ইউরোপিয়ান ফুটবলে দল গঠনের জন্য ট্রান্সফার বাজারে বেশ মোটা অংকের খরচ করতেই হয়। তবে প্রিমিয়ার লিগে যেন টাকার দাপট টা একটু বেশিই। তাই তো ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের ক্লাবগুলো দল গোছানোর জন্য খরচ করে যাচ্ছে মিলিয়ন মিলিয়ন পাউন্ড। তবে সবসময় এমন পয়সা খরচ করাটা সঠিক হয় না। কিছু সময় বেশি খরচ করার ফলে ক্লাব গুলোর মোটা অংকের মূল্য দিতে হয়।
চলুন এক নজরে দেখে নেওয়া যাক প্রিমিয়ার লিগের কোন ক্লাব গুলো সবথেকে বেশি সংখ্যক টাকা খরচ করেছে ট্রান্সফার বাজারে এবং খেলোয়াড়দের বেতন দিতে।
- চেলসি
চেলসি সম্প্রতি তাদের দল গোছানোর জন্য প্রায় এক বিলিয়ন পাউন্ড খরচ করেছে। এক বিলিয়ন পাউন্ডের বিনিময়ে তারা একটি বিশাল দল গঠন করতে সক্ষম হয়েছেন। বর্তমানে এই দল পরিচালনার ভার নিয়েছেন এনজো মারেস্কা। সম্প্রতি বেশ ভালই পারফর্ম করে যাচ্ছে চেলসি।
কিন্তু চেলসি দলে এখনো বেশ কিছু এমন খেলোয়াড় রয়েছে যারা চড়া বেতন পাচ্ছেন ঠিকই তবে দলের তেমন একটা কাজে আসছে না। বেন চিলওয়েলের মতো খেলোয়াড় যে কিনা চড়া বেতন পাচ্ছে কিন্তু এই মৌসুমে এক মিনিটের জন্যও তাকে মাঠে দেখতে পাওয়া যায়নি।
অন্যদিকে, রিস জেমসও চড়া বেতনভুক্ত একজন খেলোয়াড় তবে এই মৌসুমে মাত্র ১৬.৭ শতাংশ সময় মাঠে ছিলেন। চেলসির এমন চড়া দামে প্লেয়ার দলে টানা এবং বেতন দাওয়ায় তারা অর্থনৈতিক ভাবে সংকটে পড়তে পারে।
- ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড
বিশাল অংকের টাকা বিপথে খরচ করার ক্ষেত্রে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের জুড়ী নেই। প্রিমিয়ার লিগের শীর্ষ ৫০ জন চড়া বেতনভুক্ত খেলোয়াড় যারা ইনজুরির কারণে খেলতে পারছে না এই তালিকায় ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের খেলোয়াড় রয়েছে ৯জন।
মেসন মাউন্ট এবং লুক শ এর মত ইনজুরি সম্ভাবনায় থাকা খেলোয়াড়রা মোটা অঙ্কের বেতন পাচ্ছেন। ক্লাবের ১১০ মিলিয়নের খেলোয়াড় অ্যান্টনির পারফরমেন্স নিয়ে না হয় নাই বললাম। প্রচুর সম্ভাবনাময়ী তরুণ খেলোয়াড় লেনি ইয়রোও ইনজুরিতে জর্জরিত।
বাজারে মোটা অংকের টাকা খরচ করে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের অবস্থা তেমন একটা ভালো দেখা যাচ্ছে না। এবারও কি ইউনাইটেডে টানা দ্বিতীয়বারের মতো পয়েন্ট টেবিলের মাঝামাঝি শেষ করবে?
- ম্যানচেস্টার সিটি
ম্যানচেস্টার সিটির দলটি বর্তমানে বয়স্ক খেলোয়াড়দের নিয়ে গঠিত। সিটির এই দলের গড় বয়স ২৮ বছর যা প্রিমিয়ার লিগের অন্য যেকোনো দলের থেকে বেশি। সিটি দলে সবথেকে বেশি বেতনভুক্ত খেলোয়াড় হচ্ছেন কেভিন ডি ব্রুইনা। তার বয়স ৩৩ বছর। তিনি এই মৌসুমে মোট ৪৩.৫ শতাংশ সময় মাঠে ছিলেন।
ডি ব্রুইয়েনার পরের স্থানটি দখল করে রেখেছেন রদ্রি। সিটি দলে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেতনভুক্ত খেলোয়াড়। তিনি এই মৌসুমে মাত্র ৪.৫ শতাংশ সময়ের জন্য মাঠে ছিলেন। সিটি শুধুমাত্র বয়স্ক খেলোয়াড়দের দিয়েই দল গঠন করেননি বরং এমন খেলোয়াড়দের নিয়ে দল গঠন করেছেন যাদের কে পরিবর্তন করা বেশ কষটসাধ্য হয়ে উঠবে।
- আর্সেনাল
আর্সেনালের সবথেকে বড় অহেতুক খরচ বলা যায় গ্যাব্রিয়েল জেসুস কে দলে নেওয়া। ম্যানচেস্টার সিটি থেকে ৫০ মিলিয়নের বিনিময়ে দলে ভেড়ায় আর্সেনাল। পরবর্তীতে তিনি প্রিমিয়ার লিগের সর্বাধিক বেতনভুক্ত খেলোয়াড় হয়েছেন।
২০২২সালে তাকে দলে ভেড়ানোর পর আর্সেনাল তার থেকে বেশ কিছু একটা আদায় করতে পারেননি। ০.৫৯ প্রতি ৯০ মিনিটে ওপেন প্লে থেকে গোল এবং অ্যাসিস্ট করাটা একজন স্ট্রাইকারের জন্য সামান্যই বলা যায়। তবে তার থেকেও বড় সমস্যা হচ্ছে তার ইনজুরি। দুই বছরে তিনি ৪৬.১ শতাংশ সময় মাঠে ছিলেনই না। আর এই মৌসুমে তো তিনি মাত্র ১৯ শতাংশ সময় মাঠে ছিলেন।
আর্সেনাল এই পরিমাণ টাকা যদি ভালো ভাবে ব্যবহার করতে পারত, তবে তাদের ঝুলিতে একটি প্রিমিয়ার লিগ শিরোপা থাকতেই পারতো।
- সাউথামটন
প্রিমিয়ার লিগের পয়েন্ট টেবিলে সাউথামটন পিছিয়ে থাকলেও অহেতুক খরচের দিক থেকে পিছিয়ে নেই। যদি প্রিমিয়ার লিগের ধনী ক্লাবগুলোর মধ্যে না থেকেও তারা বেতন বাজেটের ৬০ শতাংশ টাকা এমন খেলোয়াড়দের পেছনে খরচ করছেন যারা খেলেই না। যদি এমনই ভাবে চলতে থাকে তাহলে সাউদাম্পটনের হতে বেশিদিন অপেক্ষা করতে হবে না।