মেগা অকশন – নামেই বোঝা যাচ্ছে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের (আইপিএল) নিলামে কি পরিমান দরদাম চলছে। দশ দলের এই নিলামে বড় বড় তারকা ক্রিকেটারদের নিয়ে যেমন চলছে দামাদামি তেমনি অনেক তারকাই বিস্ময়কর ভাবে থেকে গেছেন অবিক্রীত।
এর মাঝে অনেককেই আবার আগের আসরের নিজ নিজ ফ্র্যাঞ্চাইজি দলগুলো ধরে রেখেছে। তাঁদের মধ্যে আছে বেশ কিছু তরুন ক্রিকেটার। ভবিষ্যত সম্ভাবনাময়ী বেশ কিছু ক্রিকেটারকে কোটি কোটি রুপি খরচ করে ড্রাফট থেকেই রেখে দিয়েছে ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো। নিলামের আগেই কোটি টাকার মালিক বনে যাওয়া এই তরুনদের নিয়েই আমাদের এই আলোচনা।
- আর্শদ্বীপ সিং (পাঞ্জাব কিংস – ৪ কোটি)
২০১৯ সালে আইপিএল অভিষেকের পর থেকেই অসাধারণ পারফরম করেছেন আর্শদ্বীপ সিং। গেলো বছর তাঁর দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের পর এবার মেগা নিলামের আগে পাঞ্জাব কিংস রিটেন করে নেয় এই বাঁ-হাতি পেসারকে। ৪ কোটি রুপিতে এই পেসারকে দলে রেখে দেয় পাঞ্জাব।
মোহাম্মদ শামিকে ছেড়ে দিলেও আর্শদ্বীপকে বেশ ভালো দামেই রিটেইন করে পাঞ্জাব। গেলো বছর ২০২১ আইপিএলে ১২ ম্যাচে ১৮ উইকেট শিকার করেন এই বাঁ-হাতি পেসার। রাজস্থানের বিপক্ষে শিকার করেন ফাইফর। বিজয় হাজারে ট্রফিতে ৫ ম্যাচে ১০ উইকেট নেন আর্শদ্বীপ। ২০২০ আইপিএলেও ৮ ম্যাচে ৯ উইকেট শিকার করেন এই তরুন তারকা।
সব মিলিয়ে আইপিএলে ২৩ ম্যাচে ২২ গড়ে ৮.৭৮ ইকোনমিতে ৩০ উইকেট শিকার করেছেন এই পেসার।
- যশস্বী জ্যাসওয়াল (রাজস্থান রয়্যালস – ৪ কোটি)
২০ বছর বয়সী যশস্বী জ্যাসওয়ালকে আসন্ন ২০২২ আইপিএলকে সামনে রেখে রিটেইন করেছে রাজস্থান রয়্যালস। ৪ কোটি রুপিতে জ্যাসওয়ালকে দলে রেখেছে রাজস্থান। আইপিএল ইতিহাসের দ্বিতীয় সর্বকনিষ্ঠ ক্রিকেটার হিসেবে জ্যাসওয়ালকে রিটেইন করে রাজস্থান।
২০২০ আইপিএলে ২.২০ কোটি রুপিতে জ্যাসওয়ালকে দলে নেয় রাজস্থান। এখন পর্যন্ত ১৩ ম্যাচে ১৩৬ স্ট্রাইক রেটে করেছেন ২৮৯ রান। চেন্নাই সুপার কিংসের বিপক্ষে ১৯ বলে ফিফটি করেন এই তরুন ওপেনার। সর্বকনিষ্ঠ ভারতীয় হিসেবে ১৭ বছর বয়সেই লিস্ট এ তে ডাবল সেঞ্চুরি করেন জ্যাসওয়াল!
আইপিএলে এখন পর্যন্ত ১৩ ম্যাচে ২২ গড়ে ১৩৬ স্ট্রাইক রেটে ২৮৯ রান করেছেন এই ওপেনার।
- উমরান মালিক (সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদ – ৪ কোটি)
সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদের নেট বোলার হিসেবেই ছিলেন দলের সাথে। এরপর করোনায় আক্রান্ত হয়ে থাঙ্গারাসু নটরাজন আইপিএল থেকে ছিটকে গেলে গেলো আসরে হায়দ্রাবাদের হয়ে খেলা সুযোগ পান উমরান মালিক। সুযোগ পেয়ে নিজের প্রথম ওভারেই ১৪৬+ গতিতে বল করে নজর কাড়েন সবার।
ওই ম্যাচে দু’বার ১৫০+ গতিতেও বল করেন তিনি! যা ছিলো গেলো আসরে যেকোনো ভারতীয় পেসারের সর্বোচ্চ গতির বল! এরপর রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরুর বিপক্ষে ১৫৩ গতির বল করে টুর্নামেন্টে সবচেয়ে গতিময় ডেলিভারির মালিক বনে যান উমরান। ভুবনেশ্বর কুমার, জেসন হোল্ডারকে পাশ কাটিয়ে ২০২২ আইপিএলের জন্য উমরানকে রিটেইন করে সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদ।
- আব্দুল সামাদ (সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদ – ৪ কোটি)
উমরান মালিকের সাথে তরুন হার্ডহিটার আব্দুল সামাদকেও ৪ কোটি রুপিতে রিটেইন করে সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদ। ২০২০ আইপিএলে অভিষিক্ত হন সামাদ। পাওয়ার হিটিং অ্যাবিলিটির কারণে বেশ দ্রুতই পরিচিতি লাভ করেন এই তরুন তুর্কি।
এখন পর্যন্ত আইপিএলে ২৩ ম্যাচে ১৬ গড়ে ২২২ রান করেছেন সামাদ। বল হাতেও পার্ট টাইম লেগস্পিন করেন তিনি। জম্মু কাশ্মিরের এই তরুন তারকা মূলত ফিনিশিংয়ের দায়িত্ব পালন করেন দলে।
- রবি বিষ্ণয় (লখনৌ সুপারজায়ান্টস – ৪ কোটি)
তর্কযোগ্যসাপেক্ষে ভারতীয় ক্রিকেটের সেরা ইমার্জিং স্পিনার রবি বিষ্ণই। ইতিমধ্যেই আইপিএলের গেলো ২ আসরে নিজের সামর্থ্যের প্রমাণ দিয়েছেন এই স্পিনার। আসন্ন আইপিএলের আগে নতুন ফ্র্যাঞ্চাইজি লখনৌ সুপারজায়ান্টস ড্রাফট থেকে ৪ কোটি রুপিতে সরাসরি দলে ভিড়িয়েছে বিষ্ণয়কে।
এখন পর্যন্ত আইপিএলে ২৩ ম্যাচে মাত্র ৬.৯৫ ইকোনমিতে ২৪ উইকেট নিয়েছেন রবি। ১৭টি লিস্ট এ ম্যাচে ৫.৪৮ ইকোনমিতে নিয়েছেন ২৪ উইকেট। ২০২০ অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে দুর্দান্ত বোলিং করে সবার নহর কাড়েন এই স্পিনার। ৬ ম্যাচে ১৭ উইকেট নিয়ে সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি ছিলেন তিনি।