উইল ইয়ংয়ের নামটা খুব বেশি আলোচনায় আসার মত নয়। তাঁর মধ্যে আলাদা কোনো ক্যারিশমা নেই। তবে, নিউজিল্যান্ড ক্রিকেটে তিনি এক নিঃশব্দ যোদ্ধা, আলোচনার বাইরে থাকা নির্ভরতার প্রতীক। আর করাচির তপ্ত দুপুরে, ব্যাট হাতে তিনিই যেন হয়ে উঠলেন ব্ল্যাক ক্যাপসদের ত্রাণকর্তা। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির মঞ্চে প্রথম সেঞ্চুরিটা এল এমন এক সময়ে, যখন তার দল টালমাটাল, যখন অভিজ্ঞ দুই ব্যাটারের বিদায়ে বিপদসীমায় নিউজিল্যান্ড।
চারপাশের পরিস্থিতি, ম্যাচের কন্ডিশন, সতীর্থদের যাওয়া আসার-মিছিল, কোনো কিছুতেই পিছু হটেননি ইয়ং। তিনি যেন অন্য এক জগতের বাসিন্দা! প্রতিপক্ষের দাপট, চাপের পাহাড়—সবকিছু উপেক্ষা করে ব্যাট হাতে তিনি ছিলেন অবিচল, শীতল, আত্মবিশ্বাসী। একপ্রান্ত ধরে রেখে গড়লেন এক অনবদ্য ইনিংস, যা একদিকে পাকিস্তানের বোলারদের হতাশ করেছে, অন্যদিকে নিউজিল্যান্ডকে দিয়েছে ভরসার বাতিঘর।
খেলার শুরু থেকেই দেখা যাচ্ছিল, করাচির উইকেটে খুব একটা সহজ ছিল না ব্যাটিংয়ের জন্য। নিউজিল্যান্ডের জন্য প্রতিকূলতা ছিল আরও বেশি। বাবর আজম-মোহাম্মদ রিজওয়ানের দল শুরু থেকেই চাপ প্রয়োগ করছিল, পেস আর স্পিনের মিশেলে ম্যাচটাকে কঠিন করে তুলছিল কিউইদের জন্য। তবে, সময়ের সাথে সাথে ব্যাটিং স্বর্গই হয়ে ওঠে করাচি।
কিন্তু উইল ইয়ং যেন সবকিছু পাত্তাই দিচ্ছিলেন না! উইলিয়ামসন আর মিশেলের বিদায়ের পর নিউজিল্যান্ডের ইনিংসটা যেখানে হুমকির মুখে, সেখানেই তিনি দাঁড়িয়ে গেলেন পাহাড়ের মতো। ব্যাটিংয়ের ধরন দেখে বোঝাই যাচ্ছিল, তিনি এখানে সময় কাটাতে নয়, ইতিহাস লিখতে নেমেছেন। ড্রাইভ, কাট, পুল—সব শটেই ছিল আত্মবিশ্বাসের ছোঁয়া, ছিল এক দৃঢ় সংকল্পের ছাপ।
একমাত্র তিনিই জানেন, এই ইনিংসের জন্য কতটা অপেক্ষা করতে হয়েছে তাকে। প্রায় দুই বছর আগে বাংলাদেশের বিপক্ষে সেঞ্চুরি করার পর এবার পেলেন আরেকটি সেঞ্চুরি। ক্যারিয়ারের চতুর্থ সেঞ্চুরি। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির মতো বড় মঞ্চে নিজেকে প্রমাণ করার সুযোগ খুব একটা আসে না। সুযোগ কাজে লাগিয়ে হিরো বনে গেছেন উইল ইয়ং! ১১৩ বলে ১০৭ রান করে থামেন তিনি। ততক্ষণে নিউজিল্যান্ড তিনশ রানের পথে হাঁটা শুরু করেছে।