ফর্ম ছিল ঠিকঠাক। মন্দের ভাল নয়, একেবারে ভালর ভাল। তবুও অবসরের কঠিন সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছিলেন এবি ডি ভিলিয়ার্স। বয়স তখন ছিল তার মাত্র ৩৪ বছর। সবাইকে অবাক করে দিয়ে, ক্রিকেট প্রেমীদের বিষাদের জলে ভাসিয়ে তিনি একটা উদাহরণ সৃষ্টি করেছেন।
প্রোটিয়া ব্যাটারদের সেই উদাহরণ বেশ মনে ধরেছিল সম্ভবত। তাইতো সময় ফুরিয়ে আসার আগেই শেষের সীমানায় গিয়ে হাজির হচ্ছেন প্রত্যেকে। সেই তালিকায় দ্বিতীয় খেলোয়াড় হিসেবে যুক্ত হয়েছিলেন কুইন্টন ডি কক। তার বয়স ৩০ এর ঘরে পা দেওয়ার আগেই আন্তর্জাতিক টেস্ট ক্রিকেটকে বিদায় বলে দেন ডি কক।
পরবর্তীতে অবশ্য জানা গিয়েছিল চোখের সমস্যার কারণেই ক্যারিয়ারে ইতিরেখা টেনে দিয়েছিলেন ডি ভিলিয়ার্স। তিনি সবরকম ক্রিকেট থেকেই সেদফা নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছিলেন। কিন্তু কুইন্টন ডি ককের ক্ষেত্রে তেমন কিছু ঘটেনি। বরং টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়ার পর তিনি দিব্যি চালিয়ে গেছেন ফ্রাঞ্চাইজি ক্রিকেট।
প্রোটিয়া ব্যাটারদের সময়ের আগে অবসরের এই ধারাতে সর্বশেষ সংযোজন এনরিখ ক্লাসেন। একেবারে ফর্মের চূড়া ছিলেন তিনি। শেষ ছয় ওয়ানডে ইনিংসের পাঁচটাতেই ছিল তার ফিফটি। প্রায় ৭০ গড়ে রান করে যাচ্ছিলেন তিনি। এমন মুহূর্তে ব্যাটাররা নিজের পরিসংখ্যান পরিপুষ্ট করতে চান। নিজের দারুণ সময়ে রেকর্ড বইয়ে নিজের নামটি তুলতে চান বারংবার।
কিন্তু ক্লাসেন যেন এক ভিন্ন পথের পথিক। রেকর্ড আর পরিসংখ্যানের মোহ তাকে ছুঁয়ে যেতে পারল না। তিনি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় বলে দিলেন মাত্র ৩৩ বছর বয়সে। হাতে ছিল পর্যাপ্ত সময়। এমনকি তার ভিলিয়ার্সের মত কোন ইনজুরিও নেই।
ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের সর্বশেষ আসরেও তার ব্যাট থেকে এসেছে সেঞ্চুরি। তবুও অজানা কোন এক কারণে দক্ষিণ আফ্রিকার জার্সিতে মাঠে না নামার সিদ্ধান্ত নিয়ে নিলেন তিনি। কারণ খোঁজার চেষ্টা চলছে বটে। কিন্তু ক্লাসেন জানিয়েছেন এটা তার একান্ত ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত।
তবুও এই যে একটা ধারার সৃষ্টি হল, তাতে করে কি প্রোটিয়া ক্রিকেট মুখ থুবড়ে পড়বে, নাকি তারুণ্যের নিয়মিত স্রোত দক্ষিণ আফ্রিকার শিরোপার দুর্দশা কাটিয়ে তুলবে? এই প্রশ্নের উত্তর সময়ের হাতেই তোলা রইল।