সেরা সংঘাত

করোনার ভয়াবহ প্রকোপে হঠাৎ করেই মাঝপথে স্থগিত হয়ে গেছে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের (আইপিএল) ১৪ তম আসর। কবে নাগাদ বাকি ম্যাচ খেলা হবে তাও অনিশ্চিত।

খেলা শুরু হওয়ার আগে বরং আমরা আসরটা একটু ফিরে দেখি। যতটুকু খেলা মাঠে গড়িয়েছে তাতেই বিস্ময়কর সব ম্যাচ দেখার সৌভাগ্য হয়েছে। তাঁরই মধ্যে নির্বাচন করা হয়েছে সেরা পাঁচটি ম্যাচ।

  • পাঞ্জাব কিংস বনাম রাজস্থান রয়্যালস

২০২১ আইপিএল আসরের ৪ নম্বর ম্যাচে মুখোমুখি হয় পাঞ্জাব কিংস এবং রাজস্থান রয়্যালস। মুম্বাইয়ের ওয়াঙখেড়ে স্টেডিয়ামে শেষ বলে নির্ধারণ হয় ম্যাচের ফলাফল। রাজস্থান রয়্যালস টসে জিতে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয়। লোকেশ রাহুলের ৫০ বলে ৯১ রান, গেইলের ৬৪ ও দীপক হুডার ৪০ রানে ভর করে ২০ ওভারে ২২১ রানের বিশাল সংগ্রহ দাঁড় করায়।

জবাবে ব্যাট করতে নেমে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে রাজস্থান। ক্যাচ মিসে জীবনে পেয়ে দূর্দান্ত এক সেঞ্চুরি করে দলকে জয়ের আশা দেখান সাঞ্জু স্যামসন। দলের ব্যাটিং বিপর্যয়ে একা হাতে লড়াই করেন তিনি। শেষ বলে রাজস্থানের প্রয়োজন ছিলো ৫ রান! দূর্দান্ত এক ডেলিভারিতে এক্সট্রা কভারে ক্যাচ দিয়ে আউট হন সাঞ্জু স্যামসন। অধিনায়ক হিসেবে অভিষেক ম্যাচেই ৬৩ বলে ১১৯ রানের দূর্দান্ত এক ইনিংস খেলেন তিনি। পাঞ্জাব ৪ রানে ম্যাচ জিতলেও স্যামসন সেদিন ক্রিকেট ভক্তদের হৃদয় জিতে নেন!

  • কলকাতা নাইট রাইডার্স বনাম চেন্নাই সুপার কিংস

এবারের আসরের ১৫তম ম্যাচে মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়েতে মুখোমুখি হয় কলকাতা নাইট রাইডার্স ও চেন্নাই সুপার কিংস। প্রথমে ব্যাট করে ফাফ ডু প্লেসিসের ৬০ বলে ৯৫ আর গাইকোড, মঈন আলী, জাদেজাদের ব্যাটিং নৈপুণ্যে ২২০ রান সংগ্রহ করে চেন্নাই।

জবাবে ব্যাট করতে নেমে মাত্র ৩১ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে চরম ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে কলকাতা। এরপরই ওয়াংখেড়েতে শুরু হয় অফ ফর্মে থাকা রাসেল ঝড়! ৬ ছক্কায় ২২ বলে ৫৪ রানের ঝড়ে আবারো আশা জাগে কলকাতার। তবে রাসেল ৫৪ ও কার্তিক ২৪ বলে ৪০ রানে আউট হলে শেষ হয়ে যায় কলকাতার জয়ের আশা। এরপর শুরু হয় কামিন্স ম্যাজিক!

৩৪ বলে ৬৪ রানের তান্ডবে জয়ের আশা দেখতে থাকে কলকাতা। শেষ ওভারে প্রয়োজন ছিলো ২০ রান তবে শেষ উইকেটে প্রাসিদ কৃষ্ণা রান আউট হয়ে ফিরলে ১৮ রানে ম্যাচ হারে কলকাতা।

  • দিল্লী ক্যাপিটালস বনাম রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরু

আসরে ২১ তম ম্যাচে শ্বারুদ্ধকর শেষ বলে ভাগ্য নির্ধারণ হয় ম্যাচের৷ টসে হেরে প্রথমে ব্যাটিংয়ে নামে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরু। এবি ডি ভিলিয়ার্সের ৫ ছক্কায় ৪২ বলে ৭৫ রানের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে নির্ধারিত ২০ ওভারে ১৭১ রান সংগ্রহ করে ব্যাঙ্গালুরু।

জবাবে লক্ষ্যমাত্রা তাড়া করতে নেমে শুরুটা মোটেও ভালো হয়নি দিল্লির। তবে রিশভ পান্ত ও মার্কাস স্টোয়েনিসের দূর্দান্ত জুটির পর শিমরন হেটমায়ারের ব্যাটিং ঝড়ে জয়ের আশায় থাকে দিল্লি। হেটমায়ারের ২৫ বলে ৫৩ রানের ঝড়ো ইনিংসে শেষ ওভারে দিল্লীর প্রয়োজন ছিলো ১৩ রান! শেষ ওভারে ১১ রান দিয়ে সেদিন হিরো বনে যান পেসার মোহাম্মদ সিরাজ। শেষ বলে প্রয়োজন ছিলো ৬ রান! পান্ত শেষ বলে ৪ মারলে দিল্লি শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচ হারে মাত্র ১ রানে।

  • দিল্লি ক্যাপিটালস বনাম সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদ

আইপিএলের এবারের আসরের ২০ তম ম্যাচ – দিল্লিতে মুখোমুখি দিল্লি ক্যাপিটালস এবং সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদ। শেষ ওভারের নাটকে এবারের আসরের প্রথম সুপার ওভারে মুখোমুখি হয় দুই দল। প্রথমে ব্যাট করে ১৫৯ রান করে দিল্লি ক্যাপিটালস। জবাবে লক্ষ্যমাত্রা তাড়া করতে নেমে শেষ ৩ বলে হায়দ্রাবাদের দরকার ছিলো ৪ রান। কেন উইলিয়ামসনের অসাধারণ ব্যাটিংয়ের পরেও রাবাদার দুর্দান্ত বোলিংয়ে ম্যাচের ভাগ্য যায় সুপার ওভারে।

দিল্লির পক্ষে সুপার ওভারে বল করে অক্ষর প্যাটেল দেন মাত্র ৭ রান। জবাবে দিল্লির হয়ে ব্যাটিংয়ে নামেন রিশভ পান্ত ও শিখর ধাওয়ান, বোলিংয়ে রশিদ খান। দু’জনে মিলে সুপার ওভারের শেষ বলে জয় এনে দেয় দিল্লিকে।

  • চেন্নাই সুপার কিংস বনাম মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স

এবারের আসরের ২৭ তম ম্যাচ – সম্ভবত আসরের সবচেয়ে সেরা ম্যাচ এটি। দিল্লিতে মুখোমুখি হয় চেন্নাই সুপার কিংস এবং মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স। ব্যাটিং সহায়ক উইকেটে টসে জিতে ব্যাটিংয়ে নামে চেন্নাই। আম্বাতি রায়ডুর তান্ডবে ২১৮ রানের বিশাল সংগ্রহ করে চেন্নাই সুপার কিংস।

জবাবে লক্ষ্যমাত্রা তাড়া করতে নেমে প্রথম ১০ ওভারের মধ্যেই ৮১ রানে তিন উইকেট হারায় মুম্বাই। ব্যাটিং বিপর্যয়ে থাকা দলকে ৩৪ বলে ৮৭ রানের হার না মানা অপরাজিত ইনিংস খেলে জয় পাওয়ান কায়রন পোলার্ড!

ক্রুনাল এবং হার্দিক পান্ডিয়া ভাইদ্বয়ের ক্যামিও আর পোলার্ড তাণ্ডবে আইপিএল ইতিহাসের অন্যতম সেরা রান চেজ দেখে ক্রিকেটবিশ্ব। শেষ ওভারে দরকার ছিলো ১৬ রান! শেষ ৫ বলে ১৬! সেখান থেকে দলকে জয় এনে দিয়ে পোলার্ড প্রমান করেন তাকে কেনো সেরা ফিনিশারের একজন বলা হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link