ওয়ানডেতে বাংলাদেশের পারফরম্যান্স যে রকম আশা জাগানিয়া; টেস্টে ঠিক তাঁর উল্টো। বিশ বছরের বেশী সময় ধরে টেস্ট খেললেও বাংলাদেশের পারফরম্যান্স এখনো হতাশাজনক। মাঝখানে স্পিন ট্র্যাক বানিয়ে দেশের মাটিতে কিছু ম্যাচ জিতলেও সার্বিক অবস্থার পরিবর্তন হয়নি একটুও।
বিদেশের মাটিতে তো বটেই; বাংলাদেশ এখন টেস্টে দেশের মাটিতেও ধুঁকছে। দেশের মাটিতে আফগানিস্তানের বিপক্ষে বিধ্বস্ত হওয়ার পর বাংলাদেশ হোয়াটওয়াশ হয়েছে খর্ব শক্তির ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথেও। আর প্রতিটা হারের পর ক্রিকেটার, কোচিং স্টাফের সদস্য এমনকি বোর্ডের কর্মকর্তাদের মুখ থেকে শোনা যায় শুধু শেখার কথা এবং ভুল থেকে শিক্ষা নেওয়ার কথা।
গত বিশ বছর হলো দেশের মাটিতে হোক, বিদেশের মাটিতে হোক, ছোট দলের বিপক্ষে হোক আর বড় দলের বিপক্ষে হোক, ম্যাচ হারের পর ঐ দুটো কথা শুনেই অভ্যাস্ত সবাই। তবে এবার শেখার অধ্যায় থেকে বের হয়ে ম্যাচ জিততে চান বাংলাদেশের টেস্ট অধিনায়ক মমিনুল হক। মমিনুল হক মনে করেন ম্যাচ জিততে না পারলে শেখার কোন মূল্য নেই।
ক্রিকবাজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকার তিনি বলেন, ‘আমি আর শিখতে চাই না। আমরা ২০ ধরে শিখছি, এখন যদি আরও দশ বছর শিখতে চাই তাহলে আমাদের ক্যারিয়ার শেষ হয়ে যাবে। আপনি ম্যাচ জিততে না পারলে পুরো শেখার প্রক্রিয়াটাই মূল্যহীন। আমাদের দ্রুত শিখতে হবে এবং সেটা প্রয়োগ করতে হবে। এটাই এখন আমার কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় কারণ আমরা যদি র্যাংকিংয়ে উপরে উঠতে না পারি তবে এই অভিজ্ঞতা ও শেখার কোনো দাম নেই। আমাদের টেস্ট ক্রিকেটে শেখার চেয়ে আরো বেশি ম্যাচ জিততে হবে।’
সাকিব আল হাসান নিষিদ্ধ হওয়ার পর হঠাৎ করেই টেস্ট দলের দায়িত্ব পান মমিনুল হক। দায়িত্ব পেয়ে ভারত ও পাকিস্তান সফরে বাজে ভাবে হারার পর জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ঘরের মাঠে জিতলেও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে হোয়াটওয়াশ হয়েছে বাংলাদেশ। মমিনুল হক জানিয়েছেন দল হারলেও অধিনায়কত্ব উপভোগ করে ইতিবাচক দিক খুঁজে সেটা নিয়ে কাজ করতে চান তিনি।
বাংলদেশের অধিনায়ক বলেন, ‘যখন দল হারবে, অধিনায়ক হিসেবে আপনার ওপর চাপ থাকবেই। এটাই খেলার নিয়ম। যখন আপনি একটা দায়িত্ব পাবেন, কিন্তু সেটা ঠিকভাবে পালন করতে পারবেন না তখন চাপের মধ্যে থাকবেন। এটা সব মানুষের ক্ষেত্রেই হয়। আমাকে এই পরাজয় থেকে ইতিবাচক দিক খুঁজতে হবে এবং সেটা নিয়ে কাজ করতে হবে। আমি মনে করি চাপে পড়লে উপভোগ করা উচিত। কারণ ঐ সময় সবার নজর আপনার দিকে থাকে এবং নেতা হিসাবে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ থাকে। আমি এই মুহূর্তে আমার অধিনায়কত্ব উপভোগ করছি।
ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলতে এখন নিউজিল্যান্ড সফরে রয়েছে বাংলাদেশ। নিউজিল্যান্ড সিরিজ শেষে ২ এপ্রিল দেশে ফিরে ১২ এপ্রিল টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের দুটি টেস্ট খেলতে শ্রীলঙ্কার উদ্দেশ্যে দেশ ছাড়বে বাংলাদেশ। মমিনুল হক জানিয়েছেন সীমিত ওভারের ক্রিকেট খেলে এসে দীর্ঘ সংস্করণে মানিয়ে নেওয়া অনেক কঠিন হবে এবং আগের সিরিজ হারের চাপ থাকবে। মমিনুল হক মনে করেন সব কিছু মিলিয়ে চ্যালেঞ্জিং হবে শ্রীলঙ্কা সিরিজ।
তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি পুরো টেস্ট সিরিজটি চ্যালেঞ্জিং হবে কারণ আমরা এক বছর পর টেস্ট খেলতে নেমে ভালো করতে পারিনি, তাই সবাই বাধ্য হয়েই কিছুটা চাপ থাকবে। আমাদের টেস্ট দলের কয়েক জন সদস্য নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে এবং টি-টোয়েন্টি খেলার পরে টেস্ট দলে যোগ দিয়ে কয়েক দিন সময় পাবে। এটা অনেক চ্যালেঞ্জিং হবে কারণ তাঁরা দীর্ঘ সংস্করণে মানিয়ে নিতে এবং সামঞ্জস্য করতে খুব কম সময় পাবে।’