টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল ম্যাচ নিয়ে উত্তেজনার পারদ জমলে অন্য ম্যাচগুলো কী দর্শকদের আকর্ষণ করতে পেরেছিল ঠিক ভাবে? আইসিসি নিশ্চয়ই টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের দ্বিপাক্ষিক ম্যাচগুলোকে আরেকটু আকর্ষণীয় করে তোলার চেষ্টা করবে। তবে প্রথম আসর হিসেবে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ যে উত্তেজনা ছড়িয়েছে তাঁর প্রশংসা করতেই হয়।
প্রায় দুই বছর ধরে চলা এই আসরেও এমন কিছু ম্যাচ হয়েছে যেগুলো ক্রিকেটপ্রেমীদের দিয়েছে বাড়তি রোমাঞ্চ। চলুন দেখা আসা যাক টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের সেরা পাঁচ ম্যাচ কোনগুলো ছিল।
- অস্ট্রেলিয়া-ইংল্যান্ড, লিডস
আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের দারুণ একটি শুরু হয়েছিল ২০১৯ সালের অ্যাশেজ সিরিজের মধ্য দিয়ে। সেই সিরিজের তৃতীয় টেস্টটি ছিল সবচেয়ে আকর্ষণীয়। প্রথম ইনিংসে অস্ট্রেলিয়ার করা ১৭৯ রানের জবাবে ব্যাট করতে নেমে মাত্র ৬৭ রানেই গুটিয়ে গিয়েছিল ইংল্যান্ড।
দ্বিতীয় ইনিংসে অস্ট্রেলিয়া ২৪৬ রান যোগ করলে ৩৫৯ রানের বিশাল টার্গেট আসে ইংল্যান্ডের সামনে। সেই সময় ইংল্যান্ডের ত্রানকর্তা হয়ে আসেন ২০১৯ বিশ্বকাপের নায়ক বেন স্টোকস। টেস্ট ক্রিকেটের অন্যতম সেরা ইনিংসটি সেদিন খেলেন এই অলরাউন্ডার। ১৩৫ রানের সেই ইনিংসে ১ উইকেটের জয় পেয়েছিল ইংল্যান্ড।
- নিউজিল্যান্ড-পাকিস্তান, মাউন্ট মঙ্গানুই
ঘরের মাঠে বেশ গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে পাকিস্তানের মুখোমুখি হয়েছিল নিউজিল্যান্ড। টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল খেলতে ওই ম্যাচটা জিততেই হতো নিউজিল্যান্ডকে। উইলিয়ামসনের সেঞ্চুরিতে দ্বিতীয় ইনিংসে পাকিস্তানকে ৩৭৩ রানের টার্গেট দিয়েছিল নিউজিল্যান্ড।
তবে টেস্টের শেষ দিনে পাকিস্তানকে দ্রুত অল আউট করার তাড়া ছিল কিউইদের। কিন্তু শেষ উইকেট জুটি নাসীম শাহ ও শাহীন আফ্রিদিকে ৮ ওভার বল করেও আউট করতে পারছিল না নিউজিল্যান্ড। ওদিকে আর পাঁচ ওভার খেলা হলেই ম্যাচ ড্র হয়ে যেতো। সেই সময়েই নাসিম শাহকে আউট করে দারুণ এক জয় পেয়েছিল কিউইরা।
- ভারত-অস্ট্রেলিয়া, ব্রিসবেন
সেই সিরিজেই অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৩৬ রানে অল আউট হয়ে গিয়েছিল ভারত। এছাড়া বিরাট কোহলিসহ কয়েকজন সিনিয়র ক্রিকেটারও ছিলেন না সেই ম্যাচে। তবু অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে রোমাঞ্চকর এক জয় পেয়েছিল ভারত। ২৩ বছর বয়সী তরুণ ঋষাভ পান্তের অপরাজিত ৮৯ রানে ভর করে ম্যাচের শেষ সময়ে এসে নাটকীয় জয় পায় দলটি। এটিই স্বরণকালে ভারতের অন্যতম সেরা টেস্ট জয়।
- বাংলাদেশ-ওয়েস্ট ইন্ডিজ, চট্টগ্রাম
আগে ব্যাট করে ৪৩০ রানের বিশাল সংগ্রহ করেছিল বাংলাদেশ। স্পিন সহায়ক উইকেটে প্রথম ইনিংসে বেশ ভুগেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্যাটসম্যানরা। ২৫৯ রানেই অল আউট হয়ে যায় দলটি। দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশ আরো ২২৩ রান যোগ করলে ৩৯৪ রানের বিশাল টার্গেট পায় ক্যারিবীয়রা।
তবে, দ্বিতীয় ইনিংসে একাই রাজত্ব করলেন সেই ম্যাচে অভিষিক্ত হওয়া কাইল মেয়ার্স। ২১০ রানের অপরাজিত এক ইনিংস খেলে দলকে জিতিয়েই মাঠ ছেড়েছিলেন ক্যারিবীয় এই ব্যাটসম্যান।
- নিউজিল্যান্ড-ভারত, সাউদাম্পটন
টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল ম্যাচটিই সবচেয়ে বেশি উত্তেজনা ছড়িয়েছিল ক্রিকেটপ্রেমীদের মনে। যদিও বৃষ্টির কারণে ম্যাচের অনেকটায় ভেসে যায় তবুও ষষ্ঠ দিনে নিউজিল্যান্ডের জয় এই ম্যাচে এনে দিয়েছিল ভিন্ন মাত্রা শেষ দিন অবধি দারুণ লড়াই করেছিল দুইদলই।
তবে শেষ দুই সেশনে কেন উইলিয়ামসন ও রস টেলরের অসাধারণ এক জুটিতে দারুণ জয় পায় কিউইরা। ফলে প্রথম আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের চ্যাম্পিয়ন বনে যায় দলটি।