জোড়ায় জোড়ায় শুরু

ক্রিকেটারের শুরুটা সবসময়ই বলার মত একটা গল্প।

অন্তত ওই ক্রিকেটারের কাছে অভিষেকটা তো আজীবনের একটা গল্প। একজন ক্রিকেটারের অভিষেক হওয়া মানেই তাই একটা গল্পের শুরু হয়। এর মধ্যে আমরা দেখি, এক জন নয়, একসাথে এক ম্যাচে অভিষেক হয়েছে কয়েক জন ক্রিকেটারের। যদিও আজকের দিনে একসাথে একাধিক অভিষেক হওয়াটা নিয়মিত ঘটনা নয়।

তবুও বিশ্বের পরিচিত কয়েকজন ক্রিকেটার একই সাথে আর্ন্তজাতিক ক্রিকেটে যাত্রা শুরু করেছেন। একইদিনে অভিষিক্ত হওয়া এমন কিছু জোড়া ক্রিকেটার নিয়েই এই তালিকা।

  • স্টিভ স্মিথ ও টিম পেইন (অস্ট্রেলিয়া)

অস্ট্রেলিয়ার টেস্ট দলের বর্তমান অধিনায়ক টিম পেইন। এর আগে স্টিভ স্মিথও অজিদের লাল বলের অধিনায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এই দুইজন ক্রিকেটারই একই টেস্টে অস্ট্রেলিয়ার হয়ে অভিষিক্ত হয়েছিলেন। ২০১০ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে এক টেস্ট ম্যাচে অভিষিক্ত হন স্মিথ ও পেইন। ওই টেস্টে স্মিথ অভিষিক্ত হয়েছিলেন লেগ স্পিনার হিসেবে। ওদিকে পেইনের ভূমিকা ছিল কিপার ব্যাটসম্যান।

  • মহেন্দ্র সিং ধোনি ও যোগিন্দর শর্মা (ভারত)

মহেন্দ্র সিং ধোনি ভারতের ক্রিকেটটাকেই বদলে দিয়ে গিয়েছেন। বিশ্ব ক্রিকেটের ইতিহাসে অন্যতম সেরা অধিনায়কদের একজন ধোনি। কিপার ব্যাটসম্যান হিসেবেও তিনি সেরাদের সেরা। অধিনায়ক হিসেবে কি জিতেননি তিনি। ধোনির নেতৃত্বে প্রথম শিরোপা এলো ২০০৭ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকপে। সেও বিশ্বকাপের ফাইনাল ম্যাচের শেষ ওভারে বোলিং করেছিলেন যোগিন্দর শর্মা। তবে মজার বিষয় হচ্ছে এই দুইজনেরই অভিষেক হয়েছিল ২০০৪ সালে বাংলাদেশের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে।

  • রাহুল দ্রাবিড় ও সৌরভ গাঙ্গুলি (ভারত)

ভারত তো বটেই দু’জনই বিশ্ব ক্রিকেটের সেরাদের একজন। টেস্ট ক্রিকেটের ইতহাসে অন্যতম সেরা পারফর্মাদের একজন রাহুল দ্রাবিড়। লম্বা সময় ভারতের ব্যাটিং স্তম্ভ হয়েছিলেন দ্য ওয়াল। ওদিকে সৌরভ ভারত ক্রিকেটের প্রাণদাতা।

ধুঁকতে থাকা ভারতকে প্রথম চোখ চোখ রেখে ক্রিকেট খেলা শিখিয়েছিলেন সৌরভ। দেশের বাইরেও প্রথম জয় আসতে শুরু করে তাঁর নেতৃত্বে। এছাড়া এখন তো তিনি বোর্ড অব কনট্রোল ফর ক্রিকেট ইন ইন্ডিয়ার (বিসিসিআই) সভাপতিই। রাহুল দ্রাবিড় ও এখন ভারত ‘এ’ দলের কোচ। সবমিলিয়ে ভারতের ক্রিকেটে এই দুই জনের গুরুত্ব অপরিসীম। তবে এই দুইজনেরই টেস্ট অভিষেক হয়েছিল ১৯৯৬ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে।

  • মাশরাফি বিন মুর্তজা ও খালেদ মাহমুদ সুজন (বাংলাদেশ)

ঐতিহাসিক ভাবে বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য দু’জনই গুরুত্বপূর্ণ। খালেদ মাহমুদ সুজন ১৯৯৯ বিশ্বকাপের মঞ্চে পাকিস্তানের বিপক্ষে জয়ের নায়ক। অন্যদিকে মাশরাফি বিন মুর্তজা বাংলাদেশের ইতিহাসের অন্যতম সেরা অধিনায়ক।

দু’জনের টেস্ট অভিষেক হয় একই দিনে। বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে ২০০১ সালের আট নভেম্বর একই দিনে টেস্ট ক্যাপ পান এই দু’জন। ম্যাচটা ছিল জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। বৃষ্টির বাঁধায় ম্যাচ ড্র হয়। পরবর্তীতে মাশরাফি ও সুজন – দু’জনই সব ফরম্যাটে দেশকে নেতৃত্ব দিয়েছেন।

৩৬ টেস্ট খেলে মাশরাফি নেন ৭৮ টি উইকেট, রান করেন ৭৯৭। অন্যদিকে, ১২ টেস্ট খেলে ১৩ উইকেটের পাশাপাশি ২৬৬ রান করেন সুজন।

  • এবি ডি ভিলিয়ার্স ও ডেল স্টেইন (দক্ষিণ আফ্রিকা)

এবি ডি ভিলিয়ার্স দক্ষিণ আফ্রিকা তো বটেই বিশ্ব ক্রিকেটেরই সেরাদের একজন। আক্রমনাত্মক ব্যাটিং দিয়ে মন জয় করেছেন গোটা ক্রিকেট বিশ্বের। উইকেটের চারপাশে তাঁর স্ট্রোকের ফুলঝুরি মাতাল করতো হাজারো ক্রিকেট প্রেমীকে।

ওদিকে ডেল স্টেইন ক্রিকেটের অন্যতম সেরা পেসারদের একজন। টেস্ট ক্রিকেটে এই পেসার নিজেকে নিয়ে গিয়েছেন অনন্য উচ্চতায়। ব্যাটিং ও বোলিং ডিপার্টমেন্টে দক্ষিন আফ্রিকার সেরা দুইজন তাঁরা। একসাথে খেলেছেন অসংখ্য ম্যাচ। তবে এদেরও টেস্ট অভিষেক হয়েছিল এক সাথে। ২০০৪ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে অভিষিক্ত হন এই দুইজন।

  • যুবরাজ সিং ও জহির খান (ভারত)

দুইজনই ভারতের ক্রিকেটের অনন্য নাম। ২০১১ বিশ্বকাপ জয়ের পিছনে এই দুইজন রেখেছিলেন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। একদিকে যুবরাজ ছিলেন আসরের সেরা অলরাউন্ডার অন্যদিকে জহির খান ছিলেন সেরা বোলার। এছাড়া আন্তর্জাতিক ক্রিকেটেও দারুণ সফল এই দুইজন। এই দুইজনের অভিষেক হয়েছিল আইসিসি নক আউট ট্রফিতে। ২০০০ সালে কেনিয়ার বিপক্ষে অভিষিক্ত হন এই দুইজন।

লেখক পরিচিতি

আমার ডায়েরির প্রতিটা পৃষ্ঠাই আমার বাইশ গজ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link