ভারতে করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব বেশ উদ্বেগজনক। প্রতিদিনই নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হচ্ছে তিন লাখেরও বেশি মানুষ। আর দেশের এমন পরিস্থিতির ভিতরই চলছে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়াম লিগের (আইপিএল) ১৪তম আসর। এমন অবস্থায় আইপিএল ছেড়ে দেশে চলে গেছেন অ্যাডাম জাস্পা, কেন রিচার্ডসন ও অ্যান্ডু টাই।
আইপিএল ছেড়ে যাওয়ার তিন দিন পর মুখ খুলেছেন অ্যাডাম জাম্পা। রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরুর হয়ে খেলা জাম্পা জানিয়েছেন দূর্বল জৈব সুরক্ষা বায়ো বাবলের কারণে আইপিএল ছাড়ার সিদ্বান্ত নিয়ে ছিলেন তিনি। অস্ট্রেলিয়ান এই স্পিনার মনে করেন গত বারের মতো সংযুক্ত আরব আমিরাতে আইপিএল আয়োজন করা হলে ভালো হতো।
জাম্পা বলেন, ‘আমরা এখানে যে জৈব সুরক্ষা বায়ো বাবলে রয়েছি। আমার মনে হয়েছে এটি সবচেয়ে দূর্বল। আমাদের এখানে সব সময় স্বাস্থ্যবিধি সম্পর্কে বলা হয়েছে এবং অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বন করা হয়েছে। আমি সব সময় মনে করেছি এটা ঝুঁকিপূর্ণ ছিল।’
ভারতে করোনা পরিস্থিতি খারাপ থাকার কারণে গত বছর আইপিএল অনুষ্ঠিত হয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাতে। ঐ সময় আইপিএল নিয়ে কোন ধরণের প্রশ্ন ওঠেনি। তাই জাস্পা মনে করেন এবারও ওখানে হলেই ভালো হতো। এই বছরের শেষের দিকে ভারতেই অনুষ্ঠিত হবে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। জাস্পা জানিয়েছেন ক্রিকেট বিশ্বে এটিও আলোচনার বিষয় হতে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘ছয় মাস আগে দুবাইয়ে যে আইপিএল অনুষ্টিত হয়েছিল তখন এরকম কখনোই মনে হয়নি। আমি অনুভব করেছি ওটা অত্যন্ত নিরাপদ ছিলো। ব্যক্তিগত ভাবে মনে করি ওটা আইপিএলের জন্য ভালো বিকল্প হতে পারে। এটা পরিস্কার এখানে প্রচুর রাজনৈতি বিষয় রয়েছে। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ বছরের শেষে এখানে হবে। ক্রিকেট বিশ্বে এটি সম্ভবত পরবর্তী আলোচনার বিষয় হতে চলছে। ছয় মাস একটি দীর্ঘ সময়।’
তবে আইপিএল ছাড়ার জন্য শুধু জৈব সুরক্ষা বায়ো বাবলকেই দায়ী করছেন না জাম্পা। এই স্পিনার জানিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার সাথে ভারতের বিমান চলাচল বন্ধ হওয়ার আগে আইপিএল ছাড়ার এটাই সঠিক সময় মনে করেছেন তিনি। এছাড়া দলে সুযোগ না পাওয়া ও প্রেরণা খুঁজে না পাওয়াটাও বড় কারণ ছিল।
এই স্পিনার বলেন, ‘অবশ্যই এখানে করোনা পরিস্থিতি বেশ ভয়াবহ। আমি দলের হয়ে খেলছিলাম না, আমি অনুশীলনেও যাচ্ছিলাম না। আমি কোন প্রেরণাই খুঁজে পাচ্ছিলাম না। জৈব সুরক্ষা বলয়ে ক্লান্ত ও বাসায় ফিরে আসতে আরো কয়েকটা কারণ ছিলো। ফ্লাইট বন্ধের কথা ছড়িয়ে পড়ে। আমি ভেবেছিলাম এটাই তাহলে ভালো সময়।’
দেড় কোটি রুপিতে জাম্পাকে কিনে নিয়েছিল রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরু। আইপিএলের মাঝপথে চলে যাওয়াতে পুরো টাকা পাবেন না তিনি। তবে আর্থিক বিষয়ের থেকে মানসিক স্বাস্থ্যকে প্রাধান্য দিয়ে এই স্পিনার বলেছেন যার পরিবারের সদস্য মৃত্যু পথের যাত্রী, তিনি ক্রিকেটকে পাত্তা দিতে পারেন না।
তিনি বলেন, ‘আমি ব্যক্তিগত ভাবে মনে করি প্রচুর লোক বেড়িয়ে এসে বলেছে এই খেলা থেকে কিছু লোক মুক্তি পেতে পারে। পরিবারের কেউ মৃত্যুশয্যায় থাকলে, ক্রিকেট নিয়ে ভাবার সুযোগ নেই। আমি টুর্নামেন্টের অর্ধেক রেখে যাওয়ার সময় মনে করেছি এটা আর্থিক ত্যাগ। তবে আমার দিক থেকে আমি আমার মানসিক স্বাস্থ্যকে প্রাধান্য দিতে চেয়েছিলাম।’