এখনও ফুরায়নি ক্রিকেটের প্রাণ

দুর্দিনে মুখ ফিরিয়ে নির্দয়ের মত দুর্ভিক্ষের দিকে ঠেলে দেওয়া মানুষদের জন্যে ক্রিকেট নিজেই বরং ঘটিয়েছে প্রত্যাবর্তন।

চারিদিকে সোরগোল, ক্রিকেটের গন্তব্য রসাতল। কিন্তু মিরপুর হোম অব ক্রিকেট যেন দিল এক ভিন্ন বার্তা। ক্রিকেট যে এখনও এই তল্লাটের সুখের বার্তাবাহক। একটা বিরতি কাটিয়ে শেরে বাংলায় ক্রিকেট ফিরল, সেই সাথে ফিরল দর্শকদের ঢল।

শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে যেন তিল ধারণের ঠাই নাই। ম্যাচ শুরুর নয় ওভার পরও স্টেডিয়ামের বাইরে ছিল দীর্ঘ লাইন। ঝাঁকে ঝাঁকে দর্শক ঢুকেছেন গ্যালারিতে তুলেছেন উচ্ছ্বাসের নিনাদ। ক্রিকেটের সমাধি যারা দেখে ফেলেছিলেন তাদের মুখে যেন ঝামা ঘষে দিয়েছে উন্মাতাল দর্শকরাই।

ফুটবলের নবজাগরণ ঘটেছে বাংলাদেশে। বাঙালির প্রেম ফুটবল, কিন্তু পত্নী ক্রিকেট- এমন এক আক্ষেপসূচক মন্তব্য ছড়িয়েছে সর্বত্র। ক্রিকেট-ফুটবলকে বানিয়ে দেওয়া হয়েছে একে অপরের প্রতিপক্ষ। কিন্তু দু’টো ডিসিপ্লিনই তো বাংলাদেশের পতাকাবাহক।

পৃষ্ঠপোষকরাও বলিহারি, দুর্দিনে দিয়েছে ক্রিকেটের সঙ্গ ছাড়ি। তবে ক্রিকেটকে একেবারে ছুড়ে ফেলা তো দুষ্কর। পরাজয়ের ক্ষত দিয়েছে বারবার। শিরোপার দেখা নেই কতকাল! তবুও যে ফুটবলের ধূসর দিনেও ক্রিকেট আনন্দের ধারা রেখেছিল বহাল।

স্টেডিয়ামের বাইরে কালোবাজারিরা আজও খুজেছে সুযোগ। মক্কেল পেলেই ধরিয়ে দিয়েছে ভুয়া প্রবেশপত্র। চাহিদা ছিল বলেই নিশ্চয়ই ঝুঁকি নিয়ে প্রতারণার ফাঁদ পেতেছিল তারা। মৃত এক স্পোর্টসের জন্যে কিসের আবার চাহিদা! দর্শকদের কাছে এখনও ক্রিকেটের প্রতি আবেগ ঠুনকো হয়ে যায়নি।

প্রচণ্ড আবেগতাড়িত হয়ে একটানা ব্যর্থতার দিনে শুধু একটু হয়েছিল অভিমান। দল ঘুরে দাঁড়ানোর বার্তা দিয়েছে শ্রীলঙ্কার মাটিতে। ঘরের মাঠে তাই সমর্থনের কমতি নাই। দুর্দিনে মুখ ফিরিয়ে নির্দয়ের মত দুর্ভিক্ষের দিকে ঠেলে দেওয়া মানুষদের জন্যে ক্রিকেট নিজেই বরং ঘটিয়েছে প্রত্যাবর্তন। ক্রিকেটারদেরও অবদান কম নয়।

Share via
Copy link