এই দশকে বাংলাদেশ দলে এসেছে নানা পরিবর্তন। পান্ডবদের হাত থেকে জাতীয় দলের দায়িত্ব যেতে শুরু করেছে অপেক্ষাকৃত নতুনদের হাতে। ঠিক একই রকম ঘটনা ঘটছে ভারতের ক্ষেত্রেও। দীর্ঘদিনের সেনানীরা ছাড়ছেন নিজেদের জায়গা। তবে বাংলাদেশ ও ভারতের পারফরমেন্সের মধ্যে রয়েছে বিস্তর ফারাক।
চলমান দশকে বাংলাদেশের দায়িত্বভার যাদের কাঁধে উঠেছে তাদের মধ্যে অগ্রগামী লিটন দাস ও নাজমুল হোসেন শান্ত। গেল চার বছরেই এই দুইজন টি-টোয়েন্টি দলের নিয়মিত মুখ। তাদের পারফরমেন্সে কখনো সন্তোষজনক মনে হয়েছে কি-না- সে প্রশ্ন তোলা যায় চাইলেই।
কেননা ২০২০-২৪ এই সময়কালে লিটন দাস বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ রান করেছেন। ১৪৪৬ রান এসেছে ১২০ স্ট্রাইকরেটে। তবে এই রানটুকু করতে লিটনকে খেলতে হয়েছে ৬৪টি ম্যাচ। অন্যদিকে, এই দশকে এখন অবধি নাজমুল হোসেন শান্ত খেলেছেন ৪৪ ম্যাচ। তার মোট রান সর্বসাকুল্যে ৮৯২। তার স্ট্রাইক রেট প্রায় ১০৮। দৃষ্টিকটু!
এদের ছাড়াও নতুন দিনের সদস্য হিসেবে আফিফ হোসেনও রয়েছেন সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক তালিকায়। আফিফ খেলেছেন ৬১ ম্যাচ। ১০২৬ রান এসেছে আফিফের ব্যাট থেকে, স্ট্রাইক রেট ছিল প্রায় ১১৯। এই হচ্ছে বাংলাদেশের নতুন দিনের ক্রিকেটারদের সার্বিক পরিস্থিতি। তারা প্রত্যেকে ঠিক কতটা গড়পরতা, তা প্রমাণ করছেন যেন ভারতের যশ্বসী জয়সওয়াল।
রোহিত শর্মা টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জিতে অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন। তার পরিবর্তে ভারতে আগ্রসী শুরুটা কে এনে দেবে- তেমন একটা সংশয় জেগে উঠেছিল। কিন্তু সেই সংশয়কে ব্যাটের আঘাতে সীমানা ছাড়া করছেন জয়সওয়াল। ২০২৩ সালে অভিষেক হওয়া জয়সওয়াল এখন অবধি খেলেছেন মাত্র ২৩ ম্যাচ। এরই মধ্যে একটি সেঞ্চুরির দেখা তিনি পেয়ে গেছেন।
৭২৩ রান যুক্ত হয়ে গেছে তার নামের পাশে। নাজমুল হোসেন শান্তর থেকে ঠিক অর্ধেক ম্যাচ খেলে প্রায় কাছাকাছি দূরত্বে পৌঁছে গেছেন জয়সওয়াল। শুধু কি তাই। আগ্রাসী ব্যাটিংয়ের ধারকে পরিণত হয়েছেন তিনি। ১৬৪ এর বেশি স্ট্রাইক রেটে ব্যাট চালিয়ে যাচ্ছেন তরুণ এই ক্রিকেটার। ঠিক এখানেই যোজন যোজন পিছিয়ে যায় বাংলাদেশ।
বাংলাদেশের ভবিষ্যত কাণ্ডারি ভাবা হয় যাদের, তারা কখনোই বিশ্বমানের পারফরমেন্স উপহার দিতে পারেন না। অধারাবাহিকতাও তাদের প্রতিচ্ছবি হয়ে ওঠে। সেসব কারণে বাংলাদেশের ক্রিকেট থমকে যায় তিন জয়ের বিশ্বকাপ মিশনে।
স্বপ্ন বড় দেখলেও বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের মান বড্ড সাদামাটা। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে কেবল টিকে থাকার মত করেই টিকে আছে বাংলাদেশ, বড় অর্জন তাই এখনও অধরা। এই অধ্যায়ের শেষ সহসাই হবে না হয়ত। নিজেদের ইচ্ছে শক্তির অভাবটাই এমন ‘মিডল ক্লাস’ পারফরমেন্সের অন্যতম কারণ।