অফিসিয়ালি বিশ্বকাপ থেকে আউট। সুপার টুয়েলভে টানা চার হারের সঙ্গে প্রথম রাউন্ডেও একটি হার। বিশ্বকাপ অভিযান বলা যায় ব্যর্থ। এত চেষ্টা, এত অপেক্ষা, এত কথা, কোনো কিছুতেই যখন কিছু হচ্ছে না, এখন টি-টোয়েন্টিতে একটা ‘কমপ্লিট ওভারহল’ দরকার।
ওলট-পালট প্রয়োজন। টি-টোয়েন্টি দলে, টি-টোয়েন্টির দর্শনে, টি-টোয়েন্টির ভাবনায়, টি-টোয়েন্টির পরিকল্পনায়।
কোনো কিছুতেই যখন কিছু হচ্ছে না, পারভেজ ইমন, আকবর, রকিবুল, হৃদয়দের মতো নবীনদের নিয়ে আসা হোক। পারবে না? তৈরি নয়? এর চেয়ে আর কত খারাপ করবেন তাঁরা! তৈরি করা হোক।
মেহেদী, আফিফ, সোহান, শামিম, শরিফুলদের আরও ভালোভাবে তৈরি করা হোক। তাদের শক্তির জায়গা আরও শাণিত করে দুর্বলতা কাটিয়ে ওঠার সম্ভব সর্বোচ্চ চেষ্টা করানো হোক। নিবিড় ট্রেনিং ও ক্যাম্প করে, স্পেশালাইজড কোচদের এনে, পাওয়ার হিটিং, উদ্ভাবনী ব্যাটিং, বোলিংয়ের নানা দিক আরও পোক্ত করা হোক। ‘এ’ দল, একাডেমির হয়ে প্রচুর সাইড ম্যাচ, দেশে-বিদেশে খেলানো হোক।
এই তাসকিন যেন এইভাবে টিকে থাকে বা আরও উন্নতি করে, মুস্তাফিজকে যেন ফিরে পাওয়া যায়, সেই চেষ্টা ও সমন্বয়ের ব্যবস্থা করা হোক।
কোন ক্রিকেটার খেলা ছাড়বেন বা না ছাড়বেন, তিনি কোন সংস্করণ খেলবেন বা খেলবেন না, এটা একান্তই তার সিদ্ধান্ত। সেটিই হওয়া উচিত। তবে তাকে রাখা বা না রাখা তো অন্যদের সিদ্ধান্ত। বোর্ড, টিম ম্যানেজমেন্ট, নির্বাচকরা সেই টাফ কল (আদতে ইজি কল) নিয়ে নিন।
আগামী বছরের বিশ্বকাপ অস্ট্রেলিয়ায়। সেখানে খুব ভালো ব্যাটিং উইকেটে খেলা হবে। স্রেফ বাড়তি বাউন্সটায় অ্যাডজাস্ট করতে পারলে রান আর রান হবে। এবারের বিপিএলে মিরপুরে প্রয়োজনে একটা ম্যাচও না রাখা হোক। সব খেলা চট্টগ্রাম-সিলেটে হোক। বিপিএলের বাইরে, এই এক বছরে আরও অন্তত দুটি ঘরোয়া টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট হোক।
যদিও বিশ্বকাপের পর থেকে বাংলাদেশের প্রচুর আন্তর্জাতিক সিরিজ আছে, ব্যস্ততা তাই অনেক। তবে এই পারভেজ-মেহেদি-আকবর-আফিফ এবং তাদের মতো যারা, তারা নিশ্চয়ই সব ফরম্যাট খেলবেন না। সেই সমন্বয়টা করে, পরিকল্পনা করে, সময় বের করে তাদের গড়ে তোলা হোক। যারা তিন ফরম্যাট বা দুই ফরম্যাট খেলবেন, ফাঁকে ফাঁকে যখন সুযোগ হবে, তাদেরও এই প্রক্রিয়ায় আনা হোক।
আগামী বিশ্বকাপ মাত্র এক বছর পর। তখন হয়তো কাজ হবে না। কিন্তু এর পরের বিশ্বকাপে কাজ হলেও হতে পারে। এখনকার পথে যে কিছুই হবে না, এটা এখন প্রমাণিত ও প্রতিষ্ঠিত।
জানি, ক্রিকেটারদের অনেকে, কোচিং স্টাফ বা বোর্ড কর্তারা বলবেন, একটুর জন্য ওই ম্যাচ জিতিনি, একটুর জন্য সেই ম্যাচ পারিনি, এসব হাবিজাবি। কিন্তু ব্যাপারটা হলো, বছরের পর বছর যখন ওই ‘একটুর জন্য’ হতেই থাকে, প্রতিবারই হতে থাকে, তখন তা আর ‘একটু’ থাকে না, ‘বড়’ হয়ে ওঠে। তাই বড় ধাক্কা দরকার এখন।
কোচিং স্টাফ নিয়ে নতুন করে বলার কিছু নেই। বোর্ড সভাপতি, দায়িত্বপ্রাপ্তদের নিয়ে কথা বলতে বলতে আর কিছু বাকি নেই – নতুন কী বলব।
শুধু বলি, আপনারা কথা বলেন, বড়াই করেন, দোষ অন্যের ঘাড়ে চাপান, যা ইচ্ছা করেন। নয় বছর ধরে করছেন। আরও করেন। শুধু এসবের সঙ্গে একটু কাজও করেন।
– ফেসবুক থেকে