তিনি কিন্তু বাবার মত নয়

বাবার মত তিনিও উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান। মিল বলতে ওটুকুই। এর বাইরে বাবার সাথে মঈন খান পুত্র আজম খানের মিল নেই বললেই চলে।

বাবার দৈহিক গড়ণটা গড়পরতা মানের। ভিড়ের মধ্যে ঠিক শারীরিক কারণে আলাদা করে চোখে পড়ার কোনো কারণ নেই। তবে, সেদিক থেকে আজম খান ভিন্ন। তিনি বিশাল দেহী। আর এটা বিপদেরও কারণ হয়েছিল, কারণ আজকাল তো আবার ক্রিকেটে ফিটনেস খুবই জরুরী।

সাবেক পাকিস্তানি অধিনায়ক মঈন খান মাঝে মধ্যে ব্যাট হাতে ঝড় তুললেও ঠিক পাওয়ার হিটার ছিলেন না কখনোই। অন্যদিকে আজম খান পাওয়ার হিটারদের মধ্যেও যেন আরো পাওয়ারফুল। বলটার জন্মই যে হয়েছে ছক্কা হাঁকানোর জন্য – এই তত্ত্বে সম্ভবত তাঁর মত আর কারো এতটা বিশ্বাস নেই।

পাকিস্তান সুপার লিগ (পিএসএল) যারা নিয়মিত দেখেন তারা আজম খানের ঝড়ো ব্যাটিংয়ের সাথে পরিচিত। তবে, তাঁর সমস্যা ছিল দু’টো – প্রথমত ওজনটা একটু বেশি, যার কারণে ফিটনেস জনিত সমস্যায় ভুগতেন। দ্বিতীয়ত ধারাবাহিকতার অভাব।

তবে, গত বছর পাকিস্তানের ন্যাশনাল টি-টোয়েন্টিতে তুলনামূলক ধারাবাহিক ছিলেন। টি-টোয়েন্টিতে তাঁর স্ট্রাইক রেট ১৫৭! ফলে তাঁকে এড়ানো কঠিন। আর সম্প্রতি মেদ ঝড়িয়েছেন। এক বছরে ওজন কমিয়েছেন ৩০ কেজি।

সেই পরিশ্রমেরই ফল পেলেন এবার। পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি) ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও ইংল্যান্ড সফরের জন্য টেস্ট, ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি দল ঘোষণা করেছে। সেখানে টি-টোয়েন্টি দলে ডাক পেয়েছেন তিনি। সফরকে সামনে রেখে আগামী ২৫ জুন উড়াল দেবে বাবর আজমের দল।

তবে, এটা ঠিক যে আজম খানের ডাক পাওয়াটা বিস্ময় জাগানিয়া। তিনি নিজেও বিস্মিত। বললেন, ‘আমি সকালের নাস্তা করছিলাম। নাবিল ভাই (কোয়েটা গ্ল্যাডিয়েটর্সের মিডিয়া ম্যানেজার)) তখন বললেন আমি পাকিস্তানের টি-টোয়েন্টি স্কোয়াডে ডাক পেয়েছি। প্রথমে ভেবেছি মজা করছেন। পরে সত্যিটা বুঝতে পারি। এরপর নাস্তা ছেড়ে উঠে যাই, বাবার (মঈন খান) কাছে চলে যাই। ওটা তখন সিনেমার আবেগী এক দৃশ্যে পরিণত হয়। এত দ্রুত ডাক আসবে ভাবিনি। আমি খুবই উচ্ছ্বসিত যে আমার গেল কয়েকটা বছরের পরিশ্রম কাজে এসেছে।’

বাবার হাত ধরে ক্রিকেটে আসা আজমের। তবে, তিনি ঠিক বাবার মত যে নন, তা তো আগেই জানলেন। আবার পাকিস্তান দলেও তাঁর ভূমিকাটা ভিন্ন হবে। আজম কি পারবেন বাবার চেয়েও কার্য্যকর হতে? উত্তরের জন্য সময়ের অপেক্ষা করা ছাড়া কোনো বিকল্প নেই!

  • পাকিস্তানের টেস্ট দল: বাবর আজম (অধিনায়ক), মোহাম্মদ রিজওয়ান, আবদুল্লাহ শফিক, আবিদ আলি, আজহার আলি, ফাহিম আশরাফ, ফাওয়াদ আলম, হারিস রউফ, হাসান আলী, ইমরান বাট, মোহাম্মদ আব্বাস, মোহাম্মদ নওয়াজ, নাসিম শাহ, নুমান আলি, সাজিদ খান, সরফরাজ আহমেদ, সৌদ শাকিল, শাহীন শাহ আফ্রিদি, শাহনওয়াজ দাহানি, ইয়াসির শাহ (ফিটনেস পরীক্ষার উপর নির্ভরশীল), জাহিদ মাহমুদ।
  • পাকিস্তানের ওয়ানডে দল: বাবর আজম (অধিনায়ক), শাদাব খান, আবদুল্লাহ শফিক, ফাহিম আশরাফ, ফখর জামান, হায়দার আলি, হারিস রউফ, হারিস সোহেল, হাসান আলি, ইমাম উল হক, মোহাম্মদ হাসনাইন, মোহাম্মদ নওয়াজ, মোহাম্মদ রিজওয়ান, সালমান আলি আগা, সরফরাজ আহমেদ, সৌদ শাকিল, শাহীন শাহ আফ্রিদি, উসমান কাদির।
  • পাকিস্তানের টি-টোয়েন্টি দল: বাবর আজম (অধিনায়ক), শাদাব খান, আরশাদ ইকবাল, আজম খান, ফাহিম আশরাফ, ফখর জামান, হায়দার আলি, হারিস রউফ, হাসান আলি, ইমাদ ওয়াসিম, মোহাম্মদ হাফিজ, মোহাম্মদ হাসনাইন, মোহাম্মদ নওয়াজ, মোহাম্মদ রিজওয়ান, মোহাম্মদ ওয়াসিম জুনিয়র, সরফরাজ আহমেদ, শাহীন শাহ আফ্রিদি, শারজিল খান, উসমান কাদির।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link