ম্যানচেস্টারে ক্রিকেট স্পিরিটের প্রবেশ নিষেধ!

ম্যানচেস্টার টেস্টে শেষ দিনে উইকেট গেল মাত্র দু’টি। যদিও, তাতে ক্রিকেটের স্পিরিট নামের ভদ্রলোকের কোনো ক্ষতি হল না। ক্ষতি হত, যদি খেলাটা মিরপুর কিংবা গলে হত।

ম্যানচেস্টার টেস্টে শেষ দিনে উইকেট গেল মাত্র দু’টি। যদিও, তাতে ক্রিকেটের স্পিরিট নামের ভদ্রলোকের কোনো ক্ষতি হল না। ক্ষতি হত, যদি খেলাটা মিরপুর কিংবা গলে হত।

ম্যানচেস্টার এমনিতেই ইংল্যান্ডের সবচেয়ে ফ্ল্যাট উইকেট গুলোর একটি। এখানে স্পিনারদের জন্য খুব সাফল্য নেই। মানে শেষ দিনেও উইকেট থেকে স্পিনাররা বাড়তি কিছু আদায় করার সুযোগ পান খুবই কম। শুধু স্পিনাররা নয়, এখানে আসলে বোলাররাই তীর্থের কাক হয়ে বসে থাকেন।

ইংল্যান্ড পেস বোলারদের দিয়েও ম্যানচেস্টারের পঞ্চম দিনে তেমন কোনো সাফল্য পায়নি। বরং, রবীন্দ্র জাদেজা শুরু থেকেই আগ্রাসী ছিলেন, ওয়াশিংটন সুন্দর ব্যাট চালিয়েছেন ঠাণ্ডা মাথায়। শেষ দিনে ভারতের তিন ব্যাটার সেঞ্চুরি পেয়েছেন। ইংল্যান্ডের বোলাররা পাত্তাই পাননি।

বাজবলের এই যুগে ইংল্যান্ড মাত্র দুইটা টেস্ট ড্র করেছে। দুইটাই ম্যানচেস্টারে। ফলে, ম্যানচেস্টারের ওল্ড ট্রাফোর্ড যে ফলাফলের জন্য সহায়ক নয় – সেটা বলাই যায়। অতিরিক্ত বোলিং সহায়ক বলে মিরপুরের যেমন সমালোচনা হয়, অতিরিক্ত ফ্ল্যাট বলে ম্যানচেস্টারের সমালোচনা হয় না।

এখন পর্যন্ত ৮৬ টা টেস্ট ওল্ড ট্রাফোর্ডে হয়েছে, যার মধ্যে ড্র হয়েছে ৩৭ টিতে। ঐতিহাসিক ভাবেই এই মাঠের উইকেট ব্যাটারদের জন্য সহায়ক, বোলারদের জন্য মরুভূমি। ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থা তারপরও নীরব।

এটা আইসিসির ডাবল স্ট্যান্ডার্ড। বিগ থ্রি – মানে ভারত, ইংল্যান্ড আর অস্ট্রেলিয়ার প্রশ্নে আইসিসির কার্যকারিতা ভিন্ন। বাজবলের যুগেও এই মাঠ টেস্ট জিতিয়ে দিতে পারে না। তাও কেউ বলবে না পিচটা একপেশে, নিষ্প্রাণ, ব্যাটিং স্বর্গ। কারণ এই মাঠ ‘বিগ থ্রি’র সদস্য রাষ্ট্রে পড়ে।

এই ম্যাচটা যদি গলে, ক্যান্ডিতে, কিংবা মিরপুরে হতো? কিংবা চট্টগ্রামে? তখন কী হতো? তখন পিচ রেটিং নিচে নেমে যেত। আইসিসির লোকজন ফোনে ঝাঁপিয়ে পড়ত। দুই ঘণ্টার মধ্যে আইসিসির প্রধান পিচ কিউরেটর অ্যান্ডি অ্যাটকিনসন প্লেনে উঠতেন, ব্যাগ নিয়ে পিচ দেখতে চলে আসতেন। কিন্তু জায়গাটা যেহেতু ম্যানচেস্টার, কেউ কিছু বলছে না। ম্যানচেস্টারের পিচ নিয়ে কোনো অভিযোগ নেই।

কেন নেই? কারণ এটা ইংল্যান্ড। ক্রিকেটের স্পিরিটের ওখানে কোনো কাজ নেই। তাঁর কাজ শুধু মিরপুর, ক্যান্ডি কিংবা জ্যামাইকায়। এটা আইসিসির চিরকালীন বিভাজন। বৈষম্যবিরোধী আন্তর্জাতিক ক্রিকেট বলতে আদতে কিছু নেই।

লেখক পরিচিতি

সম্পাদক

Share via
Copy link