দিনের শেষ দিকে পরিকল্পনা করেই লেগ স্লিপ রেখেছিলেন সাকিব আল হাসান; সেই ফাঁদে পা দিয়েই ফেলেছিলেন মোহাম্মদ আলী। কিন্তু হুট করে আসা ক্যাচ লুফে নিতে পারেননি ফিল্ডার মুমিনুল হক। একই ওভারের শুরুর বলে সাকিব পরাস্ত করেছিলেন আঘা সালমানকে, কিন্তু এলবিডব্লুর জোরালো আবেদনে সাড়া দেননি আম্পায়ার।
বিশ্বসেরা অলরাউন্ডারের পুরো দিনটাই এভাবে কেটেছে, যখনই বল করতে এসেছেন তখনই মনে হচ্ছিলো কিছু একটা হবেই। প্রতিটা ব্যাটারের জন্য আলাদা করে পরিকল্পনা করেছেন, ব্যাট-বলের পাশাপাশি খেলেছেন মাইন্ড রিডের খেলাও।
ফিল্ডিংয়েও তিনি ছিলেন প্রচন্ড প্রাণবন্ত, খুররাম শাহজাদের অবিশ্বাস্য ক্যাচটা অনেকদিন চোখে ভাসবে দর্শকদের। বাম দিকে বিদ্যুৎ গতিতে আসা বলটা কি সুন্দরভাবেই তাঁর তালুতে বন্দী হল। শেষদিকে বাউন্ডরি লাইনে দাঁড়িয়ে সালমান আঘার ক্যাচও নিয়েছেন। এছাড়া রান বাঁচানোর ক্ষেত্রে তাঁর প্রচেষ্টা ছিল দেখার মতন।
এক কথায় বলতে গেলে, এদিন মাঠে এই তারকা ছিলেন অনেক বেশি সিরিয়াস। হেলাফেলার একটুখানি চিহ্নও ছিল না তাঁর মাঝে, স্কোরবোর্ড সেটা হয়তো ভাল করে বোঝাতে পারবে না। যদিও বাবর আজমের উইকেট পেয়েছেন, সেই উইকেটের তাৎপর্য আলাদা করে বলার অপেক্ষা রাখে না।
তবে ইকোনমির দিকে তাকালে স্পষ্ট হয়ে যাওয়ার কথা সবকিছু, ওভার প্রতি মোটে দুই রান খরচ করেছেন এই বাঁ-হাতি। প্রায় বিশ ওভার হাত ঘুরিয়ে এমন কিপ্টেমি করাটা তাঁর নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ের প্রমাণ বটে। প্রতিপক্ষকে স্বস্তিতে থাকার সুযোগটুকুই দেননি তিনি, বাধ্য করেছেন তটস্থ থাকতে – আর সেটার ফায়দা তুলেছেন মেহেদি মিরাজসহ বাকি বোলাররা।
সাকিব টেস্ট খেলতে চান না, সাকিবকে জোর করে খেলানো হয় – গত কয়েক বছরে সাকিব এভাবেই নিজেকে উপস্থাপন করেছিলেন। তবে ঘুরে দাঁড়িয়ে তিনি আবারও ফিরলেন বাংলাদেশের নিউক্লিয়াস হয়ে; পাকিস্তান সিরিজে তাঁকে দেখা যাচ্ছে নতুন রূপে। পুরনো ক্ষুধা বোধহয় জেগে উঠেছে তাঁর ভিতর, সেটারই প্রতিফলন দেখা হচ্ছে শরীরী ভাষায়।