পৃথিবীর ইতিহাসে মিঠুন হয়ে উঠতে পারেন এক ও অনন্য।
এর আগে আর্ন্তজাতিক ক্রিকেট উইকেটরক্ষক হিসেবে শুরু করে পুরোদস্তুর বোলার বনে যাওয়ার কোনো নজির নেই। তবে ভাবেদৃষ্টে যা মনে হচ্ছে, মোহাম্মদ মিঠুন এই কাজটা করেই ছাড়বেন। জাতীয় ক্রিকেট লিগে এক ইনিংসে ৭ উইকেট নেওয়ার পর মিঠুনকে নিয়ে এই আশা না করে উপায় কী!
ঢাকার দ্বিতীয় ইনিংসে বিকেএসপির তিন নম্বর মাঠে ৭৫ রানে ৭ উইকেট তুলে নিয়েছেন মিঠুন। এই পারফরম্যান্সের পর প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে খেলা ৭১-এর ফোনের ওপাশে খানিক সময় হাসলেন। তারপর বললেন, ‘বিপদেই পড়ে গেছি। আমি কল্পনাও করিনি, এতোগুলো উইকেট পাবো।’
আসলে দলের বিপদে এগিয়ে এসেছিলেন মিঠুন।
ঢাকা দল দ্বিতীয় ইনিংসে ১৩৯ রানের উদ্বোধনী জুটি করে ফেলেছিলো। কোচ তখন মিঠুনকে বলেন বোলিং করতে। দুই সেট ওপেনার মজিদ ও রনি তালুকদারকে ফেরান তিনি। এরপর তো ইতিহাস। ঢাকার পতন হওয়া ৮ উইকেটের সাতটিই তাঁর।
মিঠুন বোলিং করার পরিস্থিতিটা বলছিলেন, ‘অন্য কেউ অধিনায়ক হলে হয়তো আরেকটু আগেই বোলিং করতাম। কিন্তু নিজে অধিনায়ক তো। একটু অস্বস্তি লাগছিলো-যেচে বোলিংয়ে যাই কী করে? পরে কোচ বললে করলাম।’
মিঠুনের প্রথম শ্রেনীর ক্রিকেটে বোলিং অবশ্য এই প্রথম নয়। ২০১৯ সালে ‘এ’ দলের শ্রীলঙ্কা সফরে প্রথমবারের মত বল করেই নিয়েছিলেন ৩ উইকেট। নেটে তার বোলিং দেখে পছন্দ করেছিলেন অধিনায়ক মুমিনুল হক। এরপর ঘরোয়া ক্রিকেটে নিয়মিতই উইকেট নিয়েছেন। একজন উইকেটরক্ষকের জন্য এটা খুব স্বাভাবিক নয়। তবে মিঠুন সবসময় বলেন, ‘আমি সবটাই করতে চাই। বোলার হয়ে গেছি, তা বলছি না। তবে দলের জন্য যা দরকার, সেটাই করতে তৈরি থাকি।’
এদিনের ৭ উইকেট পাওয়া পারফরম্যান্স সম্পর্কে বলছিলেন, ‘উইকেটে কিছুটা হেল্প ছিল। তবে আমি মূলত জায়গায় বল ফেলার চেষ্টা করেছি। কিছুটা টার্ন আর বাউন্স পাচ্ছিলাম। বাকীটা আসলে হয়ে গেছে।’
এই ৭ উইকেট নিতে ২০.৫ ওভার বল করেছেন মিঠুন। আগে কখনো নেটেও এতো বল করেননি। ফলে এই দিক থেকে অভিনব একটা অভিজ্ঞতা ছিলো মিঠুনের জন্য, ‘এতো বল আগে কোনোদিন করিনি। এতো বল করা কষ্টের। মাঝে মাঝে খুব ক্লান্ত লাগছিলো। তবে নিয়মিত উইকেট পেয়েছি তো। ফলে ক্লান্তিটা সেভাবে কাজ করেনি।’
মিঠুন বলছেন না যে, তিনি অলরাউন্ডার হয়ে গেছেন। তবে নিজের জন্য সব দুয়ার খুলে রাখতে চান।