চট্টগ্রামে দুই দিনের অনুশীলনে দারুণ একটা মিল পাওয়া গেলো।
প্রায় পুরোটা অনুশীলন জুড়ে কোচদের নজরের কেন্দ্রে রইলেন তারা দু জন। একবার এই নেটে, একবার ওই নেটে তারা ব্যাটিং করছেন। একবার স্পিনারদের খেলছেন, একবার পেসারদের খেলছেন। আবার কখনো বোলিং মেশিনে ব্যাট চালাচ্ছেন। দুই এক বল বাদে বাদেই কোচ, ব্যাটিং কোচ ছুটে গিয়ে তাদের সাথে কথা বলছেন।
সোজা কথায়, চট্টগ্রাম টেস্টের আগে তাদের নিয়েই চলছে ব্যস্ততা। সবকিছুর কেন্দ্রে আছেন ইয়াসির আলী রাব্বি এবং মাহমুদুল হাসান জয়।
শুধু এই দৃশ্যগুলো মাথায় নিলে মেনে নিতে হবে যে, আগামীকাল দু জনেরই হয়তো অভিষেক হচ্ছে। কিন্তু দলীয় সূত্রের খবর ঠিক তা বলছে না। তাদের দাবি, এই দুই জনের একজনের টেস্ট অভিষেক হবে কাল চট্টগ্রামে। বাকি জনকে আরেকটু অপেক্ষা করতে হবে।
আসলে টেস্ট দলে তিনটি জায়গা ফাঁকা হয়েছে।
সর্বশেষ খেলা টেস্ট থেকে এই দলে নেই সাকিব আল হাসান, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও তাসকিন আহমেদ। এর মধ্যে তাসকিনের জায়গায় স্বভাবত চলে আসবেন আবু জায়েদ রাহি। তার সাথে দ্বিতীয় পেসার হিসেবে থাকবেন এবাদত হোসেন। যদিও একটা ‘কিন্তু’ বাজারে ঘুরে বেড়াচ্ছে।
কেউ কেউ মনে করছেন, এবাদত এই টেস্টে সুযোগ নাও পেতে পারেন। একেবারে ম্যাড়মেড়ে পরিসংখ্যানের এবাদতকে বাদ দিয়ে দলে ঢোকানো হতে পারে রেজাউর রহমান রাজাকে। তার মানে, আরেকটা অভিষেকের সম্ভাবনা তৈরি হলো।
এবার আসুন রিয়াদ ও সাকিবের জায়গাটা নিয়ে।
সর্বশেষ টেস্টে আট নম্বরে খেলেছিলেন রিয়াদ। ফলে রিয়াদের জায়গায় বাংলাদেশ সম্ভবত একজন বাড়তি স্পিনার খেলাবে। সেটা হতে পারেন তাইজুল ইসলা, হতে পারেন নাঈম হাসান। তবে সাম্প্রতিক পারফরম্যান্সের কারণে তাইজুলের চেয়ে নাঈমের দিকে একটু হেলে থাকবে সম্ভাবনাটা। আবার অভিজ্ঞতা তাইজুলকে এগিয়ে রাখবে।
সাকিবের জায়গাটা নিয়েই যত আলোচনা।
সাকিব নেই মানে, দু’জন খেলোয়াড় নেই। এখন সাকিবের বদলে দু জনকে খেলানো তো যাবে না! এখানে বাংলাদেশ একজন ব্যাটসম্যান নেবে। আর এই জায়গাটার জন্যই লড়বেন রাব্বি ও জয়। আকেবারে পজিশন ধরে যদি হিসেব করেন, তাহলে রাব্বির সম্ভাবনাটা বেশি। কারণ, সাকিবের ছয় নম্বরে রাব্বির খেলার অভিজ্ঞতাই বেশি। আর রাব্বি অনেকদিন ধরে দলের সাথে আছেন, তাকে নিয়ে ম্যানেজমেন্ট খুব সিরিয়াস। ফলে রাব্বিকে নিয়ে বাজিটা ধরাই যেতো।
কিন্তু টিম ম্যানেজমেন্ট একটু অন্যভাবে ভাবছে। তাদের কাছে রাব্বির চেয়ে জয়ের ফিটনেস বেশি মনে ধরেছে। জয় আছেনও দারুন ছন্দে। জাতীয় লিগে রান করে এসেছেন। আবার এখানে নেটে একেবারে দুর্দান্ত ফর্মে থাকা ব্যাটসম্যানের মতো ছড়ি ঘোরাচ্ছেন। ফলে জয়ের অভিষেক হলেও অবাক হবেন না। যদিও, সংবাদ সম্মেলনে অধিনায়ক দাবী করেছেন ব্যাক আপ ওপেনার হিসেবে দলের সাথে আছেন জয়।
সেক্ষেত্রে প্রশ্ন হল, দু’জনেরই অভিষেকের কী সম্ভাবনা আছে?
আছে। একটু ব্যতিক্রমী একটা আইডিয়াও আছে টিম ম্যানেজমেন্টের কাছে। তারা এমনও ভাবছেন যে, একেবারেই ফর্মে না থাকা সাইফ হাসানকে বসিয়ে দেওয়া হবে। সে ক্ষেত্রে জয়কে হয়তো নতুন একটা ভূমিকায় দেখা যেতে পারে, যেমনটা দাবি অধিনায়কের। সাদমানের সাথে তিনি ইনিংস শুরু করতে পারেন।
আর তেমন কিছু ঘটলে আগামীকাল আমরা তিনটি অভিষেক দেখতে পারি – জয়, রাব্বি ও রাজা।
দেখা যাক, চট্টগ্রাম কাকে কাকে হাসিটা উপহার দেয়!