একটা টি-টোয়েন্টি ম্যাচের ১৫ তম ওভার মেইডেন! অবাক করা বিষয়। এ নিয়ে চারিদিকে হচ্ছে ভীষণ আলোচনা। তবে কি সাইফ হাসান ভুল করেছিলেন? না, মোটেও না। বরং তিনি দিয়েছেন দারুণ গেম অ্যাওয়ারনেরসের প্রমাণ। আগের ওভারেই যে পরপর দুই বলে ফিরে গেছেন দুই ব্যাটার। পরিস্থিতি বুঝেই সাইফ বুদ্ধিদীপ্ত ব্যাটিং করেছিলেন রশিদ খানের বিরুদ্ধে।
ম্যাচের ১৪ তম ওভারে মুজিব উর রহমান তুলে নেন পরপর দুই বলে দুই উইকেট। ওভারের শেষ দুই বলে জাকের আলী অনিক ও শামীম হোসেন পাটোয়ারি ফিরেছেন প্যাভিলিয়নে। আবার মস্তিষ্কে তখন সেই পুরনো ভয়। এই বুঝি সব গেল! সেই ভাবনা থেকে আফগান অধিনায়ক রশিদ খান এলেন ভয়কে বাস্তবে পরিণত করতে।
তিনি জানেন বাংলাদেশের মধ্যে শঙ্কা দানা বেঁধেছে। সেই শঙ্কাকে ভয়ে পরিণত করতে পারেন কেবল তিনি। সেই মুহূর্তে বাংলাদেশের প্রয়োজন ছিল ৩৬ বলে ৩৫ রান। অর্থাৎ যদি পুরো ওভারে বাংলাদেশ কোন রানও নিতে না পারে তবে ৩০ বলে ৩৫ রান প্রয়োজন হবে দিনশেষে। এই হিসেবটা কষে নিলেন সাইফ হাসান। নিজে তখন ২৩ বলে ৪০ রানে দাঁড়িয়ে।

রশিদকে কোন প্রকার সুযোগই তিনি দিলেন না। ছয়টি বলে কোন রান নিলেন না। যদিও তিনি চেষ্টা করেছেন ওভারটা যেন মেইডেন না যায়। তিনি সেই ওভারের তৃতীয়, পঞ্চম ও ষষ্ঠ বলে রান নেওয়া প্রচেষ্টা করেছেন, তবে রান বের করতে পারেননি। সেটা তার সামর্থ্যের দূর্বলতা বটে। কিন্তু ম্যাচের পরিস্থিতি অনুযায়ী বেশ হিসেব কষে তিনি প্রতিটা শট খেলেছেন। ছিল না কোন উচ্চাভিলাষী শট।
অথচ সেই ওভারের আগেই সাইফ হাঁকিয়ে ফেলেছিলেন চারটি সুবিশাল ছক্কা। তবে রশিদের ওভারে আফগানিস্তানের গড়া মোমেন্টামকে পুরোপুরি নিজেদের বিপক্ষে যেতে দেননি সাইফ হাসান। এরপরের ওভারে বশির আহমেদের পর পর দুই বলে দু’টো ছক্কা হাঁকিয়ে ব্যক্তিগত অর্ধশতক পূর্ণ করেন সাইফ। সাথে কমিয়ে ফেলেন রান আর বলের ব্যবধানে। শুধু তাই নয়, সেই ওভারে সাইফ একাই ১৫ রান নিয়ে পুষিয়ে দেন রশিদকে দেওয়া মেইডেন।
এভাবেই আসলে ক্রিকেট খেলতে হয়। সাইফ হয়ত পরের ওভারে আউট হয়েও যেতে পারেন। কিন্তু তিনি নিজের প্রতি রেখেছিলেন বিশ্বাস। তাছাড়া তিনি জানেন সদ্যই দুই উইকেটের পতন ঘটেছে, অপরপ্রান্তে একজন নতুন ব্যাটার- তাই সমস্ত দায়িত্ব তারই নিতে হবে। পাশাপাশি রান আর বলের ব্যবধান খুব বেশি না। এই সামান্য গেম অ্যাওয়ারনেস শেষ অবধি বাংলাদেশকে ম্যাচ জিতিয়েছে দুই ওভার বাকি থাকতেই।

মেইডেন যাওয়া ওই ওভারের প্রভাবে উপস্থিতি ছিল না দিনশেষে। পরিস্থিতি অনুযায়ী ব্যাটিং করা, প্রতিপক্ষের সেরা বোলারকে কোন সুযোগ না দেওয়া, রান বলের হিসেব অনুযায়ী হিসেব কষা ঝুঁকি নেওয়া- এই সবকিছুই গেম অ্যাওয়ারনেসের অংশ। বহুকাল ধরেই এই ছোট্ট স্কিলের অভাবের মাশুল দিতে হয়েছে বাংলাদেশকে। সাইফরা কি পারবেন বদলাতে এসবকিছু?











