সৌম্য সরকার, মারকাটারি স্টাইলিশ ওপেনার হিসেবে আগমন তাঁর। জ্বেলেছিলেন শত আশার প্রদীপ। দেশের ক্রিকেট সর্মথকদের মধ্যে বানিয়েছিলেন নতুন এক প্রত্যাশার ঘর। কিন্তু প্রদীপের আগুন পুড়িয়েছে সে কুড়ে ঘর। আন্তজার্তিক ক্রিকেটে ১০ বছর পেরিয়ে গেলেও তাই সৌম্য আজও থেকে গেছেন ‘প্রমিজিং ইয়াস্টার’ এর দলেই।
২০১৪ থেকে ২০২৪, বছর যায় বছর আসে। পরিবর্তন হয় কত কোচ, নিয়ম, দলের। কিন্তু একটা জিনিস যেন অপরিবর্তিতই রয়ে গেল। সৌম্যর অধারাবাহিক পারফরম্যান্সেও এত বছর টিকে থাকা। এক ম্যাচ ভালো খেললে পরের ম্যাচে হারিয়ে যান তিনি। তবে ক্রিকেট বোর্ডের ‘গুডবুক’-এ সর্বদা তিনি ধ্রুবক।
৬৪টি আন্তর্জাতিক ইনিংসে ৩৩.৫০ গড়ে ২০১২ রান, স্ট্রাইক রেট ৯৭.৪৮, পরিসংখ্যান দেখলে কিন্তু একদম খারাপ বলা যায় না। ৫.৯০ ইকোনমিতে ১৫ উইকেট শিকারও জানান দেয় পার্টটাইম বোলার হিসেবেও হাত ঘুরাতে পারেন তিনি মোটামুটি। তাহলে সমস্যাটা আসলে কোথায়?
এখানেই পরিসংখ্যানের ভেল্কি, শুভঙ্করের ফাঁকি। পরিসংখ্যান যা বলে না তা হচ্ছে তার ধারাবাহিকতার বড্ড অভাব। বেশ দূরে না তার সর্বশেষ ১০ টা ওয়ানডে ইনিংস দেখলেই ব্যাপারটা স্পষ্ট হয়ে যায়।
৭, ০, ৩২, ১, ০, ০, ১৬৯, ৪*, ৩, ৬৮। একটা সেঞ্চুরি আর এক হাফ-সেঞ্চুরি পাশে তিনটা ডাক। সাতটা একক সংখ্যার সংগ্রহ, যেন ওই গুলিস্তানের থেকে কেনা সস্তা চীনা পণ্যর মতই, টিকলে আজীবন না টিকলে দুই মিনিট।
তবুও, আরো একটি আন্তজার্তিক সিরিজের আগে দলে জায়গা পেলেন সৌম্য। প্রতিপক্ষ আফগানিস্তানে বিপক্ষে মোট পাঁচটি ওয়ানডে খেলেছেন। মোটে ৬২ রান এসেছে তার ব্যাট থেকে,গড় ১২.৪০, স্ট্রাইকরেট ৭৭.৫০। খেলা হবে আরব আমিরাতের শারজাহ স্টেডিয়ামে, যেখানে আগে কখনওই খেলেননি সৌম্য।
সর্বশেষ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও পারফরম্যান্স ছিল ‘বিলো এভারেজ’। সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স, ওয়ানডে কিংবা প্রতিপক্ষের বিপক্ষে পরিসংখ্যান, অথবা আমিরাতের কন্ডিশনে পূর্বে খেলার অভিজ্ঞতা কোনটাই নেই সৌম্যর অনুকূলে।
তবুও তিনি কিভাবে বারবার ফিরে আসেন জাতীয় দলে? এ যে এক ভীষণ বড় রহস্য! সৌম্য বোধহয় জীবনানন্দ দাস, তাই বার বার ফিরে আসেন শঙ্খচিল বা নতুন কোন বেশে দেশের ক্রিকেট অঙ্গনে। সরকার যায়, সরকার আসে ধ্রুবক অটুট দাঁড়িয়ে রয় শুধুই সৌম্য সরকার!