মিরাজের নিসঙ্গ চেষ্টা

টেস্ট ও ওয়ানডে ফরম্যাটে বাংলাদেশের অপরিহার্য স্পিনার মেহেদী হাসান মিরাজ। তবে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে অনেকদিন ধরেই দলে সুযোগ পাচ্ছিলেন না। তবে আজ বিপিএলের উদ্ভোদনী ম্যাচে মিরাজের ঘুর্নিতে কাবু হলেন সাকিব আল হাসানরা। বল হাতে মোটামুটি একাই লড়ে গিয়েছেন ফরচুন বরিশালের বিপক্ষে।

চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স মিরাজকে তুলে দিয়েছিল অধিনায়কত্বের দায়িত্ব। ব্যাট হাতে খুব ভালো সংগ্রহ দাঁড় করাতে পারেনি চট্টগ্রাম। তবে নিজের প্রথম ওভারেই উইকেট নিয়ে দলকে চাঙা করে রেখেছিলেন মিরাজ। এরপর আবার ফেরান বরিশালের অধিনায়ক সাকিব আল হাসানকে। মিরাজ একাই যেনো ভোগাচ্ছিলেন বরিশালের ব্যাটসম্যানদের। চার

এছাড়া নিজের শেষ ওভারে আরো দুই উইকেট নিয়ে ম্যাচে টিকিয়ে রেখেছিলেন চট্টগ্রামকে। সবমিলিয়ে চার ওভার বোলিং করে মাত্র ১৬ রান দিয়ে নিলেন ৪ উইকেট। যদিও বরিশালের ওপেনার সৈকত আলীর ৩৯ রান ও শেষদিকে জিয়াউর রহমানে ১২ বলে ১৯ রানের ছোট্ট ক্যামিওতে ভর করে চার উইকেটের জয় তুলে নেয় বরিশাল।

ওদিকে প্রথম ইনিংসে বিপদের সময়ে দলের হাল ধরেছিলেন চট্টগ্রামের অলরাউন্ডার বেনি হাওয়েল। তিনি মূলত পুরো বিশ্বেরই সন্তান। জন্ম হয়েছিল ক্রিকেটের সাথে কোন সম্পর্ক না থাকা ফ্রান্সের এক শহরে। তবে পড়াশোনা কিংবা বেড়ে উঠা আবার যুক্তরাষ্ট্রে। এছাড়া অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ডের পাসপোর্ট নিয়ে ঘুরে বেড়ান দেশ-বিদেশ। ক্রিকেট খেলার জন্য শেষ পর্যন্ত থিতু হয়েছিলেন ইংল্যান্ডেই। যদিও এই ক্রিকেটের জন্যই এখন আবার নানা দেশে ছোটাছুটি। ফলে তাঁর অতীত খোঁজা আসলে বৃথা। অলরাউন্ডার বেনি হাওয়েল আদতে ক্রিকেটেরই সন্তান।

কোন আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেননি। তবুও টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে তিনি ফ্যাক্টর। বিশ্বের নানা টি-টোয়েন্টি লিগে খেলে বেড়াচ্ছেন। পুরো দুনিয়া ঘুরে এবার বাংলাদেশে এসেছেন চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের হয়ে বিপিএল মাতাবেন বলে। আসরের প্রথম ম্যাচেই চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের হয়ে খানিকটা টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের আমেজ পাওয়া গেল।

ওদিকে দর্শকবিহীন বিপিএল এমনিতেই এক মন খারাপের কারণ ছিল। এছাড়া ক্রিকেটারদের মধ্যে করোনার আতঙ্ক তো ছিলই। ফরচুন বরিশালের তিনজন করোনা আক্রান্তও হয়েছেন। বরিশালের কিপার ব্যাটসম্যান নুরুল হাসান সোহান আজ খেলতে পারেননি করোনার কারণে। এছাড়া ওপেনিং ব্যাটসম্যান মুনিম শাহরিয়ার ও কোচ নাজমুল আবেদিন ফাহিমও করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন।

আর মিরপুরের মন্থর উইকেটে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের মেজাজ খুঁজে পাওয়া যায় কই। তবে প্রথম  ইনিংসে টিভির সামনে বসে থাকা দর্শকদের খানিকটা আনন্দ দিতে পেরেছেন বেনি হাওয়েল। মন্থর উইকেটের সাথে মানিয়ে নিতে না পেরে মিরাজরা, শামীমরা যখন নিজেদের উইকেট ছুঁড়ে দিয়ে এসেছেন তখন ব্যাট হাতে ঝড় তুলেছিলেন এই অলরাউন্ডার। মাত্র ২০ বলে ২০৫.০০ স্ট্রাইকরেটে খেলেন ৪১ রানের ইনিংস। ঝড়ো এই ইনিংসটিতে ছিল তিনটি চার ও তিনটি ছয়ের মার। তাঁর এই ইনিংসে চড়েই ১২৫ রানের লড়াকু সংগ্রহ পায় চট্টগ্রাম।

সবমিলিয়ে বিপিএলের প্রথম ম্যাচে দুই দলের মধ্যে লড়াইটা বেশ জমে উঠেছিল। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের চার-ছয়ের জোয়ার না হলেও মিরপুরের পিচে লড়াই করেছে দুই দলই। স্পিনিং উইকেটে নিজেদের জাত চিনিয়েছেন মেহেদী হাসান মিরাজ ও নাঈম হাসানরা। সবমিলিয়ে বিপিএলে ব্যাট-বলের জমজমাট লড়াইয়ের আভাষই পাওয়া যাচ্ছে।

লেখক পরিচিতি

আমার ডায়েরির প্রতিটা পৃষ্ঠাই আমার বাইশ গজ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link