বহু বছর ধরেই পাকিস্তান দলে একজন বিশ্বমানের স্পিনারের অভাব ছিল। সেই শূন্যস্থানটাই কি পূরণ করতে চলেছেন আবরার আহমেদ?
সাকলাইন মুশতাকের যুগ শেষ হওয়ার পর সাঈদ আজমল কিছুটা সেই শূন্যতা পূরণ করেছিলেন, কিন্তু তার পর দীর্ঘদিন আর কেউ সেই উচ্চতায় পৌঁছাতে পারেনি। অবশেষে মনে হচ্ছে পাকিস্তান আবার সেই বহু প্রতীক্ষিত স্পিন-রত্ন পেয়ে গেছে — পেয়েছে আবরার আহমেদকে।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে খুব অল্প সময় খেলেই আবরাব পাকিস্তানের প্রধান স্পিন ভরসায় পরিণত হয়েছেন। শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে তিনি সহজেই লঙ্কান টপ অর্ডার ভেঙে দেন। নিজেকে ক্রমেই সাদা বলের সেরা স্পিনারদের একজন হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে চলেছেন তিনি।

পরিসংখ্যানই বলে দেয় তিনি কতটা কার্যকর। টেস্টে ১০ ম্যাচে ৪৬ উইকেট, ওয়ানডেতে ১৩ ম্যাচে ২৫ উইকেট এবং টি২০–তে ২৫ ম্যাচে ৩১ উইকেট—প্রতিটি ফরম্যাটেই তিনি ধারাবাহিক। সবচেয়ে উজ্জ্বল তার সাদা বলের রেকর্ড।
পাকিস্তান বহুদিন ধরেই ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টিতে একজন নির্ভরযোগ্য স্পিনার খুঁজছিল, এবং আব্রার তার সেরা উদাহরণ। গতি পরিবর্তন, গুগলি, ফ্লিপার—যে কোনো বৈচিত্র্য অনবরত বোলিং করতে পারেন তিনি। এই ভ্যারিয়েশনই ব্যাটারদের বিভ্রান্ত করে এবং তাকে বিপজ্জনক করে তোলে।
লাইন-লেন্থ ধরে রাখার ক্ষমতাও তার বড় শক্তি। গেল এশিয়া কাপে দেখা গেছে, এক অভিষেক শর্মা ছাড়া প্রায় কেউই তার বল পড়তে পারেননি। আবরার চাপ তৈরি করতে জানেন, এবং সবচেয়ে জরুরি ব্যাপার হল — তিনি সাহসী। ব্যাটার যতই আক্রমণাত্মক হোক, তিনি তাঁর পরিকল্পনা বদলান না।

পাকিস্তান যে একজন বিশ্বমানের স্পিনারের অপেক্ষায় এতদিন ছিল, আবরার আহমেদ সেই প্রত্যাশায় আলো ফেলছেন। টেস্টে তার আরও উন্নতির সুযোগ আছে, কিন্তু সাদা বলের ক্রিকেটে তিনি ইতোমধ্যে নিজের এক আলাদা পরিচয় তৈরি করেছেন। তার বিকাশ, ধারাবাহিকতা এবং ম্যাচ–পরিস্থিতি বোঝার দক্ষতা দেখে মনে হয়—এই স্পিনারই পাকিস্তানের পরবর্তী বড় সুপারস্টার হতে চলেছেন।










