১.
১৯৯৬ বিশ্বকাপ ফাইনাল, অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে রান তাড়ায় শ্রীলঙ্কা! সনাথ জয়াসুরিয়া এবং রমেশ কালুভিতারানাকে হারিয়ে বেশ কিছুটা চাপে লঙ্কানরা। ক্রিজে তখন আসাঙ্কা গুরুসিংহে এবং অরবিন্দ ডি সিলভা, এরই মাঝে ড্রিংকস ব্রেক! শ্রীলঙ্কার দ্বাদশ ক্রিকেটার সেদিন রবীন্দ্র পুষ্পাকুমারা। তোয়ালে এবং পানির বোতল নিয়ে যখন ড্রেসিংরুম ছাড়ছেন পুস্পা, তখন টিমমেটদের একেক জন একেক রকম মেসেজ নিয়ে হাজির। সবাই যার যার মেসেজ মাঠে পৌঁছে দিতে উদগ্রীব!
অরবিন্দকে এটা বলবে, গুরুকে ওটা। আরেকজন বললো, গুরুসিংহে যেন শুধু স্পিন বলেই অ্যাটাক করে, পেস বলে নয়। এমন অসংখ্য মেসেজ মনে গেঁথে নিয়ে পুষ্পা ব্যলকনি পার হয়ে মাঠের উদ্দেশ্যে ততক্ষণে, এমন সময় কোচ ডেভ হোয়াটমোর তাঁকে থামালেন।
টানা একমিনিট ধরে তিনি পুষ্পাকে বোঝালেন ঠিক কি কি মেসেজ তিনি অরবিন্দ এবং গুরুকে পাঠাতে চান। এদিকে পুষ্পার অবস্থা ফাঁদে লেজ আটকে যাওয়া শিয়ালের মত! ইংলিশে নিতান্তই দূর্বল পুস্পা কিছুই বুঝলেন না ডেভের কথা। তবে মাথা ঝাঁকিয়ে বললেন, ‘ইয়েস, ইয়েস’!
মাঠে প্রবেশ করতে না করতেই সবকিছু গুলিয়ে গেল পুষ্পার! স্ট্রেস এবং প্রেশারে ভুলে গেলেন সবই! তাড়াতাড়ি করে তিনি শুধু এটুকু বলতে পারলেন, ‘ওয়েল প্লেইড ইয়া, কিপ গোয়িং!’
ড্রেসিং রুমে ফিরতেই সবাই ছেঁকে ধরলো পুষ্পাকে, ‘তুমি কি আমার মেসেজটা দিয়েছো?’
‘হ্যাঁ, হ্যাঁ, অবশ্যই!’
‘তুমি কি গুরুকে বলেছো কি করতে হবে?’
হ্যাঁ, হ্যাঁ, বলে দিয়েছি!’
সবাই খুশিমনে বুঝতে পারলো মেসেজ ঠিকমত পৌঁছে গেছে। কোচ ডেভ এগিয়ে এসে বেশ বড় একটি বাক্যে পুস্পাকে কিছু জিজ্ঞেস করলো। পুষ্পা সাথে সাথে উত্তর দিল, ‘ইয়েস কোচ, ইয়েস!’
কোচ ডেভ হোয়াটমোর অসহায়ের মত পুস্পার দিকে তাকিয়ে বুঝতে পারলেন, ড্রিংকস ব্রেকটা মাত্রই মাটি করে এসেছে রবিন্দ্র পুষ্পাকুমারা!
২.
১৯৮৬ সাল, চেন্নাইয়ের চিপকে (তখনকার মাদ্রাজ) সেই বিখ্যাত ‘দ্য টাইড টেস্টে’ ডিন জোন্সের অনবদ্য ডাবল সেঞ্চুরির ইনিংসটি বিভিন্ন কারণে মনে রেখেছেন অনেকেই। তার মধ্যে সবথেকে বড় কারন ছিল, ইনিংসটি খেলার পর তিনি ইউরিনেটেড হন, প্রচণ্ড রকমের বমি করেন, ডিহাইড্রেটেড হয়ে হসপিটালাইজডও হন!
বিষয়টিকে স্বাভাবিকভাবেই নিতে হয়, কারন প্রচণ্ড গরম এবং ৯০ ডিগ্রি হিউমিডিটির ভেতর এত লম্বা ইনিংস খেলাটাই ছিল বিষ্ময়কর! তবে, যেটা স্বাভাবিকভাবে নেয়া যায় না সেটা হচ্ছে, ওই টেস্টেই অস্ট্রেলিয়ান বোলার গ্রেগ ম্যাথিউজ দু-দুটো সোয়েটার পড়ে বল করেন! এক অথবা দুই স্পেলের জন্য নয়, পুরো টেস্ট ম্যাচেই এই ফাস্ট বোলার দুটো সোয়েটার পড়ে বল করে গেছেন। আরও আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে, শুধু বল করার সময়েই দুটো সোয়েটার পড়েছিলেন তিনি, অথচ ফিল্ডিং করার সময় একটা!
৩.
২০১৫ সালের ছয় মার্চ, ভারত বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজের ভেতরকার ম্যাচে ব্যবহার করা হয় এলইডি স্ট্যাম্প। তবে, মিডল স্ট্যাম্পটি ছিল স্বাভাবিক, যাতে করে ম্যাচ শেষে মহেন্দ্র সিং ধোনি স্ট্যাম্পটি স্যুভেনির হিসেবে নিয়ে যেতে পারেন।
৪.
বিগত শতাব্দীর সত্তরের দশকে নিউজিল্যান্ডের হোম আম্পায়াররা কুখ্যাত ছিল তাঁদের পক্ষপাতিত্বের জন্য। নিউজিল্যান্ড সফরে যাওয়া প্রতিটি দলের অভিযোগের তীর ছিল আম্পায়ারদের দিকে। ১৯৭৬ সালে পালা ছিল ভারতের, কারণ সেবছরই তারা নিউজিল্যান্ড সফরে যায়।
একে তো স্পিন নির্ভর দল, তাঁর উপরে পক্ষপাতমূলক আম্পায়ারিং! ভারতীয় দলের অবস্থা তখন টালমাটাল, এলবিডব্লিউ আবেদন গুলো নাকচ হতে থাকে একেরপর এক, ব্যাট প্যাড ক্যাচগুলোকেও নট আউট দেয়া হয়, বোলারদের তখন মাথার চুল ছেঁড়ার দশা!
এমন অবস্থায়ই নিউজিল্যান্ড ইনিংসের শেষ ব্যাটসম্যানকে ক্লিন বোল্ড করে উদ্ভটভাবে আবেদন করতে থাকেন বোলার বি এস চন্দ্রশেখর! চন্দ্রশেখরের এমন অদ্ভুত কাণ্ডে ভ্যাবাচেকা খেয়ে যান আম্পায়ার!
তিনি চন্দ্রশেখরকে প্রশ্ন করেন, ‘হোয়াই অন আর্থ হি ইজ আপেলিং ফর, হোয়েন দ্য ব্যাটসম্যান ইজ ক্লিন বোল্ড?’
চন্দ্রশেখরের উত্তর ছিল, ‘আই নো হি ইজ বোল্ড, বাট ইজ হি আউট?’