অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে প্রথম বারের মত সিরিজ জিতলেও এই সিরিজে চরম ভাবে ব্যর্থ ছিলেন বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা। ঐতিহাসিক এই সিরিজ জয়ে মূল ভূমিকা রেখেছেন স্বাগতিক বোলাররা। তবে ব্যাটসম্যানদের পাশে দাঁড়িয়ে সাকিব আল হাসান জানিয়েছেন এই সিরিজ দিয়ে ব্যাটসম্যানদের বিচার করতে চাননা তিনি। এই অলরাউন্ডার মনে করেন এই সিরিজে ব্যাটসম্যানদের জন্য উইকেট খুবই কঠিন ছিল।
এই সিরিজে দুই দল মিলিয়ে দলীয় সর্বোচ্চ রান প্রথম টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের করা ১৩১ রান। আর সর্বনিম্ন আজ অস্ট্রেলিয়ার করা ৬২। পাঁচ ম্যাচের এই সিরিজে হাফ সেঞ্চুরি হয়েছে মাত্র দুটি। সিরিজের তৃতীয় টি-টোয়েন্টিতে ৫১ রান করেছিলেন মিশেল মার্শ ও ৫২ রান করেছিলেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। এছাড়া বড় ইনিংস খেলতে পারেননি আর কেউ।
নিজেদের চেনা কন্ডিশনেও ছন্দ খুঁজে পাননি সৌম্য সরকার, নাঈম শেখ, নুরুল হাসান সোহান ও শামিম হোসেন পাটোয়ারিরা। তুলনামূলক ভালো করলেও ধারাবাহিক ছিলেন না সাকিব আল হাসান ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। একমাত্র দলের প্রয়োজনে সব সময়ই ব্যাট হাতে দাঁড়িয়ে গেছেন আফিফ হোসেন ধ্রুব। তবে আফিফও নিজের পজিশনে নিজকে মেলে ধরার তেমন সুযোগ পাননি।
সিরিজের সর্বোচ্চ রান এসেছে মিশেল মার্শের ব্যাট থেকে। কিন্তু সেটাও খুব বেশি নয়। পাঁচ ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার এই ব্যাটসম্যান করেছেন ১৫৬ রান। স্টাইকরেট ছিল মাত্র ৯৮.৭৩। আর বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ ১১৪ রান করেছেন সাকিব। সাকিবের স্টাইকরেটও খুব বেশি না। সাকিব জানিয়েছেন নতুন ব্যাটসম্যানদের জন্য কন্ডিশন খুব কঠিন ছিল বলেই বেশি রান হয়নি।
সাকিব বলেন, ‘সন্তুষ্ট আমি, তবে প্রতি ম্যাচেই আরো ১০-১৫ রান করে বেশি করতে পারতাম। একটা সময়ে এটা সম্ভবও ছিল। কিন্তু নতুন ব্যাটসম্যানের জন্য উইকেট খুব কঠিন ছিল। আসলে ব্যাটসম্যানদের নিয়ে বলার কিছু নাই, এই সিরিজ দিয়ে কাউকে বিচার করাও ঠিক হবে না। কারণ কন্ডিশন খুবই কঠিন ছিল ব্যাটসম্যানদের জন্য।’
ব্যাটসম্যানরা ব্যর্থ হলেও প্রতি ম্যাচেই দুর্দান্ত ছিলেন বাংলাদেশের বোলাররা। স্বাগতিক বোলারদের সামনে দাঁড়াতেই পারেনি অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটসম্যানরা। সাকিব মনে করেন এটা ধরে রাখতে পারলে বিশ্বকাপেও ভালো কিছু করা সম্ভব, ‘বোলিংয়ে প্রতি ম্যাচেই ভালো করেছি। এটা ধরে রাখতে পারলে বিশ্বকাপ পর্যন্ত ভালো কিছু করা সম্ভব।’
এই সিরিজ জেতার আগে জিম্বাবুয়ের মাটিতে জিম্বাবুয়ের সাথেও টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিতে এসেছিল বাংলাদেশ। বিশ্বকাপের আগে ঘরের মাঠে অস্ট্রেলিয়ার সাথে সিরিজ জেতার পর নিউজিল্যান্ডের সাথেও খেলবে বাংলাদেশ।
সাকিব মনে করেন ঘরের মাঠে এই দুই সিরিজে স্লো এবং টার্নিং উইকেটে খেলে ব্যাটসম্যানরা রান কম পেলেও যদি দল জেতে সেটাই বিশ্বকাপে আত্নবিশ্বাস দেবে বাংলাদেশকে।
তিনি বলেন, ‘জিম্বাবুয়ের সাথে সিরিজ জেতা, অস্ট্রেলিয়ার সাথে জেতা, নিউজিল্যান্ড আসবে, এগুলো আমাদের অনেক আত্নবিশ্বাস দেবে বিশ্বকাপে। আমার মনে হয় ভালো প্রস্তুতিই হবে, ব্যাটসম্যানরা হয়তো বেশি রান করবে না, স্লো, টার্ন উইকেটে খেলছি, কিন্তু দলের জেতাটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ। এই আত্নবিশ্বাস থাকলে দলের জেতার মানসিকতা তৈরি হয়।’
বাংলাদেশ সিরিজ জিতলেও এই সিরিজে ছিলেন না মুশফিকুর রহিম, তামিম ইকবাল ও লিটন দাস। সাকিব মনে করেন এদের ছাড়া সিরিজ জেতা দলের জন্য প্লাস পয়েন্ট, ‘এটা আমাদের জন্য বড় একটা প্লাস পয়েন্ট যে আমাদের নিয়মিত বেশ কয়েক জন ক্রিকেটার ছাড়াও সিরিজটা জিততে পেরেছি। এটা আরো আত্নবিশ্বাস দেবে, তারা যখন ফিরে আসবে দলের শক্তিটা আরো বেড়ে যাবে।’