়িয়ে যেতে পারবেন তাঁরা। সবচেয়ে বড় পার্থক্য মানসিকতায়; পঞ্চপান্ডবদের চেয়ে এখনকার তরুণ ক্রিকেটারদের মানসিকতা অনেক বেশি ইতিবাচক। বিশেষ করে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ জেতা শরিফুল, তানজিমরা যেভাবে প্রতিপক্ষকে দুমড়ে মুচড়ে দিতে চান সেটা আগে কারো মধ্যে দেখা যায়নি।
সাকিব, তামিমদের ছোট করার কিছু নেই; দেশের ক্রিকেটকে এতদূর আনার পিছনে তাঁদের অবদান অবশ্যই আছে। কিন্তু দেশের সেরা প্রজন্ম হয়েও শিরোপা জিততে না পারা নিঃসন্দেহে ব্যর্থতা; তাই সমর্থকেরা যাই ভাবুক, তাঁরা অন্তত নিজেদের বিশেষ কিছু ভাবতে পারেন না।