আমি সেদিন মাত্র ১১ রান খরচ করে ৪ উইকেট নিয়েছিলাম। কিন্তু খুব স্বাভাবিক ভাবেই কেউ সেটা মনে রাখেনি। কেননা অসাধরণ দুটি সেঞ্চুরি দেখা গিয়েছিল সেদিন।
আমার এখনো মনে পড়ে, ওরা দুইজন কি অবিশ্বাস্য ব্যাটিং করছিল। মনে হচ্ছিল প্রতিটা বলেই বাউন্ডারি হবে। শেষ পর্যন্ত ৩ উইকেট হারিয়ে আমরা ২৪৮ রান করেছিলাম। এতেই বোঝা যায় ইনিংসটা ঠিক কতটা আনন্দদায়ক ছিল।
মনে হয় পুরো স্টেডিয়াম কাপছিল ওরা যখন ব্যাট করছিল। মানুষ প্রতিটা বলে উদযাপন করছিল। আর কিছুই শোনা যাচ্ছিল না। আমি জানিনা এটা কে ঠিক কী করে বর্ননা করতে হয়। তবে আমার মনে হচ্ছিল আমি টেলিভিশনের পর্দায় কোনো সিনেমা দেখছি।
তাঁদের খেলার ধরণে বিশেষ কিছু ছিল। দুইজনের ইনিংসেই সবকিছু ছিল। তাঁদের রানিং বিট্যুইন দ্য উইকেট, শট সিলেকশন সবকিছু অসাধারণ ছিল। সবমিলিয়ে দুই প্রান্ত থেকেই বিশ্বমানের ব্যাটিং দেখা যাচ্ছিল সেদিন।
আপনি যখন বিরাট কোহলি ও এবি ডি ভিলিয়ার্সকে একসাথে দেখবেন, প্রথম মাঠের বাইরেও তাঁদের দুজনের দারুণ সম্পর্ক। একই সাথে ড্রেসিং রুমে সময় কাটিয়ে দেখেছি তাঁরা একজন আরেকজনকে নিয়ে কী ভাবে কিংবা একে অপরের প্রতি তাঁদের শ্রদ্ধাবোধ। এরপর মাঠে তাঁদের খেলা দেখে মনে হচ্ছিল তাঁরা বাড়ির বাগানে প্রচুর মজা করছে। এবং আমাদের জন্যও সেটা ভীষণ আনন্দদায়ক ছিল।
আমিও খুব খুশি ছিলাম যে আমি ওদের সাথে একই দলে খেলছি। আপনার হয়তো বোলারদের জন্য তখন একটু খারাপ লাগতে পারে। কারণ তাঁদের আসলে খুব বেশি কিছু করার ছিল না। আমরাও হয়তো কখনো কখনো এমন পরিস্থিতে পড়ি। কিন্তু সেই সময় আমার সেসব কিছুই মাথায় আসছিল না। আমি এই দুইজনের ব্যাটিং শিল্পে ডুবে ছিলাম।
আপনি সেই সময় গুজরাট দলের ক্রিকেটারদের অভিজ্ঞতা দেখতে পারেন। তাঁদের দলে ডোয়াইন ব্রাভো ছিল। ব্রেন্ডন ম্যাককালাম তাঁদের অধিনায়ক ছিল। তাঁরাও হয়তো কোহলি ও ডি ভিলিয়ার্সের সেদিনের পারফর্মেন্স খুব উপরের দিকেই রাখবে।
আমি সেখানে বসে বসে ভাবছিলাম আমি ভীষণ আনন্দিত যে এটার অংশ হিসেবে এখানে বসে আমি খেলাটা দেখছি। এটা প্রায় একটা সিনেমার মত ছিল। সবকিছু অন্য মাত্রার ছিল। এরপরেও আমি বেশ কয়েকবার সেদিনের ম্যাচটা দেখেছি।
____________________
২০১৬ সালের ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (আইপিএল) এবি ডি ভিলিয়ার্স ও বিরাট কোহলি ২২৯ রানের জুটি গড়েছিলেন। তাঁদের এই ব্যাটিং তোপে গুজরাট লায়ন্সের বিপক্ষে ২৪৮ রানের বিরাট সংগ্রহ দাঁড় করেছিল রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু। সেদিন এই দুই ব্যাটসম্যানের ঝড় মাঠে থেকে দেখেছিলেন তাঁদের সতীর্থ ক্রিস জর্ডান। সেই ম্যাচের কথা সম্প্রতি ক্রিকেট মান্থলির কাছে স্মৃতিচারণ করেছেন এই বোলার।