হোয়াট অ্যা ম্যাচ! হোয়াট অ্যা উইন! লেগানেসের সবচেয়ে পাঁড় ভক্তও বোধহয় কোনদিন কোন দুঃস্বপ্নে বার্সেলোনাকে হারানোর কথা ভাবেনি। অথচ সেটাই বাস্তব হলো, রেলিগেশন জোনে থাকা লেগানেস হারিয়ে দিলো টেবিল টপার বার্সেলোনাকে। সেটাও আবার বার্সেলোনার মাঠেই, এ যেন ঘরে ঢুকে অপমান!
ম্যাচের শুরুতেই বার্সা শিবিরে আঘাত হেনেছিল লেগানেস, তিন মিনিটের সময় কর্নার পায় তাঁরা। আর সেখান থেকে একেবারে মাপা ক্রসে সার্জিও গঞ্জালেজকে খুঁজে নেন অস্কার রদ্রিগেজ। বাকি কাজ সহজই ছিল গঞ্জালেজের জন্য, দুর্দান্ত এক হেডারে ইনাকি পেনাকে ফাঁকি দেন তিনি।
দুই ম্যাচের জন্য নিষিদ্ধ থাকায় ডাগআউটে এদিন ছিলেন না হ্যান্সি ফ্লিক। সেজন্যই বোধহয় গোছালো বার্সেলোনা হয়ে যায় অগোছালো, একটা গোল পুরোপুরি এলোমেলো করে দেয় তাঁদের। বল দখলে রেখেও সেই অর্থে আক্রমণাত্মক হয়ে উঠতে পারেনি তাঁরা, আরো স্পষ্ট করে বললে তাঁদের সেই সুযোগটাই দেয়নি সফরকারীরা।
দ্বিতীয়ার্ধেও একই দৃশ্যের পুনরাবৃত্তি, কোনভাবেই প্রতিপক্ষের রক্ষণে ফাটল ধরাতে পারেনি কাতালান জায়ান্টরা। ০ ম্যাচের নায়ক ফেরান তোরেস কিংবা গাভি, ফারমিন লোপেজ – বদলি হিসেবে নেমেছেন ঠিকই কিন্তু ম্যাচের পট পরিবর্তন করতে পারেননি।
শেষপর্যন্ত ১-০ গোলের জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ে লেগানেস। এই জয়ের পিছনে অবশ্য মার্কো দিমিত্রভিচের কৃতিত্ব সবচেয়ে বেশি, একের পর এক অতিমানবীয় সেভ দিয়ে তিনিই লিড ধরে রেখেছিলেন পুরোটা নব্বই মিনিট জুড়ে। লিগের সেরা ফরোয়ার্ডরা তাঁর সামনে অসহায় হয়ে গিয়েছিল, তাঁর সামনে কোন উত্তরই দিতে পারেনি রাফিনহা, লেওয়ানডস্কিরা।
ম্যাচের পরিসংখ্যান ঘাঁটলেই বোঝা যায় ব্লাউগানা জার্সিধারীদের পারফরম্যান্স। ৮০ শতাংশের বেশি বল দখলে রেখেছিল তাঁরা। এসময় গোলমুখে শট নিয়েছিল ২০টা, অথচ প্রতিপক্ষের ক্ষেত্রে সংখ্যাটা মাত্র ছয়। অন্যদিকে বার্সার পাসের সংখ্যা প্রায় ৭০০; যেখানে লেগানেস সবমিলিয়ে খেলেছে ১১৪টা পাস, সেটাও আবার ৫৭ভাগ অ্যাকুরেসি নিয়ে।
এতটা আধিপত্য দেখিয়েও জিততে পারলো না বার্সেলোনা, হানিমুন পিরিয়ড বোধহয় শেষ হয়েই গেলো। মৌসুমের শুরুর দিকে টানা ম্যাচ জিততে থাকা দলটা এখন পয়েন্ট খোয়ানোকেই অভ্যাস বানিয়েছে। সবশেষ ছয়টি লিগ ম্যাচে স্রেফ একবারই পূর্ণ তিন পয়েন্ট পেয়েছে তাঁরা – এখন দেখার বিষয়, এমন বিপর্যয় কতটা সময় স্থায়ী হয়।