কোটা পূরণের আগেই

ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল) এর খেলাগুলো হয় ব্যাটিংবান্ধব উইকেটে। এখানে বোলারদের জন্য ভালো করা একটু কষ্টকর। তবুও বোলাররা নিয়মিত ভালো পারফর্ম করে যান।

যেকোনো বোলারের জন্য স্বপ্ন থাকে ইনিংসে পাঁচ উইকেট নেওয়া। সেটা ক্রিকেটের যেকোনো সংস্করণ এবং টুর্নামেন্টে হতে পারে। আইপিএলে অনেক বোলারকে পাঁচ উইকেট শিকার করতে দেখা গেছে। আইপিএলে যেসব বোলার ম্যাচে তাঁদের বোলিং কোটার চার ওভারের  পুরোটা পূরণ না করে পাঁচ উইকেট শিকার করেছেন তাঁদেরকে নিয়ে এই আয়োজন।

  • অনিল কুম্বলে (রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরু)

আইপিএলে বোলিং কোটা শেষ না করে পাঁচ উইকেট শিকার করা রেকর্ড সর্বপ্রথম গড়েন অনিল কুম্বলে। তিনি এই রেকর্ড গড়েছেন ২০০৯ সালে আইপিএলের দ্বিতীয় ম্যাচে রাজস্থান রয়্যালসের বিপক্ষে। ১৩৪ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ইনিংসের প্রথম এবং তৃতীয় ওভারে প্রবীন কুমারের শিকার হন রাজস্থানের দুই ওপেনার। এরপর ইনিংসের সপ্তম ওভারে জেসি রাইডারের তুলে নেন রাজস্থানের দুই উইকেট এবং নবম ওভারে একটি রান আউট করেন। এর ফলে ২৮ রানে পাঁচ উইকেট হারিয়ে ফেলে রাজস্থান।

প্রথম নয় ওভারের মধ্যে এক ওভার বোলিং করেছিলেন অনিল কুম্বলে। কিন্তু এই ওভারে কোনো উইকেট পাননি তিনি। এই ওভারের পর নিজের করা পরবর্তী ১৩ বলে রাজস্থানের পাঁচ উইকেট তুলে নেন।

ম্যাচ শেষে তাঁর বোলিং ফিগার ছিলো ৩.১ ওভারে ৫ রানে ৫ উইকেট।

  • লাসিথ মালিঙ্গা (মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স)

আইপিএলের ইতিহাসে দ্বিতীয় ক্রিকেটার হিসেবে লাসিথ মালিঙ্গা নিজের বোলিংয়ে ওভারের কোটা পূরণ না করে পাঁচ উইকেট শিকার করেছেন। তিনি এই কীর্তি গড়েন ২০১১ সালে দিল্লি ডেয়ারডেভিলসের বিপক্ষে। তাঁর এই দূর্দান্ত বোলিংয়ের উপর ভিত্তি করে দিল্লির বিপক্ষে সহজ জয় পায় মুম্বাই।

লাসিথ মালিঙ্গা দিল্লির ব্যাটিং লাইন আপে ধস নামান ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই। তিন বলের ব্যবধানে প্যাভিলিয়নে ফেরত পাঠান ডেভিড ওয়ার্নার এবং উন্মুক্ত চাঁদকে। এরপরে একে একে শিকার করেন ভেনুগোপাল রাও, মরনে মরকেল এবং অশোক দিন্দাকে। মালিঙ্গার বিধ্বংসী বোলিংয়ের কারণে মাত্র ৯৫ রানে গুটিয়ে যায় দিল্লির ইনিংস।

এই ম্যাচে ৩.১ ওভার বল করে ১৩ রানে ৫ উইকেট শিকার করেন তিনি।

  • ইশান্ত শর্মা (ডেকান চার্জার্স)

ইশান্ত শর্মা তৃতীয় বোলার হিসেবে এই রেকর্ড গড়েন ২০১১ আইপিএলের ৩২ তম ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিলো কোচি টাস্কার্স কেরালা (কেটিকে) এবং ডেকান চার্জার্স।

এই ম্যাচে প্রথমে ব্যাট করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ডেকান চার্জার্স করে ১২৯ রান। ১৩০ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে প্রথম ওভারের চতুর্থ বলে ফিরে যান ওপেনার ব্রেন্ডন ম্যাককালাম।

এরপর কেটিকের ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে বোলিংয়ে আসেন ইশান্ত শর্মা। তিনি এই ওভারে তুলেন নেন তিন উইকেট। প্যাভিলিয়নে ফেরান পার্থিব প্যাটেল, রাইফি গোমেজ এবং ব্রাড হজকে। এরপরে আবারো ইনিংসে চতুর্থ ওভারে বোলিংয়ে আসেন ইশান্ত শর্মা। এই ওভারে তুলে নেন আরো দুই উইকেট। দুই ওভারেই পাঁচ উইকেট তুলে নেন তিনি এবং ম্যাচ শেষে তাঁর বোলিং ফিগার ছিলো তিন ওভারে ১২ রান দিয়ে ৫ উইকেট।

  • আলজারি জোসেফ (মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স)

২০১৯ আইপিএলে আলজারি জোসেফ এই রেকর্ড গড়েন সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদের বিপক্ষে। এই রেকর্ডের পাশাপাশি আরেকটি রেকর্ড গড়েন তিনি, আর সেটা হলো আইপিএল ইতিহাসের সেরা বোলিংয়ের রেকর্ড। এই ম্যাচে তিনি সোহেল তানভিরের করা ১৪ রানে ৬ উইকেট নেওয়া কীর্তি ভেঙে ১২ রানে ৬ উইকেট নেওয়ার কীর্তি গড়েন তিনি।

এই ম্যাচে পঞ্চম ওভারে বোলিংয়ে আসেন। বোলিংয়ে এসে প্রথম ওভারে মেইডেন দিয়ে আউট করেন ডেভিড ওয়ার্নারকে। এরপর আবার বোলিংয়ে আসেন সপ্তম ওভারে, এই ওভারে প্যাভিলিয়নে ফেরত পাঠান বিজয় শঙ্করকে। পরবর্তীতে ১৬ এবং ১৮ তম ওভারে বোলিং করে আউট করেন দীপক হুডা, রশিদ খান, ভুবনেশ্বর কুমার এবং সিদ্ধার্থ কাউলকে।

ম্যাচ শেষে তাঁর বোলিং ফিগার ছিলো ৩.৪ ওভারে ১২ রানে ৬ উইকেট।

  • আন্দ্রে রাসেল (কলকাতা নাইট রাইডার্স)

বোলিংয়ে ওভার কোটা শেষ না করে পাঁচ উইকেট শিকার করা সর্বশেষ বোলার হলেন আন্দ্রে রাসেল। তিনি এই রেকর্ড গড়েন চলতি মৌসুমে। মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের বিপক্ষে এই রেকর্ড গড়েন তিনি।

ইনিংসের ১৮ এবং ২০ তম ওভারে বোলিং করেন আন্দ্রে রাসেল। তিনি ১৮ তম ওভারে শিকার করেন দুই উইকেট এবং শেষ ওভারে এসে প্যাভিলিয়নে ফেরান ক্রুনাল পান্ডিয়া, জাসপ্রতি বুমরাহ এবং রাহুল চাহারকে।

ম্যাচ শেষে রাসেলের বোলিং ফিগার ছিলো ২ ওভারে ১৫ রান দিয়ে পাঁচ উইকেট।

লেখক পরিচিতি

খেলাকে ভালোবেসে কি-বোর্ডেই ঝড় তুলি!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link