লুঙ্গি এনগিডিকে এক্সট্রা কাভারের উপর দিয়ে ছক্কা মারলেন সালমান আলি আঘা। অবিশ্বাস্য এক জয়ের সারথি হয়ে রইলেন তিনি। ওয়ানডে ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরিকে রাঙিয়ে রাখলেন। বহুকাল বাদে পাকিস্তান যেন খুঁজে পেল এক জাত মিডল অর্ডার ব্যাটার।
একটা স্টেটমেন্ট দিতে হতো পাকিস্তানকে। ঘরের মাঠে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আগে দলের ব্যাটিং ইউনিটকে দেখাতে হতো, ৩০০ এর বেশি টার্গেট তাড়া করতে জানে সালমানরাও। তাইতো সহ অধিনায়ক নিজের কাঁধে দায়িত্ব তুলে নিলেন। দূর্দান্ত সেঞ্চুরিতে দলের জয় তুলে নিলেন তিনি।
পাকিস্তানের ব্যাটিং ইউনিটকে বরাবরই ধরা হয় নড়বড়ে। বাবর আজম, মোহাম্মদ রিজওয়ানদের উপর অনেকটাই নির্ভর করে দলটির ব্যাটিং পারফরমেন্স। আর ম্যাচের ভাগ্য বদলে দেওয়ার ক্ষেত্রে ফখর জামানের আগ্রাসন গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু এসবকে ছাপিয়ে সালমান দেখালেন নিজের ব্যক্তিগত নৈপুন্য।
ওয়ানডে ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মত সেঞ্চুরি তুলে নেন দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে। প্রোটিয়াদের বোলিং আক্রমণ সালমানকে চ্যালেঞ্জই জানাতে পারেনি ঠিকঠাক। নিজের সক্ষমতার একটা বর্ণিল প্রদর্শনী উপহার দিলেন করাচির বুকে। অবিশ্বাস্য এক রান তাড়া করে জয়ের বন্দরে ভেড়ালেন পাকিস্তানের তরী। ১৩৪ রানে আউট হয়ে ম্যাচ শেষ না করার আক্ষেপ নিশ্চয়ই রয়েছে তার। কিন্তু সেটা যে রেকর্ড গড়ার জয়ের বিপরীতে হাওয়াই মিঠাই।
পাকিস্তানের মিডল অর্ডারে এতদিন অবধি ছিল না তেমন কোন এক্স ফ্যাক্টর। টপ অর্ডারের পারফরমেন্সের উপরই নির্ধারিত হতো ম্যাচের ফলাফল। কিন্তু এদিন সালমান বার্তা দিলেন, তার উপর ভরসা করবার জোর দাবি জানালেন। অনবদ্য এক ইনিংস খেলেছেন তিনি। রেকর্ড গড়া এক জয় এনে দিয়েছেন তরুণ এই ব্যাটার।
৩৫৩ রান যেকোন বিচারে পাহাড়সম। অবশ্য দলটির বড় রান তাড়া করবার অভিজ্ঞতা অবশ্য রয়েছে। ২০২২ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৩৪৯ রান তাড়া করে জিতেছিল দলটি। সেদিনও পাকিস্তানের টপ অর্ডার থেকে রান এসেছিল। ইমাম-উল হক ও বাবর আজমের সেঞ্চুরি, সেই সাথে ফখর জামানের ৬৭ রানে ভর দিয়ে জিতেছিল পাকিস্তান।
এবার সেঞ্চুরির তালিকায় নিজের নামটি তুলেছেন সালমান আলি আঘা। তার এই যাত্রাপথে মোহাম্মদ রিজওয়ানকে সঙ্গী হিসেবে পেয়েছেন তিনি। পাকিস্তানের পক্ষে রান তাড়ায় সর্বোচ্চ রানের জুটিও গড়েছেন এই দুইজনে মিলে। ২৬০ রানের জুটি যেকোন উইকেটে পাকিস্তানের সর্বোচ্চ।
এমন অবিশ্বাস্য এক জয়, পাকিস্তানের জন্যে বুস্টার হিসেবে কাজ করবে নিঃসন্দেহে। ঘরের মাঠে স্বাগতিক হিসেবে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ধরে রাখার রসদ জোগাবে প্রোটিয়াদের বিপক্ষে রেকর্ড গড়া জয়। সালমানের ইনিংসটি সকল ঝঞ্ঝাটের মাঝেও দিয়ে গেল এক হিমেল পরশ। এখন স্রেফ ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনালটা জেতার অপেক্ষা।