শক্ত করে সিটবেল্ট বেঁধে নেন, জলোচ্ছ্বাস হতে চলেছে। এ জলোচ্ছ্বাস বাউন্ডারি আর ওভার বাউন্ডারির। একটা রান বন্যার পূর্ভাবাস মিলছে সর্বত্র। ভারত-ইংল্যান্ড টি-টোয়েন্টি সিরিজ হয়ত চুরমার করে দিতে পারে পূর্বের সকল রেকর্ড। ধুন্ধুমার ব্যাটিংয়ের একটা অভূতপূর্ব লড়াই উপভোগ করা প্রায় নিশ্চিত।
এই আগাম সতর্কবার্তা কেন দিলাম?- সে প্রশ্ন নিশ্চয়ই আসছে মাথায়। ভারত দলটা যে টি-টোয়েন্টিতে আমুল বদলে গেছে, সেটা নিশ্চয়ই অজানা নয়। দীর্ঘ এক খরা কাটিয়ে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দ্বিতীয় শিরোপা জিতেছে টিম ইন্ডিয়া। এরপর সিনিয়র ক্রিকেটাররা স্বেচ্ছায় ছেড়েছেন নিজেদের জায়গা। ব্যাস, তাতেই চিত্রপট বদলে গেছে, ভারতের ব্যাটিং লাইনআপ যেন এখন মহাকাশের পানে ছুটে চলা কোন এক রকেট।
শেষ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর ভারত ১১টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচে প্রথম ইনিংসে ব্যাট করেছে। যার মধ্যে সাতটি ইনিংসেই তারা ২০০ রানের গণ্ডি ছাড়িয়েছে। এমনকি টেস্ট খেলুড়ে দলের বিপক্ষে সর্বোচ্চ ২৯৭ রানের সংগ্রহ গড়েছে তারা। এমনকি টেস্ট খেলুড়ে দলের বিপক্ষে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সংগ্রহও তাদের দখলে। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ২৮৩ রান নিয়েছে সুরিয়া কুমার যাদবের দল।
এই স্বল্প পরিসংখ্যানই বলে দেয় যে ঠিক কতটা বিধ্বংসী হয়ে উঠেছে গোটা ভারত দল। এমনকি তাদের বাউন্ডারি হাঁকানোর প্রচেষ্টাও আগের থেকেও বেড়েছে অনেক। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর থেকে প্রতি ২.১৮ বলে একটি বাউন্ডারি আদায়ের চেষ্টা চালায় ভারতের ব্যাটাররা। এর আগে প্রতি ২.৬৩ বলে সে প্রচেষ্টা করতে দেখা যেত।
একটা ইনিংসে এখন প্রায় দশটি অতিরিক্ত বাউন্ডারি আদায়ের প্রচেষ্টা করছে দলটি। অন্যদিকে ইংল্যান্ডও তো কম যায় না। ব্রেন্ডন ম্যাককালাম এখন তাদের সাদা বলের কোচিংয়ের দায়িত্বও নিয়েছে নিজ কাঁধে। তিনি ঠিক কতটা আগ্রাসী তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। তার অধীনেই তো টেস্টে ইংল্যান্ড ‘বাজবল’ প্রতিষ্ঠা করে অবিশ্বাস্য সব জয় তুলে নিয়েছে।
সেই ম্যাককালাম যখন ডাগআউটে থাকবেন তখন নিশ্চয়ই ভারতের আগ্রাসনের জবাবে পালটা আগ্রাসনই হবে ইংল্যান্ডের নীতি। তাদেরও বাউন্ডারি আদায়ের প্রবণতা আগের তুলনায় বেড়েছে। প্রতি ২.৫১ বল থেকে এখন প্রতি ২.৩২ বলে বাউন্ডারি হাঁকানোর চেষ্টা চালায় ইংলিশ ব্যাটাররা।
তাছাড়া টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর থেকে মাত্র একটি ইনিংসে প্রথমে ব্যাট করে ২১৮ তুলেছিল দলটি। কিন্তু প্রায় ১০ রানরেটে তিনবার প্রতিপক্ষের দেওয়া লক্ষ্যমাত্রা পার করেছে জশ বাটলাররা। অতএব ইংলিশরাও কোন অংশে কম যান না।
মৌসুমের শুরুতে ভারতের উইকেট গুলোও যথেষ্ট ভাল অবস্থায় রয়েছে। ইচ্ছাকৃতভাবে উইকেটগুলোকে স্লো, টার্নিং উইকেট না বানালে রান উৎসব হওয়া অবধারিত। ভারতের স্টেডিয়ামগুলোর ছোট বাউন্ডারি হতে চলেছে অন্যতম প্রভাবক।
গেল এক বছরে ভারত বেশ কিছু রেকর্ড ভেঙেছে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে। টেস্ট খেলুড়ে দেশের বিপক্ষে সর্বোচ্চ রান করা ছাড়াও, মাঝের ওভারগুলোতে সর্বোচ্চ রান তোলার রেকর্ড করেছে দলটি। তাছাড়া বাউন্ডারিতে সবচেয়ে বেশি রান তোলার রেকর্ডও তারা দখলে নিয়েছে। তাইতো ভারত-ইংল্যান্ড সিরিজে সকল রেকর্ডই এখন হুমকির মুখে। সে কারণেই তো শুরুতেই সিটবেল্ট বেঁধে নিতে বলা।