স্কটল্যান্ডের অন্যতম সেরা ব্যাটার যে তিনি – সেট নিয়ে তেমন কোনো সন্দেহ নেই। তার ওপর বড় ভরসাও রাখে স্কটিশরা। কিন্তু প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশের বিপক্ষে নীরব ছিলো রিচি বেরিংটনের ব্যাট। অবশেষে সেই ব্যাটে ঝড় উঠলো। পাপুয়া নিউগিনির বিপক্ষে ব্যাটিংয়ের শেষটা ভালো না হলেও বেরিংটনের কল্যানেই বড় সংগ্রহ পেলো স্কটল্যান্ড।
ম্যাচ জিতলেই সুপার-১২ তে যাওয়ার রাস্তাটা অনেকটাই সহজ হয়ে যায় স্কটল্যান্ডের। অপরদিকে পাপুয়া নিউগিনির জন্য ‘ডু অর ডাই’ ম্যাচ। একদিকে টুর্নামেন্টে টিকে থাকার লড়াই আরেকদিকে গ্রুপ পর্ব পেরিয়ে মূল পর্বে যাওয়ার টিকেট নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ওমানের আল আমেরাত স্টেডিয়ামে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে মুখোমুখি হয় স্কটল্যান্ড ও পাপুয়া নিউগিনি।
আগের ম্যাচে অঘটন ঘটিয়ে বাংলাদেশের বিপক্ষে জয় তুলে নিলেও স্কটল্যান্ডের ব্যাটাররা সেদিন ছিলেন ব্যর্থ। সেই ব্যর্থতার তালিকা থেকে বাদ যাননি স্কটিশ ব্যাটার রিচি বেরিংটন। ক্রিস গ্রিভসের অলরাউন্ড পারফরম্যান্সে দল জিতলেও বেরিংটনের ব্যাট সেদিন হাসেনি।
তবে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে ব্যর্থতা কাটিয়ে ফিরলেন বিধ্বংসী রূপে! দলের বিপদে ব্যাট হাতে পাপুয়া নিউগিনির বোলারদের জন্য আতংকে রূপ নেন তিনি। নবাগত দল পাপুয়া নিউগিনির বিপক্ষে টসে জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে মাত্র ২৬ রানেই দুই ওপেনারকে হারিয়ে বিপাকে পড়ে স্কটল্যান্ড।
তৃতীয় উইকেট ব্যাট হাতে ক্রিজে আসেন রিচি বেরিংটন। ব্যাটিং বিপর্যয়ে থাকা দলের হাল ধরেন তিনি। আর সেখান থেকে দলকে টেনে নিয়ে যান শক্ত অবস্থানে। ম্যাথু ক্রসের সাথে জুটি গড়ে পাপুয়া নিউগিনির বোলারদের উপর দাপট দেখান বেরিংটন। চার-ছয়ে পাপুয়ার বোলারদের উপর তাণ্ডব চালান এই ব্যাটার।
তৃতীয় উইকেটে গড়েন ৬৫ বলে ৯২ রানের বিধ্বংসী জুটি। ম্যাথু ক্রস ৩৬ বলে ৪৫ রানে ফিরলেও একপ্রান্তে আগ্রাসী ভূমিকায় খেলতে থাকেন বেরিংটন। আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে একপ্রান্তে তুলে নেন এবারের আসরে স্কটল্যান্ডের হয়ে প্রথম ফিফটি! ইনিংসের একদম শেষ দিকে ৪৯ বলে ৬ চার ও ৩ ছক্কায় ৭০ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস খেলে আউট হন তিনি। একই সাথে দলকে এনে দেন শক্তিশালী পুঁজি।
অবশ্য বিশ্বমঞ্চে আসার আগেও তিনি ছিলেন উড়ন্ত ফর্মে। বাংলাদেশের বিপক্ষে ৫ বলে ২ রানের ইনিংস বাদ দিলে চলতি বছর খেলা ৫ টি-টোয়েন্টিতে প্রায় ১২৪ স্ট্রাইক রেটে ৯০ গড়ে করেছিলেন ২৭০ রান! করেছিলেন দুই ঝড়ো ফিফটিও। দুর্দান্ত ফর্ম নিয়েই এসেছিলেন বিশ্বকাপে। প্রায় ১৩ বছর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে খেলা অভিজ্ঞ এই ব্যাটারের কাছে দলের প্রত্যাশাটাও ছিলো একটু বেশিই।
তবে, প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশের বিপক্ষে ব্যাটারদের চরম ব্যর্থতার দিনে তিনিও পারেননি সফল হতে। সাকিব আল হাসানের বলে ক্যাচ দিয়ে ফেরার আগে করেছিলেন ৫ বলে ২ রান। সেই ইনিংস ভুলে গিয়ে পরের ম্যাচেই পাপুয়া নিউগিনির বোলারদের উপর তান্ডব চালিয়ে খেললেন দুর্দান্ত এক ইনিংস। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ইনিংস খেলার বেরিংটনের হাত ধরেই মূল পর্বের টিকেট নিশ্চিত করতে পারে কিনা সেটিই দেখার অপেক্ষা।
দলের প্রয়োজনে অভিজ্ঞ বেরিংটন আস্থার প্রতিদান দিয়ে দলের হয়ে উপহার দিলেন ক্যারিয়ারের অন্যতম সেরা ইনিংস। আর তাতেই এখন শেষ ১২ দলের একটি হওয়ার পথে অনেকটাই এগিয়ে গেছে স্কটল্যান্ড দল।