কতটা পথ পেরুলে পথিক বলা যায়; প্রশ্নটা ঘুরিয়ে যদি মোহাম্মদ আব্বাসকে করা হয়? কতদিন ধরে পারফর্ম করলে জাতীয় দলে ফেরা যায় – আকাশের দিকে তাকিয়ে তিনি বোধহয় নিরুত্তর থাকবেন। কারণ উত্তরটা তাঁরও জানা ছিল না, তবে তিনি হাল ছাড়েননি; দাঁতে দাঁত চেপে নিজেকে প্রমাণ করে গিয়েছেন – আর সেটার পুরষ্কার, চল্লিশ মাস পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরা।
এই পেসার নিজের প্রত্যাবর্তন রাঙাতে পেরেছেন কি না সেটা এখনই বলার সুযোগ নেই। তবে তিনি যে দক্ষিণ আফ্রিকার বুকে কাঁপন ধরিয়ে দিয়েছেন সেটা নিশ্চিত, নিজের ভেতরে চেপে রাখা জেদ প্রতিটা বলের সাথে মিশিয়ে দিয়েছেন। আর তাতেই ধসে পড়েছে প্রোটিয়া টপ অর্ডার।
মাত্র ১৪৮ রানের টার্গেট, কিন্তু সেটাই পর্বতসম করে ফেলেছেন এই ডান-হাতি। ব্যক্তিগত দ্বিতীয় ওভারে দুর্ধর্ষ এক ইনসুইংয়ে টনি ডি জর্জিকে এলবিডব্লুর ফাঁদে আটকে ফেলেন তিনি। একই ফাঁদের সাহায্যে ট্রিস্টান স্টাবসকেও প্যাভিলিয়নে ফেরান তিনি। মাঝে খুররাম শাহজাদ এক উইকেট পাওয়ায় ১১/০ থেকে ১৯/৩ এ পরিণত হয় স্বাগতিকরা।
তবে আব্বাসের স্পেলটাই লাইমলাইট কেড়ে নিয়েছে। শেষ বিকালে সবমিলিয়ে চার ওভার হাত ঘুরিয়েছেন তিনি, এর মধ্যে তিন ওভারই মেডেন দিয়েছেন। সুইংয়ের ভেরিয়েশনে মনে হচ্ছিলো বলকে দিয়ে কথা বলাচ্ছেন। আর এ স্পেলের সুবাদে অবিশ্বাস্য একটা জয়ের আশা জাগিয়ে রেখেছে পাকিস্তান।
২০১৭ সালে অভিষেকের পর থেকে সাদা পোশাকে ২৫ ম্যাচ খেলেছিলেন আব্বাস। শুধু পারফর্ম করেছেন বললে ভুল হবে, দলের অন্যতম ফ্রন্টলাইন বোলার ছিলেন তিনি। আদায় করে নিয়েছিলেন ৯০ উইকেট! ফাইফার পেয়েছিলেন চারবার, ফোরফার আছে ছয়টা। তবু কোন এক অজানা কারণে বাদ পড়তে হয়েছিল তাঁকে।
যদিও সেই গল্প অতীত হয়ে গিয়েছে, সময় এখন নতুন শুরুর। বয়সটা ৩৫ ছুঁই ছুঁই হয়ে গেলেও এই তারকা নিশ্চয়ই চেষ্টার কমতি রাখবেন না। একশো উইকেটের মাইলফলক তো হাতের নাগালেই; ক্যারিয়ারের শেষে এমন অনেক রেকর্ড নিজের ঝুলিতে দেখতে চাইবেন তিনি।