চেন্নাই টেস্টে বাংলাদেশকে অলআউট করতে ভারতের লেগেছে মাত্র ৪৭.১ ওভার। এর মধ্যে সবচেয়ে কম বল করেছেন আকাশ দীপ, স্রেফ পাঁচ ওভার। কিন্তু এতটুকুই যথেষ্ট ছিল তাঁর জন্য, নিজেকে চেনানোর জন্য। বাংলাদেশের টপ অর্ডারকে গুঁড়িয়ে দেয়ার কাজটা কি দারুণভাবেই না করলেন তিনি।
এই পেসারের সংক্ষিপ্ত টেস্ট ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বড় বিজ্ঞাপন ‘ইমেডিয়েট ইম্প্যাক্ট’। টাইগারদের বিপক্ষে সেটা তো দেখাই গিয়েছে, এর আগে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচ খেলতে নেমেই বুঝিয়ে দিয়েছিলেন নিজের সামর্থ্য। জাসপ্রিত বুমরাহর পরিবর্তে মাঠে নেমে সেবার জ্যাক ক্রলি, অলি পোপ আর বেন ডাকেটের উইকেট শিকার করেছিলেন তিনি।
তারপরও এই ডান-হাতি বাংলাদেশের বিপক্ষে সিরিজে জায়গা পাবেন সেটার নিশ্চয়তা ছিল না। তবে দুলীপ ট্রফির প্রথম রাউন্ডে নয় উইকেট তুলে নিয়ে নির্বাচকদের বাধ্য করেন তাঁকে দলে নিতে – পরের গল্প তো সবারই জানা, পরপর দুই বলে দুই ইনসুইঙ্গারে বোল্ড করেছেন জাকির হাসান আর মুমিনুল হককে।
আকাশের বোলিং স্টাইল একেবারে সাদামাটা, খুব বেশি বৈচিত্র্যময় নয়। আপরাইট সিমের সুবাদে মুভমেন্ট আদায় করতে পারাটাই তাঁর সেরা অস্ত্র; অনেকটা মোহাম্মদ শামির সঙ্গে মেলানো যায় তাঁকে। দু’জনেই স্কিডি ডেলিভারিতে পারদর্শী। ফলে স্পিডগানের গতির তুলনায় ব্যাটাররা আরও বেশি গতি অনুভব করেন। ফলে অল্পবিস্তর মুভমেন্টই ব্যাটারকে নাস্তানাবুদ করতে যথেষ্ট হয়।
কিংবদন্তি পেসার জহির খান আকাশকে তুলনা করেছেন মোহাম্মদ সিরাজের সঙ্গে। সিরাজ যেভাবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পা রাখার পর থেকে দ্রুত গতিতে শিখেছেন বিভিন্ন খুঁটিনাটি, তিনিও সেভাবেই এগুচ্ছেন। এছাড়া তাঁকে থার্ড স্ট্যাম্প করিডরে বোলিং করতে দেখা যায় অধিকাংশ সময়; সেজন্য ব্যাটাররা বাধ্য হন শট খেলতে, সেই সাথে উইকেটের সম্ভাবনাও বাড়ে।
সিরাজের অভিষেকের পর এখন পর্যন্ত আরও পাঁচজন পেসার সুযোগ পেয়েছেন জাতীয় দলে। আকাশ দীপ ছাড়া কেবল মুকেশ কুমার এবং নবদীপ সাইনি একাধিক ম্যাচ খেলেছেন। তবে দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনায় ফিট হয়েছেন একমাত্র আকাশ-ই। আগামী দিনে হয়তো তাঁকে ছোট স্পেলে বল করতে হবে, বড় স্পেলে করতে হবে, পুরনো বলে বল করতে হবে – সব রকম পরিস্থিতিতে ইম্প্যাক্ট রাখার জন্য তাই প্রস্তুতি প্রয়োজন তাঁর।